অসাধারণ বার্সার দুর্দান্ত জয়

গালাতাসারাই ম্যাচের হতাশা পেছনে ফেলে ওসাসুনার বিপক্ষে ম্যাচ জুড়ে নজরকাড়া পারফরম্যান্স উপহার দিল বার্সেলোনা। দারুণ জয়ে উঠল লিগ টেবিলের তিনে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2022, 09:53 PM
Updated : 13 March 2022, 10:28 PM

কাম্প নউয়ে রোববার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ৪-০ গোলে জিতেছে শাভি এরনান্দেসের দল। জোড়া গোল করেছেন ফেররান তরেস, একটি করে পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং ও রিকি পুস।

পুরো ম্যাচে আলো ছড়ান উসমান দেম্বেলে। ফরাসি ফরোয়ার্ডের নামের পাশে অ্যাসিস্ট দুটি।

পরিসংখ্যানেই ফুটে উঠছে ম্যাচে বার্সেলোনার দাপটের চিত্র। ৭২ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য তারা শট নেয় ২৪টি, যার ৯টি ছিল লক্ষ্যে। আর ওসাসুনার চার শটের তিনটি লক্ষ্যে ছিল।

ইউরোপা লিগে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে গত বৃহস্পতিবার ঘরের মাঠে গালাতাসারাইয়ের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছিল বার্সেলোনা।

লা লিগায় ফিরে ঠিকই জয়ের ধারা ধরে রাখল কাতালান দলটি। লিগে এটি তাদের টানা চতুর্থ জয়।

আক্রমণাত্মক ফুটবলে প্রথমার্ধে ১৩ মিনিটের মধ্যে তিন গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ মুঠোয় নেয় বার্সেলোনা।

গোলের সূচনা চতুর্দশ মিনিটে ফেররানের সফল স্পট কিকে। ডি-বক্সে গাভিকে ওসাসুনার ডিফেন্ডার নাচো ভিদাল ফেলে দিলে পেনাল্টিটি দিয়েছিলেন রেফারি।

ছয় মিনিট পর ফেররান ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। দেম্বেলের দারুণ থ্রু বল ডি-বক্সে পেয়ে আগুয়ান গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন গত ডিসেম্বরে ম্যানচেস্টার সিটি থেকে কাম্প নউয়ে আসা স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।

কিছুদিন আগেও ক্লাবে ব্রাত্য হয়ে পড়েছিলেন যিনি, সেই দেম্বেলে অবদান রাখেন পরের গোলেও। ডান দিক থেকে ফরাসি ফরোয়ার্ডের আরেকটি দারুণ পাসে ছুটে গিয়ে কাছ থেকে স্লাইড করে বল জালে পাঠান অবামেয়াং।

জানুয়ারির দলবদলে ফ্রি ট্রান্সফারে আর্সেনাল থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেওয়া অবামেয়াংয়ের লা লিগায় ছয় ম্যাচে গোল হলো পাঁচটি, একবিংশ শতাব্দীতে প্রতিযোগিতাটিতে দলটির কোনো খেলোয়াড়ের দ্বিতীয় দ্রুততম পাঁচ গোলের কীর্তি এটি। ২০০৪ সালে সামুয়েল এতো ও ২০০৯ সালে জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ পাঁচ ম্যাচে করেছিলেন পাঁচ গোল। 

লা লিগায় নিজের সবশেষ চার ম্যাচে পাঁচটি অ্যাসিস্ট করলেন দেম্বেলে, ২০২২ সালে প্রতিযোগিতাটিতে যা যৌথভাবে সর্বোচ্চ। যেখানে বার্সেলোনার হয়ে তার আগের ৪৫ লিগ ম্যাচ মিলিয়ে অ্যাসিস্ট ছিল পাঁচটি।

প্রথমার্ধে গোলের উদ্দেশে ১০ শটের চারটি লক্ষ্যে রাখে বার্সেলোনা, যার তিনটিই সফল।

দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে আরেকটি দারুণ সুযোগ পান অবামেয়াং। দেম্বেলের ক্রসে ডি-বক্সে প্রথম স্পর্শে ভলি লক্ষ্যে রাখতে পারেননি গ্যাবনের এই ফরোয়ার্ড।

বার্সেলোনার জার্সিতে ৬০০তম ম্যাচ খেলতে নামা জেরার্দ পিকে ৫৫তম মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে জালে বল পাঠালেও অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। দেম্বেলের ৭০তম মিনিটের শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান গোলরক্ষক।

৭৫তম মিনিটে স্কোরলাইন ৪-০ করেন দুই মিনিট আগেই বদলি নামা রিকি পুস। দেম্বেলের পাসে বক্সের বাইরে থেকে পুসের প্রথম শট গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। তার ও দুই ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তরুণ স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। 

বার্সেলোনার ২২ খেলোয়াড় এই মৌসুমে লা লিগায় জালের দেখা পেলেন। একবিংশ শতাব্দীতে স্পেনের শীর্ষ লিগে যা সর্বোচ্চ। ২০১৯-২০ মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের ২১ খেলোয়াড় গোল করেছিলেন।

ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আগামী বৃহস্পতিবার গালাতাসারাইয়ের মাঠে খেলবে বার্সেলোনা। তার আগে লিগের এই জয় নিশ্চিতভাবে তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।

২৭ ম্যাচে ১৪ জয় ও ৯ ড্রয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট হলো ৫১। তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে চারে আতলেতিকো মাদ্রিদ, একটি ম্যাচ বেশি খেলেছে শিরোপাধারীরা।

২৮ ম্যাচে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে সেভিয়া। এক ম্যাচ কম খেলে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ।