২০২০ সালের মার্চের পর থেকে সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে সংস্কার কাজ চলায় সেখানে কোনো ক্লাসিকো হয়নি। তবে রিয়াল ঠিকই ছিল জয়ের ধারায়। এই দ্বৈরথের পাশাপাশি সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচে জয়ের ধারায় ছিল তারা। এর মাঝে আছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে পিএসজির বিপক্ষে সেই দুর্দান্ত জয়ের ম্যাচও।
দারুণ ছন্দে থাকা দলটিই দুই বছর বাদে প্রিয় আঙিনায় চিরপ্রতীদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে খেলতে নেমে পথ হারিয়ে ফেলল! বার্সেলোনা যে ফুটবল উপহার দিল, দাপুটে ফুটবল খেলে যেভাবে ৪-০ গোলের জয় ছিনিয়ে নিল, তা অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য। বিস্ময়কর।
তাদের কোচ শাভি অবশ্য আগের দিনই দারুণ কিছু করে দেখানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে তার ছেলেরা যে এতটা দুর্দান্ত খেলবে, তিনি নিজেও কি ভেবেছিলেন?
দুই অর্ধে দুটি করে গোল করে বার্সেলোনা। পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং দলকে এগিয়ে দেওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রোনালদ আরাহো। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ফেররান তরেস জালে বল পাঠানোর খানিক পরই নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন অবামেয়াং।
প্রতিটি গোলের পর ডাগআউটে শাভির চোখে-মুখে সে কী উচ্ছ্বাস। আর ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে তার কণ্ঠে ফুটে উঠল আত্মবিশ্বাস।
“জানি না, আমরা (লা লিগা) শিরোপা জিততে পারব কি-না। কোনো সম্ভাবনাই আমরা বাতিল করে দিতে পারি না। হয়তো আমরা একটু বেশিই দেরি করে ফেলেছি, তবে এই জয় আমাদের জন্য অনেক বড়।”
৩ পয়েন্ট বেশি নিয়ে দুইয়ে আছে সেভিয়া। আর সবার ওপরে রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৬৬।
তাদের বিপক্ষেই প্রায় পুরো ম্যাচে ফেররান-অবামেয়াংদের আধিপত্য ধরে রাখাটা বাড়তি আনন্দ দিচ্ছে কোচকে। সামনের পথচলায় পাচ্ছেন বাড়তি অনুপ্রেরণাও।
“আমরা রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে ভালো খেলেছি। বলতে গেলে আমরাই স্বাগতিক দলের মতো খেলেছি। এই দিনটা উপভোগের, কেবল বার্সা কোচ হিসেবে নয়, একজন সমর্থক হিসেবেও।”
প্রায় ৬০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে ১৮টি শট নেয় বার্সেলোনা, যার ১০টি লক্ষ্যে। অবামেয়াং, ফেররান, উসমান দেম্বেলে নিশ্চিত কয়েকটি সুযোগ নষ্ট না করলে ব্যবধান হতে পারত আরও বড়।
শাভিও বললেন তাই। টানা পাঁচ ক্লাসিকো হারের পর জয়ের স্বাদ পাওয়ার স্বস্তিও কাজ করছে তার মনে।
“আমরা অনায়াসে পাঁচ কিংবা ছয়টি গোল করতে পারতাম। গত কয়েকটি ক্লাসিকোয় পরাজয়ে যে নেতিবাচকতা জন্মেছিল, তা আমরা ঝেড়ে ফেলেছি।”
কোচের মতো বার্সেলোনা মিডফিল্ডার সের্হিও বুসকেতসও দিলেন, শিরোপার লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা।
“শিরোপা লড়াইয়ে আমাদের যদি সামান্য সম্ভাবনাও থাকে, তাহলেও আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করব। এটা খুব কঠিন বটে, তবে ফুটবলে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। আমরা বার্সা।”