সুযোগ পেলে এমন গোল করব: জীবন

রাইট উইং ধরে ছুটলেন বিপলু আহমেদ। ক্রস বাড়ালেন বক্সে। মুগ্ধতা ছড়ানো ব্যাকহিল ফ্লিকে জাল খুঁজে নিলেন নাবীব নেওয়াজ জীবন। অনুশীলনে পাওয়া এই গোলে আত্মবিশ্বাস বাড়ল কতটুকু? জাতীয় দলের অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড স্মিত হেসে জানালেন, মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে সুযোগ পেলে এমন গোল করে দেখিয়ে দিতে চান।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরসিলেট থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2022, 02:45 PM
Updated : 27 March 2022, 05:16 PM

কেবল জীবন নয়, সুমন রেজা, রাকিব হোসেন, মোহাম্মদ ইব্রাহিম কেউই পারছেন না ‘দেখিয়ে দিতে’। তাই প্রতি ম্যাচ শেষেই ফরোয়ার্ডদের দিকে গোল না পাওয়া নিয়ে উঠছে তীর্যক প্রশ্ন। জীবন চান মাঠেই উত্তর দিতে।

কঠিন সময় পেরিয়ে আসা এই ফরোয়ার্ডের মধ্যে তাড়াটাও বেশি। গত বছর মার্চে ডান পায়ের লিগামেন্টে চোট পেয়েছিলেন। এরপর চিকিৎসা নিয়েছেন ভারতে। গত নভেম্বরে স্বাধীনতা কাপ দিয়ে ফুটবলের সবুজে ফিরেন ৩১ বছর বয়সী ফুটবলার।

ফেরাটাও মোটামুটি রাঙিয়েছেন জীবন। স্বাধীনতা কাপে আবাহনী লিমিটেডের শিরোপা জয়ের পথে দুই গোল করেন। ফেডারেশন কাপেও দলের ট্রফি জয়ে অবদান দুই গোল। চলতি লিগে ৯ রাউন্ডে তার গোল আছে দুটি। এখন জীবন অপেক্ষায় মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে আলো ছড়ানোর, জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ গোলটি যে তার ২০২০ সালের নভেম্বরে করা।

নতুন বছরের শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। অনেক প্রত্যাশার ফানুস উড়িয়ে মালদ্বীপে গিয়ে ২-০ গোলে হারে দল। মালের ক্ষত ভুলতে সিলেটে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে আগামী মঙ্গলবারের ম্যাচটিকে পাখির চোখ করেছে বাংলাদেশ।

নতুন বছরে দেশের মাঠে প্রথম ম্যাচ সামনে রেখে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে রোববার দ্বিতীয় দিনের প্রস্তুতি সেরেছে বাংলাদেশ। হাভিয়ের কাবরেরা এদিন প্রস্তুতি সেরেছেন ৪-১-৪-১ ফরমেশনে। সেখানে একজন ফরোয়ার্ড হিসাবে সুমন নাকি জীবন, কাকে কোচ বেছে নিবেন, তা নিশ্চিত হয়নি এখনও। তবে জীবন নিজেকে শাণ দিচ্ছেন ভালোমতোই।

“কোচ নিয়মিত আমাদের দেখাচ্ছেন কোন পজিশনে থাকলে গোল করতে পারব। কেবল খেললে হবে না, পজিশনে থাকাটাও জরুরি। কোচ প্রতিনিয়তই এসব বোঝাচ্ছেন আমাদের। অনুশীলনে যেভাবে গোল করলাম, মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে এমন সুযোগ পেলে ইনশাল্লাহ গোল করব (হাসি)।”

পিছু ফিরে মালদ্বীপ ম্যাচে নিয়ে দুঃখের শেষ নেই বাংলাদেশ দলের। প্রতিপক্ষের মাঠে প্রথম জয়ের চাওয়াটা পূরণ হয়নি এবারও। এই ব্যর্থতার কিছুটা দায় জীবন দিলেন দুর্ভাগ্যকেও।

“মালদ্বীপের মাঠে কেন যেন আমাদের ভাগ্যটা সহায় হয় না। নতুন কোচ নতুন ফরমেশনে খেলিয়েছেন। কখনও ভালো খেলেছি, কখনও পারিনি। কিছু কিছু জায়গায় ভুল হয়েছে। সেগুলো নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি, যাতে পরের ম্যাচে ভুল না হয়।”

“কোচ চাচ্ছেন বিল্ড আপ ফুটবল খেলাতে। সেটা রপ্ত করতে পারলে আশা করি ভালো কিছু হবে। কোচ আরও সময় পেলে হয়তো আমরা আরও ভালো করতে পারব। ফিটনেসে আমাদের কোনো ঘাটতি নেই। সবাই ভালো অবস্থায় আছে। লিগে আমরা খেলার মধ্যে ছিলাম, সেটা আমাদের সাহায্য করছে।”

মাত্র চার দিনের প্রস্তুতি নিয়ে মালদ্বীপের বিপক্ষে প্রত্যাশিত ফল মেলেনি। তা কেবল নতুন কোচের কৌশলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সমস্যার কারণে নয়, নিজেদের ভুল নিয়েও অকপট স্বীকারোক্তি দিলেন জীবন। প্রতিশ্রুতি দিলেন ভুলগুলো শুধরে নেওয়ারও।

“(মালদ্বীপের বিপক্ষে) এই পরাজয় সুখকর নয়। অনেক দিন পর জাতীয় দলে ফিরেছি। হেরে যাওয়ায় খুব দুঃখ পেয়েছি। খেলার মধ্যে থাকলে বোঝা যায় না আসলে কোথায় কোথায় ভুল হচ্ছে। এগুলো কোচ দেখেছেন। দেখার পর কোচ আমাদের ভিডিও দেখিয়ে দিয়েছেন এবং বলে দিয়েছেন কিভাবে খেলতে হবে।”

“এগুলো নিয়ে প্রতিনিয়তই ক্লাস করে কোচ যেটা চাচ্ছেন, সেটা বুঝিয়ে দিচ্ছেন।

মঙ্গোলিয়ার খেলার ভিডিও ক্লিপ দেখে কোচ সাজাচ্ছেন পরিকল্পনা। ওরা অচেনা প্রতিপক্ষ। তবে এখানে আমাদের হোম অ্যাডভান্টেজ থাকবে, দর্শক থাকবে। দেশের ফুটবলের স্বার্থেই ম্যাচটা আমরা জিততে চাই।”

এই চাওয়াটুকু কেবল জীবনের নয়, বাংলাদেশেরও।