চলতি মৌসুমের শুরু থেকে নিজেদের ছায়া হয়ে ছিল বার্সেলোনা। ক্লাবের ধারাবাহিক ব্যর্থতার জেরে গত অক্টোবরে সরিয়ে দেওয়া হয় সাবেক কোচ রোনাল্ড কুমানকে। এরপর গত ৬ নভেম্বর তার জায়গায় নিয়োগ দেওয়া হয় শাভিকে।
বার্সেলোনার আগে কাতারের ক্লাব আল সাদের কোচ ছিলেন শাভি। ওই ক্লাবেই খেলোয়াড় হিসেবে ২০১৯ সালে অবসর নেওয়ার পর কোচ হিসেবে অভিষেক হয় তার। সাবেক বার্সেলোনা মিডফিল্ডারের হাত ধরে দলটি জেতে সাতটি শিরোপা।
তারপরও বার্সেলোনার কোচ হিসেবে শাভি কেমন করবেন, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল বেশ। তবে আপাতত সেই সংশয় অনেকটাই দূর হয়ে গেছে। তার কোচিংয়ে লা লিগায় এখন পর্যন্ত মাত্র একটি ম্যাচ হেরেছে দলটি। গত ৪ ডিসেম্বর থেকে স্পেনের শীর্ষ লিগে অপরাজিত রয়েছে তারা।
দারুণ এই পথচলায় গত ২০ মার্চ লিগের ফিরতি দেখায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে তাদেরই মাঠে ৪-০ গোলে গুঁড়িয়ে দেয় বার্সেলোনা। ক্লাবটির ইতিহাসে তৃতীয় কোচ হিসেবে ক্লাসিকো অভিষেকে চার বা তার বেশি গোলের ব্যবধানে জেতেন শাভি। প্রথম দুজন স্লোভাকিয়ার ফার্দিনান্দ দাচিক (১৯৫১) ও আর্জেন্টিনার এলেনিও এররেরা (১৯৫৯)।
শাভির মতোই নিজের সময়ের আরেক সেরা মিডফিল্ডার জেরার্ডও কোচ হিসেবে শুরুটা করেছেন দারুণ। লিভারপুলের বয়সভিত্তিক কয়েকটি দলকে কোচিং করানোর পর পেশাদার কোচ হিসেবে তার যাত্রা শুরু ২০১৮ সালে স্কটল্যান্ডের ক্লাব রেঞ্জার্সে।
জেরার্ডের কোচিংয়ে ১৯২ ম্যাচ খেলে ১২৪টি ম্যাচে জয় পায় রেঞ্জার্স। স্কটিশ চ্যাম্পিয়ন হয় একবার। গত নভেম্বরে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব অ্যাস্টন ভিলার দায়িত্ব নেন সাবেক লিভারপুল মিডফিল্ডার।
শনিবার এক চ্যারিটি ম্যাচে অ্যানফিল্ডে মুখোমুখি হয়েছিলেন লিভারপুল ও বার্সেলোনার কিংবদন্তিরা। ম্যাচে বার্সেলোনা কিংবদন্তিরা জেতে ২-১ গোলে। লিভারপুলের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন জেরার্ড।
“আমি মনে করি, শাভিকে নিয়োগ দেওয়াটা বার্সেলোনার একটি মাস্টারস্ট্রোক। সে এমন একজন, বার্সেলোনা যার ডিএনএতে রয়েছে এবং অনেক বছর ধরে সে বিশ্বমানের খেলোয়াড় ছিল।”
“বার্সেলোনার খেলার ধরন সে খুব ভালোভাবে জানে এবং ক্লাবের সমর্থকরা কী দেখতে চায়, সেটাও জানে। কিছু চ্যালেঞ্জিং সময়ের পর মনে হচ্ছে, তারা যে উচ্চতার দল সেখানেই ফিরছে।”
জেরার্ডের দৃঢ় বিশ্বাস, খেলোয়াড় হিসেবে দুর্দান্ত শাভি কোচ হিসেবেও ভালো করবেন।
"বলার অপেক্ষা রাখে না যে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে (জয়টি) তাদের জন্য অনেক বড় কিছু। বার্সেলোনার একজন ভক্ত হিসেবে তাদের এভাবে স্বরূপে ফিরতে দেখে ভালো লাগছে।”
সম্প্রতি বার্সেলোনা সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা বলেছেন, যতদিন ইচ্ছা ক্লাবে থাকতে পারেন শাভি। জেরার্ডও চান, লম্বা সময় যেন কাতালান ক্লাবটিতেই থেকে যান স্পেনের ২০১০ বিশ্বকাপ জয়ী এই তারকা।
“(কোচ হিসেবে) তার পথচলা অনেকটা আমার মতোই, বয়স কম, নতুন। আমি নিশ্চিত যে আমার মতো সে প্রতিদিন অনেক কিছু শিখছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি তাকে শুভকামনা জানাতে চাই। আশা করি, সে বড় বড় সাফল্য পাবে এবং আমি আগামীতে অনেক বছর তাকে বার্সেলোনায় দেখতে চাই।”