ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থার পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ওই দুই জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়। তবে, কী বিষয়ে সেটা খোলাসা করেনি সংস্থাটি।
পিএসজিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার-ফাইনালে জায়গা করে নেওয়াটা ছিল স্পেনের কয়েকটি গণমাধ্যমে বৃহস্পতিবারের সবচেয়ে বড় খবর। পাশাপাশি বড় কাভারেজ পায় ম্যাচ শেষে রেফারিদের রুমে গিয়ে আল খেলাইফির চিৎকার করার ঘটনা। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন লিওনার্দো।
পুরো ঘটনাটি রিয়ালের এক কর্মচারী তার মোবাইল ফোনে ভিডিও করে বলেও দাবি করা হয়েছে ওইসব প্রতিবেদনে।
বিস্তারিত কিছু না জানালেও পিএসজির ওই দুজনের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়টি রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে উয়েফা।
“আমরা নিশ্চিত করছি যে একটি আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। উয়েফা নিয়ন্ত্রক, এথিকস ও ডিসিপ্লিনারি বডি আগামীতে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।”
শেষ ষোলোর প্রথম লেগে ১-০ গোলে জয়ী পিএসজি বুধবার রাতের ফিরতি লেগে প্রথমার্ধে কিলিয়ান এমবাপের গোলে এগিয়ে যায়। দুই লেগ মিলিয়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে শেষ আটে ওঠার পথেই ছিল তারা। কিন্তু সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায় ম্যাচের শেষ ৩০ মিনিটে।
প্যারিসের দলটির পথ হারানোর শুরু ৬১তম মিনিটে। মার্কো ভেরাত্তির ব্যাকপাস ধরে গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা বল ক্লিয়ার করতে সময় নেন। সেই সুযোগে ছুটে গিয়ে তাকে চ্যালেঞ্জ জানান করিম বেনজেমা। চাপে পড়ে ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেননি সময়ের সেরা গোলকিপারদের একজন বলে পরিচিত তরুণ এই ইতালিয়ান। বল পেয়ে যান বক্সের অন্য প্রান্তে থাকা রিয়াল ফরোয়ার্ড ভিনিসিউস। তার পাস ফাঁকায় পেয়ে জালে পাঠান ফরাসি ফরোয়ার্ড।
এরপরই পুরোপুরি ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে পিএসজি। ৭৬ ও ৭৮তম মিনিটে আরও দুটি গোল করে নাটকীয় জয় ছিনিয়ে নেন বেনজেমা।
পিএসজির যত অভিযোগ প্রথম গোলটিকে ঘিরে। ম্যাচের পর যেমন কোচ মাওরিসিও পচেত্তিনো বলেন, রেফারির ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হয়েছেন তারা, দোন্নারুম্মাকে পরিষ্কার ফাউল করেছিলেন বেনজেমা।
“মহা অন্যায়ের শিকার হওয়ার অনুভূতি হচ্ছে আমার, কারণ দোন্নারুম্মাকে বেনজেমা পরিষ্কার ফাউল করার পর আমরা গোলটি হজম করি। ওই গোলের পর সবার মানসিক অবস্থা বদলে যায়। আমরা আমাদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি ওই গোলের পর এবং একটু বেশিই উন্মুক্ত হয়ে পড়ি।”
“এটিকে আমি (গোলকিপারের) ভুল হিসেবে বিবেচনাই করি না, কারণ ফাউলটি ছিল স্পষ্ট। বিভিন্ন ক্যামেরায় নানা অ্যাঙ্গেল থেকে ৩০-৪০ বার দেখেই আমি এই কথা বলছি।”
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই গোলের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানাতেই ম্যাচ শেষে রেফারিদের রুমে ছুটে যান আল খেলাইফি ও লিওনার্দো। এএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুরো ঘটনাটি রিয়ালের এক কর্মী ভিডিও করার সময় তাকে ‘আমি তোমাকে খুন করব’ বলে হুমকি দেন খেলাইফি।
এতসব অভিযোগ এবং উয়েফার আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে পিএসজির মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করে রয়টার্স। কিন্তু ক্লাবটির পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।