গত মৌসুমের শেষে লিওনেল মেসি, অঁতোয়ান গ্রিজমান ছাড়াও অভিজ্ঞদের কয়েকজনকে হারিয়ে শক্তি অনেকটাই কমে যায় বার্সেলোনার। ২০২১-২২ মৌসুম শুরু হতেই তার প্রভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করে। একের পর এক ছন্দহীন পারফরম্যান্সে কেবল পেছনেই হটতে থাকে তারা।
টানা সেই ব্যর্থতায় ২০০০-০১ মৌসুমের পর এবারই প্রথম কাতালান ক্লাবটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে নেমে গেছে ইউরোপা লিগে। অবশ্য ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা প্রতিযোগিতাটির মূল পর্বে খেলা এখনও তাদের নিশ্চিত হয়নি। এজন্য শেষ ষোলোর প্লে-অফে তাদের হারাতে হবে নাপোলিকে।
সেই লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার রাতে সেরি আর দলটির মাঠে খেলতে নামবে বার্সেলোনা। বাংলাদেশ সময় ম্যাচটি শুরু হবে রাত ২টায়। গত বৃহস্পতিবার কাম্প নউয়ে প্রথম লেগ ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল।
কঠিন পরীক্ষায় নামার আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে প্রতিপক্ষকে প্রশংসায় ভাসালেন শাভি। তিনি নাপোলিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দল হিসেবেই দেখেন। আর তাই দলটিকে হারিয়ে নিজেদের সত্যিকারের অবস্থান ফুটিয়ে তুলতে চান সাবেক এই মিডফিল্ডার।
“আগামীকালকের (বৃহস্পতিবার) ম্যাচটি লিটমাস টেস্ট, যা দিয়ে জানতে পারব আমরা কোন অবস্থানে আছি। আমরা এখন ইউরোপা লিগে, কিন্তু নাপোলি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (মানের) প্রতিদ্বন্দ্বী।”
বার্সেলোনা অবশ্য সবসময়ই অধিকাংশ সময় বল ও পজেশন দখলে রেখে আক্রমণ শানানোর কৌশলে খেলে থাকে। আগের চেয়ে তাদের শক্তিমত্তায় অনেক তারতম্য থাকলেও এই কৌশলে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এখন তাদের মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ফিনিশিংয়ে দুর্বলতা।
নাপোলির বিপক্ষে প্রথম লেগেও যেমন, বেশিরভাগ সময় চাপ ধরে রেখে একের পর এক আক্রমণ করেছিল শাভির দল। সুযোগও তৈরি করেছিল অনেক। জানুয়ারির দলবদলে নতুন আসা ফেররান তরেস একাই গোলের উদ্দেশ্যে শট নেন ৯টি; ইউরোপীয় কোনো ম্যাচে দলটির হয়ে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, রেকর্ড ১১ শট মেসি নিয়েছিলেন ২০২০ সালে ইউভেন্তুসের বিপক্ষে। তরেসের ওই ৯ প্রচেষ্টার মধ্যে তিনটি ছিল নিশ্চিত সুযোগ। পরে পেনাল্টি থেকে দলের একমাত্র গোলটি করেন তিনি।
তাই পজেশনে রাখায় আধিপত্য করলেই হবে না, নাপোলিকে হারাতে ফিনিশিংয়ের সমস্যা নিয়েই আগে ভাবতে হবে শাভিকে। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটির আগে অতীত পরিসংখ্যান বাড়তি অনুপ্রেরণাদায়ক হতে পারে ইতালিয়ান ক্লাবটির জন্য।
ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় স্প্যানিশ ক্লাবের বিপক্ষে এ পর্যন্ত ১০ ম্যাচে মাত্র একবার হেরেছে নাপোলি; জিতেছে ৬টি, ড্র করেছে ৩টি।
জানুয়ারির দলবদলে তরেস ছাড়াও কাম্প নউয়ের ক্লাবটিতে যোগ দিয়েছেন পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং ও আদামা ত্রাওরে। এতে দলটির আক্রমণভাগের শক্তি বেড়েছে নিশ্চিতভাবে। সেই সঙ্গে দলের তরুণরাও গত কয়েক ম্যাচে দারুণ পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন।
নাপোলির বিপক্ষে লড়াইয়েও নতুন ও উঠতিদের ওপর আলাদা করে ভরসা রাখছেন কোচ। আলাদা করে বললেন নিজেদের একাডেমি লা মাসিয়া থেকে উঠে আসাদের কথা।
“একাডেমির খেলোয়াড়দের ওপর আমাদের অনেক আস্থা। খেলোয়াড়রা দলের প্রতি অনেক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দলে যখন আমাদের একাডেমির খেলোয়াড় থাকে তখনই আমরা শিরোপা জিতেছি।”
“এ কারণেই গাভি, নিকো (গনসালেস) অথবা (রোনালদ) আরাহো কিংবা (সের্হিও) বুসকেতস বা (জেরার্দ) পিকের মতো অভিজ্ঞরা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দেখছি যে ১৭-১৮ বছর বয়সী খেলোয়াড়রা পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে।”