নিজের আগে দলের কথা ভাবো, মেসি-নেইমারদের বললেন কোচ

সময়ের সেরা ফুটবলারদের সমন্বয়ে দল গড়েও মাঠে তার ছাপ রাখতে পারছে না পিএসজি। সবচেয়ে বড় সমস্যা, পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা না থাকা। সবাই মিলে একটা ‘দল’ হয়ে উঠতে না পারাই এর মূল কারণ। কোচ মাওরিসিও পচেত্তিনো তাই অজুহাত না খুঁজে সবাইকে দলের প্রতি আরও নিবেদিত হওয়ার পরামর্শ দিলেন।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2022, 12:19 PM
Updated : 21 March 2022, 12:19 PM

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলো থেকে বিদায়ের পর লিগ ওয়ানে বোর্দোর বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতে সমালোচনা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিল পিএসজি। পরের ম্যাচে দলের অবস্থা আরও করুণ হয়ে ওঠে। রোববার ঘরের মাঠে তারা ৩-০ গোলে হেরে বসে মোনাকোর বিপক্ষে।

এই নিয়ে লিগে শেষ পাঁচ রাউন্ডে তিনবার হারল পচেত্তিনোর দল।

অসুস্থতার কারণে লিওনেল মেসি না থাকলেও আক্রমণভাগে তারকার কমতি ছিল না। সাম্প্রতিক সময়ে দলটির একমাত্র ধারাবাহিক পারফরমার কিলিয়ান এমবাপের পাশে ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার নেইমার। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড আরও একবার থাকেন নিজেকে ছায়া হয়ে, ফরাসি তারকাও পারেননি পথ দেখাতে।

নামের ভারে বর্তমানের সবচেয়ে শক্তিশালী দল হয়েও কেন এমন ব্যর্থতা?-অনেকের মতো পচেত্তিনোরও যেন ধারণা, সবাই মিলে দল হয়ে উঠতে না পারাই এর কারণ। মৌসুমের শুরুতেই যে তাগিদ তিনি দিয়েছিলেন বারবার। মোনাকোর কাছে হারের পর দিলেন আরেকবার।

“সবাইকে ব্যক্তিগতভাবে দায়িত্বশীল হতে হবে এবং দলগত অর্জনের কথা ভাবতে হবে। আমরা এই জায়গা থেকে দূরে সরে গেছি। নিজের চেয়ে সবার দলের কথাই বেশি ভাবা উচিত।”

“আমাদের সমাধান খুঁজে বের করতে হবে এবং অজুহাত খোঁজা বন্ধ করতে হবে।”

মোনাকোর বিপক্ষে ম্যাচে দলের মাঝে লড়াকু মানসিকতা না দেখে হতাশ পচেত্তিনো। তার মতে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের উন্নতির পাশাপাশি ক্লাব ও ভক্তদের প্রতি আরও শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।

“এটা মেনে নেওয়ার মত নয়। দলের প্রথমার্ধের পারফরম্যান্স অগ্রহণযোগ্য। আমাদের লড়াইয়ের মনোভাবই ছিল না। আমরা যেভাবে খেলেছি, তা গ্রহণযোগ্য নয়।”

“এভাবে চলতে পারে না। একজনের পারফরম্যান্স (খারাপ) হতেই পারে, কিন্তু এই ধরনের মনোভাব মেনে নেওয়া যায় না। এভাবে ম্যাচ শুরু করা অগ্রহণযোগ্য। ক্লাবের ও আমাদের সমর্থকদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়াটা অপরিহার্য।”

ইউরোপ সেরার মঞ্চ থেকে পিএসজির বিদায়ের আগে ও পরে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে পচেত্তিনোর কোচিং। তিনি তারকাসমৃদ্ধ এই দলটিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সঠিক ব্যক্তি কি-না, তা নিয়েও মতভেদ রয়েছে।

প্রশ্ন কেবল ডাগআউটের কর্তাকে নিয়েই নয়, মাঠের ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সের জন্যও আঙুল উঠছে অনেকের দিকে। কদিন আগে যেমন কয়েকটি গণমাধ্যমের খবর, নেইমার ধারাবাহিক বাজে পারফরম্যান্সে ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেছে ক্লাব। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায়ের পর ক্লাবের সভাপতি পদ থেকে নাসের আল খেলাইফিরও পদত্যাগের দাবি উঠেছে।

সাবেক ফরাসি ফরোয়ার্ড থিয়েরি অঁরি মনে করেন, দলের ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারবে না কেউ। অ্যামাজন প্রাইমকে তিনি বলেন, পিএসজি ‘ক্লাবের চেয়ে যেন একটি কোম্পানির মতো পরিচালিত হচ্ছে।’

“আমি বার্সেলোনায় খেলেছি এবং কেউ তার করণীয় করতে না পারলে সে যেই হোক না কেন, তার নাম যত বড়ই হোক না কেন, তাকে ছুড়ে ফেলা হবে।”

“বায়ার্ন মিউনিখেও এমনটা হলেও তাকে বিদায় করে দেওয়া হবে। কিন্তু পিএসজিতে, তাই কি করা হবে?

মোনাকোর কাছে বিধ্বস্ত হলেও লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে শক্ত অবস্থানেই আছে পিএসজি। ২৯ ম্যাচে ২০ জয় ও পাঁচ ড্রয়ে ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে তারা।

৫৩ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে উঠেছে মার্সেই।