বাধ্য হয়ে চেলসি বিক্রি করে দিচ্ছেন আব্রাহামোভিচ

ইউরোপে একদিকে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ, যার প্রভাব পড়ছে সারা বিশ্বে। রাশিয়ানদের বিরুদ্ধে জনমনে যে ক্ষোভ বাসা বেঁধেছে, তা ছড়িয়ে পড়ছে নানা জায়গায়। এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হতে পারে ক্লাব চেলসি। দলটি ইংলিশ হলেও মালিক রোমান আব্রাহামোভিচ রুশ হওয়ায় খুব কঠিন অবস্থায় পড়ে গেছে লন্ডনের ক্লাবটি। একরকম বাধ্য হয়েই প্রিয় ক্লাবটি বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2022, 07:37 PM
Updated : 2 March 2022, 07:37 PM

চেলসির ওয়েবসাইটে বুধবার দেওয়া বিশদ বিবৃতিতে সিদ্ধান্তটি জানান আব্রাহামোভিচ। বলেন, সিদ্ধান্তটি নেওয়া ছিল খুব কঠিন যা তাকে কষ্ট দিচ্ছে।

ইউক্রেইনের ওপর রাশিয়ার হামলার পর দেশটির ওপর নানারকম নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। শোনা যায়, পুতিনের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠ আব্রাহামোভিচ। তিনি নিজে অবশ্য সবসময় এটাকে গুজব বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন।

কেবল রাজনৈতিক অঙ্গনেই নয়, দেশটির ক্রীড়াক্ষেত্রেও পড়েছে এর বিরূপ প্রভাব। সেন্ট পিটার্সবুর্গ থেকে চলতি মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল প্যারিসে সরিয়ে নেওয়ার পর গত সোমবার রাশিয়ার সকল ক্লাব ও জাতীয় দলকে সব ধরনের প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করেছে ফিফা ও উয়েফা।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে আব্রাহামোভিচের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি ওঠার পর শনিবার চেলসির ‘অভিভাবকত্ব’ চেলসিরই চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশনের হাতে দেওয়ার ঘোষণা দেন ৫৫ বছর এই ব্যবসায়ী। এতে পরিস্থিতি শুরুতে কিছুটা শান্ত হলেও জেঁকে বসা সমস্যা আসলে কমেনি একটুও।

দুদিন ধরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল, চেলসি চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন দায়িত্ব নিতে আগ্রহী নয়। একইসঙ্গে আব্রাহামোভিচ ক্লাব বেচে দিতে পারেন বলেও গুঞ্জন ছিল। সেটাই অবশেষে সত্যি হতে যাচ্ছে।

বিক্রি করে দেওয়ার ঘোষণায় আব্রাহামোভিচ বলেন, “আমি সবসময় মন থেকে ক্লাবের সবচেয়ে ভালোর জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই পরিস্থিতিতে তাই আমি ক্লাবকে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ আমার বিশ্বাস, ক্লাব, সমর্থক, সব স্টাফ এবং একই সঙ্গে ক্লাবের স্পন্সর ও পার্টনারদের জন্য এটাই সবচেয়ে ভালো হবে।”

২০০৩ সালে চেলসির মালিকানা কেনেন আব্রাহামোভিচ। তার সময়ে দারুণ সব সাফল্য পেয়েছে ক্লাবটি। প্রিমিয়ার লিগে তারা যে ৬টি শিরোপা জিতেছে তার ৫টিই এই সময়ে। দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপার দুটিই এসেছে তার মালিকানায়, ২০১১-১২ ও ২০২০-২১ মৌসুমে।

বিরূপ পরিস্থিতিতে প্রিয় ক্লাবটিকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে তাকে। তবে এর জন্য খুব তাড়াহড়ো নেই বলেও উল্লেখ করেছেন বিবৃতিতে।

“ক্লাবটির বিক্রির প্রক্রিয়া দ্রুত করা হবে না, সঠিক প্রক্রিয়া মেনেই হবে। আমাকে কোনো ঋণও পরিশোধ করতে হবে না।”

“আমি আমার লোকদের একটি চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন গড়তে বলেছি। বিক্রি থেকে লাভের অঙ্ক সেখানেই যাবে। ফাউন্ডেশনের অর্থ ইউক্রেইন যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের কল্যাণে ব্যয় করা হবে।”