‘মাঠে রিয়ালকে চেনাই যায়নি’

প্রথম ১০ মিনিট আর শেষের খানিকটা সময় বাদ দিলে পুরো ম্যাচেই রিয়াল মাদ্রিদ ছিল কোণঠাসা। ব্যস্ত সময় পার করে ঘর সামলাতে। সেটাও অবশ‍্য পারেনি তারা। ভঙ্গুর রক্ষণ, অকার্যকর মাঝমাঠ আর ধারহীন আক্রমণে প্রতিপক্ষককে একটুও ভাবাতে পারেনি দলটি। ঘরের মাঠে বার্সেলোনার কাছে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর ধেয়ে আসছে সমালোচনার তীর। ঢাল হযে সামনে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন কোচ কার্লো আনচেলত্তি। বলেছেন, “সব দায় আমার।”

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2022, 09:40 AM
Updated : 21 March 2022, 11:14 AM

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে লা লিগায় টানা চার ও সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা পাঁচ জয়ের আত্মবিশ্বাস ছিল সঙ্গী। কেবল তাই নয়, সাম্প্রতিক সময়েও জয়রথে ছিল দলটি। কিন্তু সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে রোববার রাতে খেলতে নেমে শুরুর দুটি ব্যর্থ আক্রমণের পরই পথ হারিয়ে ফেলল দলটি।

অন্যভাবে বলা যায়, বার্সেলোনার আক্রমণের তোড়ে ভেসে গেছে তারা। প্রথমার্ধে পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং ও রোনালদ আরাহোর গোলে পড়ে পিছিয়ে। বিরতির পর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগই দেয়নি কাতালান ক্লাবটি। দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর ৬ মিনিটের মধ্যে ফেররান তরেস ও অবামেয়াং ফের লক্ষ্যভেদ করলে লড়াই থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায় ইউরোপের সফলতম দলটি।

পরের ১৫ মিনিটে অবামেয়াং ও ফেররানই নিশ্চিত কয়েকটি সুযোগ নষ্ট না করলে রিয়ালের জন্য রাতটি হতে পারতো আরও বিব্রতকর।

ম্যাচ শুরুর আগেও যারা এতটা ভালো অবস্থানে ছিল, কদিন আগেও যারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল তারকাসমৃদ্ধ পিএসজিকে, সেই দলটিই কেন পালাবদলের মধ্যে দিয়ে যাওয়া বার্সেলোনার বিপক্ষে এতটা বিবর্ণ হয়ে পড়ল?

ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তি কারণ দেখানোর চেষ্টাই করলেন না। এককথায় বলে দিলেন, খুব বাজে খেলেছে তার দল।

“আমাদের মাঠে চেনাই যায়নি, সবকিছুই ভুল পথে গেছে। আমি খেলোয়াড়দের বলেছি যে, এই হারের দায় আমার।”

একাদশ মিনিটে বল দখলে চ্যালেঞ্জ জানাতে গিয়ে টনি ক্রুসের পায়ে প্রচণ্ড আঘাত করে বসেন অবামেয়াং। ফাউলের বাঁশি বাজলেও কোনো কার্ড দেখাননি রেফারি, স্বাভাবিকভাবে যেটা হলুদ কার্ড হতে পারতো। এই বিষয় নিয়েও কোনোরকম মন্তব্য করতে চাননি আনচেলত্তি।

“(ওই ফাউলের বিষয়ে) আমি কারণটা বুঝতে পারিনি। তবে এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না, কারণ আমি কোনো অজুহাত দেখাতে চাই না। আমরা খুব খারাপ খেলেছি।”

পায়ের চোটে খেলতে পারেননি করিম বেনজেমা। আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২২ গোল করা তারকার অনুপস্থিতি রিয়ালের আক্রমণভাগে ফুটে ওঠে প্রকটভাবে। এখানে আনচেলত্তির কৌশলের ভুলও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ফরাসি স্ট্রাইকারের শূন্যতা পূরণে আনচেলত্তি ৪-৩-৩ থেকে সরে গিয়ে ফরমেশন সাজান ৪-১-৪-১ এ, যা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়। মাঝমাঠের দখল হারানোর পাশাপাশি রক্ষণ হয়ে পড়ে উন্মুক্ত। যার সুবিধা শতভাগ কাজে লাগায় প্রতিপক্ষ।

দুই গোলে পিছিযে থেকে দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর সময় ডিফেন্ডার দানি কারভাহালকে বসিয়ে ফরোয়ার্ড মারিয়ানো দিয়াসকে নামান কোচ। অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে রক্ষণ হয়ে পড়ে দুর্বল। বার্সেলোনার শেষের দুই গোলে সেটা স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।

তবে এসব নিয়ে আর প্রকাশ্যে আর কাটছেড়া না করে সামনে তাকানোর প্রয়োজন দেখছেন আনচেলত্তি। আন্তর্জাতিক বিরতির মাঝেই এই হতাশা পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়াতে চান তিনি।

লিগ টেবিলে রিয়ালের শীর্ষস্থান সুসংহতই আছে। ২৯ ম্যাচে ২০ জয় ও ৬ ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৬৬। ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে সেভিয়া।

এক ম্যাচ কম খেলা বার্সেলোনা ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে।