পিএসজির নায়ক এমবাপে, গোল পেলেন মেসি-নেইমারও

সাস্প্রতিক ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলতে এবং ক্ষুব্ধ সমর্থকদের মন জয় করতে যেমন পারফরম্যান্সের দরকার ছিল, ঠিক সেটাই উপহার দিল পিএসজি। কিলিয়ান এমবাপের দুর্দান্ত নৈপুণ্যের ম্যাচে গোলের দেখা পেলেন নেইমার ও লিওনেল মেসিও। লরিয়েঁকে উড়িয়ে লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল মাওরিসিও পচেত্তিনোর দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 April 2022, 08:41 PM
Updated : 3 April 2022, 09:21 PM

ঘরের মাঠে রোববার রাতে লিগ ওয়ানের ম্যাচটি ৫-১ গোলে জিতেছে পিএসজি।

বলা যায়, পিএসজির সবকিছুই ছিল এমবাপেকে ঘিরে। নিজে জোড়া গোল করার পাশাপাশি দুই সতীর্থের তিনটি গোলেই অবদান রাখেন তিনি। নেইমারও করেছেন দুটি গোল।

পয়েন্ট তালিকার নিচের দিকের দলটির বিপক্ষে গত ডিসেম্বরে ১-১ ড্র করেছিল পিএসজি। এবার তাদের উড়িয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল তারা।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে আগের চার ম্যাচের তিনটিতে হার, কেবল লিগ ওয়ানের হিসাবে সবশেষ পাঁচ রাউন্ডের তিনটিতে ওই তেতো স্বাদ। এ সব ম‍্যাচে পিএসজির পারফরম্যান্স ছিল ভীষণ হতাশাজনক। আন্তর্জাতিক বিরতির আগে সবশেষ ম্যাচে মোনাকোর বিপক্ষে ৩-০ গোলে হারের ম্যাচে তারকায় ঠাসা দলটির প্রায় কারোরই শরীরি ভাষায় ছিল না মরিয়া ভাব।

দারুণ অবস্থানে থেকে রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে পড়ার তিক্ত অভিজ্ঞতাও হয়েছে এই সময়ে। সব মিলিয়ে ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দি মৌসুমের এই অধ্যায়টা নিশ্চিতভাবে ভুলে যেতে চাইবে পিএসজি।

সেই লক্ষ্যে শক্তিতে অনেক পিছিয়ে থাকা লরিয়েঁর বিপক্ষে শুরুটা দারুণ করে তারা। এগিয়ে যেতে পারতো চতুর্থ মিনিটেই। বাঁ দিক দিয়ে ক্ষিপ্র গতিতে পাল্টা আক্রমণে উঠে শট নেন এমবাপে। কিন্তু শটে যথেষ্ট গতি ছিল না, কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক।

পরের মিনিটে আরেকটি কর্নার আদায় করে নেয় স্বাগতিকরা। দানিলোর হেড ক্রসবারের একটু ওপর দিয়ে উড়ে যায়।

আক্রমণত্রয়ীর নৈপুণ্যে দ্বাদশ মিনিটে এগিয়ে যায় পিএসজি। মেসির ফ্লিক খুঁজে পায় এমবাপেকে। ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে সাবেক মোনাকো ফরোয়ার্ড পাস বাড়ান নেইমারকে। জোরাল নিচু শটে জালে বল পাঠান ব্রাজিলিয়ান তারকা।

২৮তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করা গোলেও জড়িয়ে নেইমারের নাম। তার পাস পেয়ে বাঁ দিকে বল বাড়ান ইদ্রিসা গেয়ি। আর বল ধরে ডি-বক্সে ঢুকে একটু সময় নিয়ে কোনাকুনি শটে গোলটি করেন এমবাপে।

৫৬তম মিনিটে নিজেদের ভুলে গোল হজম করে পিএসজি। বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে সতীর্থ মার্কিনিয়োসকে ব্যাকপাস দিয়ে বসেন আশরাফ হাকিমি। বলে গতি ছিল বেশি, মার্কিনিয়োসের বরাবরও ছিল না, ছুটে গিয়ে প্রথম ছোঁয়ায় আগুয়ান গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তেরেম মফি।

৬৭তম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেন এমবাপে। হাকিমির পাস পেয়ে আসরে নিজের ১৭তম গোলটি করেন তিনি।

ছয় মিনিট পর পিএসজির জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন মেসি। আক্রমণটির মূল কারিগর এমবাপে। মাঝমাঠে একজনকে কাটিয়ে বাঁ দিকে সতীর্থকে বল বাড়িয়ে এগিয়ে যান ফরাসি তারকা।  এরপর সতীর্থের ফিরতি পাস বক্সে ধরে আরেকজনকে কাটিয়ে বাইলাইনের কাছ থেকে ব্যাকপাস করেন তিনি। আর পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে জোরাল শটে আসরে নিজের তৃতীয় গোলটি করেন আর্জেন্টাইন তারকা।  

নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে লরিয়েঁর জালে পঞ্চম গোলটি করেন নেইমার। এমবাপের থ্রু বল ধরে ডি-বক্সে ঢুকে নিচু শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।

এবারের লিগ ওয়ানে ১৬ ম্যাচ খেলে নেইমারের গোল হলো ৭টি।

৩০ ম্যাচে ২১ জয় ও পাঁচ ড্রয়ে পিএসজির পয়েন্ট ৬৮। সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে মার্সেই।