তাই শুধু এই দুজনের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করা ঠিক নয় বলে মনে করেন পচেত্তিনো। রোববার বোর্দোর বিপক্ষে লিগ ম্যাচে ৩-০ গোলে জয়ের পর তিনি বললেন, মেসি-নেইমারকে যথাযথ সম্মান দেওয়া উচিত।
লিগ ওয়ানে গত সপ্তাহে নিসের বিপক্ষে ভীষণ বাজে খেলে শেষ মুহূর্তের গোলে হেরে যায় পিএসজি। এর চার দিন বাদে গত বুধবার রিয়ালের বিপক্ষে তাদের পারফরম্যান্স আরও হতাশাজনক। ইউরোপ সেরার মঞ্চে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে কিলিয়ান এমবাপের দারুণ নৈপুণ্যে ১-০ গোলে জিতে এগিয়ে ছিল তারা। সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়েও বিরতির আগে অসাধারণ এক গোল করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড, দুই লেগ মিলিয়ে তারা এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে।
নিস ম্যাচের মতো রিয়ালের বিপক্ষেও পুরোটা সময়ে নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন মেসি। বারবার তার বল হারানোটা ছিল ভীষণ দৃষ্টিকুট। নেইমারও পারেননি ছাপ রাখতে।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রিয় দলের ধারহীন পারফরম্যান্সে আগে থেকেই ফুঁসছিল সমর্থকরা। গত মাসেই দলটির সবচেয়ে প্রভাবশালী সমর্থক গোষ্ঠী কালেকটিফ আল্ট্রাস প্যারিস (সিইউপি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়। তাদের অভিযোগ ছিল, ঐতিহ্য ভুলে গেছে পিএসজি।
রিয়াল ম্যাচের পর সেই ক্ষোভ বেড়েছে আরও কয়েক গুণ। শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট নাসের আল খেলাইফি ও ক্রীড়া পরিচালক লিওনার্দোর পদত্যাগ দাবি করে। তাদের প্রচণ্ড ক্ষোভ এরপর গিয়ে পড়ে খেলোয়াড়দের ওপর, বিশেষ করে মেসি-নেইমারের ওপর।
বোর্দোর বিপক্ষে ম্যাচের শুরুর দিকে নেইমার ফ্রি কিক নেওয়ার সময় তাকে উদ্দেশ্য করে দুয়ো দেয় সমর্থকরা। মেসির বেলাতেও ঠিক তাই দেখা যায়। এমনকি, তাদের পায়ে বল গেলেই শোনা যাচ্ছিল দুয়োধ্বনি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে দল আগেভাগে ছিটকে পড়ায় পচেত্তিনোর অবস্থাও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। তবে বোর্দোর বিপক্ষে স্বস্তির জয়ের পর খেলোয়াড়দের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেন কোচ।
“(সমর্থকদের এমন আচরণ) কেউ পছন্দ করবে না। এটা আমাকে কষ্ট দিয়েছে। পিএসজিকে যারা ভালোবাসে তাদের সবারই মাদ্রিদে ওই হতাশাজনক ফলের পর মন খারাপ। কিন্তু আজ যা দেখলাম, তাতেও আমার খারাপ লাগছে।”
“আমরা সবার হতাশা ও রাগের কারণ বুঝতে পারছি। আমরা একটা দল হয়েই কঠিন সময়টা পার করছি। যা কিছু হয়েছে, সবকিছুর দায় নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের সবার।”
“কেবল নেইমার ও মেসির ওপর সমর্থকদের রাগ দেখানো ঠিক নয়। এর ভাগিদার আমরা সবাই, কেবল মেসি-নেইমার নয়, তারা দুজন বিশ্ব মানের খেলোয়াড়। তাদের সম্মান প্রাপ্য। আমরা সবসময় দল হিসেবে হারি বা জিতি।”
সমর্থকদের ক্ষোভের মুখে জয়ের পাশাপাশি গোল পাওয়ার স্বস্তি অবশ্য আছে নেইমারের। তার আগে-পরে গোল করেন এমবাপে ও লেয়ান্দ্রো পারেদেস।
এই জয়ে লিগ ওয়ান শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে আরেক ধাপ এগিয়েছে পিএসজি। ২৮ ম্যাচে ২০ জয় ও ৫ ড্রয়ে ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে তারা। সমান ম্যাচে ৫০ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে নিস।