ড্রই হলো বাংলাদেশ-মঙ্গোলিয়া ম্যাচ

ম্যাচের চিত্রনাট্যে আধিপত্য বাংলাদেশের। সুযোগ নষ্টের দিক থেকেও এগিয়ে স্বাগতিকরা! ঘরের মাঠেও ব্যর্থতার বিষাদ সঙ্গী হলো ফরোয়ার্ডদের। এছাড়া পোস্টও দাঁড়াল পথ আগলে। শেষ পর্যন্ত ড্রই হলো বাংলাদেশ-মঙ্গোলিয়া ম্যাচ।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরসিলেট থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2022, 12:30 PM
Updated : 29 March 2022, 02:14 PM

সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে দুই ধাপ এগিয়ে থাকা মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রীতি ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে।

চাওয়া পূরণ হয়েছে মঙ্গোলিয়ার। ২১ বছর আগে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সবশেষ দেখায় বাংলাদেশকে ড্রয়ে রুখে দিয়েছিল তারা। সৌদি আরবের দাম্মামের স্মৃতির পুনরাবৃত্তি সিলেটে করতে চেয়েছিল তারা; পুরো ম্যাচে বাংলাদেশের পোস্টে কোনো শট না নিয়ে, নিজেদের রক্ষণ আগলে রেখে তা করেই ছাড়ল তারা।

নতুন বছরে বাড়ির উঠানেও প্রত্যাশিত শুরু পেল না বাংলাদেশ। বাংলাদেশ কোচ হিসেবে জয়হীন থাকলেন কাবরেরাও। বছরের প্রথম ম্যাচে কদিন আগেই মালদ্বীপের মাঠে ২-০ গোলে হেরে এসেছে দল। সিলেটে সেই হারের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চাওয়া ছিল, কিন্তু তা পূরণের জন্য দরকারি গোল ছিল না সুমন-জীবন কারো পায়ে!

স্বস্তি বলতে, মঙ্গোলিয়ার কাছে অপরাজিত থাকল বাংলাদেশ। ২০০২ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম লেগে ৩-০ গোলের জয়ের পর দুই দলের ফিরতি লেগ ২-২ ড্র হয়েছিল।

দুটি পরিবর্তন এনে একাদশ সাজান হাভিয়ের কাবরেরা। ৪-১-৪-১ ফরমেশনে বিশ্বনাথ ঘোষ ও বিপলু আহমেদের বদলে রিমন হোসেন ও আতিকুর রহমান ফাহাদকে খেলান তিনি।

গ্যালারিতে দর্শকের উপস্থিতি হলো বেশ। সময় যত গড়াল, দর্শকও বাড়তে থাকল। ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ শ্লোগানে মুখরিত হয় উঠল চারদিক। শুরু থেকে মঙ্গোলিয়ার উপর ছড়ি ঘোরাতে থাকে দলও।

দ্বিতীয় মিনিটেই গোলের সুবর্ণ সুযোগ কড়া নাড়ে দরজায়। কিন্তু মোহাম্মদ ইব্রাহিমের পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা রাকিব হোসেন আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান গোলমুখে। গোলরক্ষকের গ্লাভস গলে বল বেরিয়ে গেলেও ঠিক পজিশনে থাকতে না পারা সুমন রেজা পারেননি পা ছোঁয়াতে।

চতুর্থ মিনিটে মাঠে একটি কুকুর ঢুকে পড়লে খেলা বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ। মিনিট চারেক ফের শুরু হয় খেলা। দশম মিনিটে প্রথম কর্নার পায় বাংলাদেশ। কিন্তু জামালের কর্নার লাফিয়ে উঠেও হেড করতে পারেননি ইয়াসিন আরাফাত।

পাঁচ মিনিট পর দুই জনকে কাটিয়ে ইয়াসিন নিখুঁত থ্রু পাস বাড়ান। অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে বক্সে ঢুকে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন ইব্রাহিম। বাকিটা সময় নিজের ছায়গা হয়ে ছিলেন এই ফরোয়ার্ড।

বাংলাদেশের গোল না পাওয়ার হতাশা আরও বাড়ে ৪১তম মিনিটে। সোহেল রানা পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সের উপর থেকে শরীরটা ঘুরিয়ে শট নেন সুমন। বল গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে ক্রসবার কাঁপিয়ে ফেরে।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে জামালের ফ্রি কিকে ইয়াসিন হেড বুক দিয়ে নামিয়ে নেন সুমন। কিন্তু ক্রসবারের উপর দিয়ে মেরে হতাশা আরও বাড়ান তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধেও শুরুর দিকে বাংলাদেশের খেলায় ছিল না চেনা ধার। ৬১তম মিনিটে সুমনকে তুলে অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবনকে নামান কাবরেরা। সুমনের গোলের অপেক্ষা আরও বাড়ল। একমাত্র গোলটি তিনি করেছিলেন গত অক্টোবরে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের বিপক্ষে ১-১ ড্র ম্যাচে।

দশ মিনিট পর রিমনের নিচু পাসে জামালের ফ্লিক কর্নারের বিনিময়ে আটকান গোলরক্ষক। ৭৫তম মিনিটে দুটি পরিবর্তন আনেন কাবরেরা। রাকিব ও জামালকে তুলে বিপলু ও জাফর ইকবালকে নামান। সিলেটের ছেলে বিপলু লাইনের পাশে আসতেই গ্যালারির উচ্ছ্বাস আরও বাড়ে। চার মিনিট পর জাফরের পাসে বিপলুর ভলি যায় বাইরে।

শেষ দিকে আরও দুটি পরিবর্তন আনেন স্বাগতিক কোচ। ইব্রাহিম ও ফাহাদকে তুলে জুয়েল ও রায়হানকে নামান। লং থ্রোয়ে রায়হান কিছু হেডের পথ তৈরি করে দিয়েছিলেন, কিন্তু সেটাও কাজে লাগাতে পারেনি কেউ। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে রায়হান শটও যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। তাতে ম্যাচজুড়ে বাংলাদেশের আধিপত্য করার গল্পের শেষটা হয়নি জয়ের রঙে রঙিন।