দ্বিতীয়ার্ধে আলো ছড়িয়ে জয়ে ফিরল রিয়াল

দুই অর্ধে যেন দুই রিয়াল মাদ্রিদের দেখা মিলল। প্রথমার্ধের ধারহীন দলটিই বিরতির পর জ্বলে উঠল। একে একে গোল পেলেন আক্রমণভাগের সবাই। সাম্প্রতিক সময়ে ঘিরে ধরা ব্যর্থতার জাল ছিঁড়ে দেপোর্তিভো আলাভেসকে গুঁড়িয়ে দিল কার্লো আনচেলত্তির দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2022, 09:57 PM
Updated : 19 Feb 2022, 10:50 PM

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে শনিবার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ৩-০ গোলে জিতেছে রিয়াল। মার্কো আসেনসিওর অসাধারণ নৈপুণ্যে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ভিনিসিউস জুনিয়র। আর যোগ করা সময়ে স্কোরলাইনে নাম লেখান করিম বেনজেমা।

গত অগাস্টে আলাভেসকে ৪-১ গোলে হারিয়েই শিরোপা পুনরুদ্ধারে যাত্রা শুরু করেছিল রিয়াল।

দুই অর্ধে রিয়ালের পারফরম্যান্সে কতটা ফারাক, তা গোলের উদ্দেশ্যে তাদের শট নেওয়ার হিসাবেই প্রমাণ হয়। প্রথমার্ধে তাদের আট শটের মাত্র দুটি ছিল লক্ষ্য, তার কোনোটিই আবার যথেষ্ট ভীতি জাগানিয়া নয়। আর দ্বিতীয় ভাগে তাদের ১৫ শটের সাতটিই ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে, কেবল ৩০ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা আলাভেস শট নিতে পারে সাতটি, মাত্র দুটি লক্ষ্যে।

গত সপ্তাহে তিন দিনের ব্যবধানে জোড়া ধাক্কা খায় রিয়াল। লা লিগায় ভিয়ারিয়ালের মাঠে গোলশূন্য ড্র করার পর মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজির মাঠে বাজে পারফরম্যান্সে হেরে বসে ১-০ গোলে।

চার দিন আগে পিএসজির মাঠে নিজের ছায়া থাকা ভিনিসিউস এখানে প্রথম মিনিটেই দারুণ কিছু করতে পারতেন। কিন্তু ডি-বক্সে বল নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে ছোঁয়াটা জোরে দিয়ে ফেলেন তিনি। বল চলে যায় বাইলাইন পেরিয়ে।

ওই হাফ-চান্সটা নষ্ট করার পর প্রথমার্ধের বাকি সময়ে কেবল আক্রমণই করে যায় রিয়াল। তবে নিশ্চিত সুযোগ একটিও তৈরি করতে পারেনি তারা। এই সময়ে স্বাগিতকদের সমান দুটি শট লক্ষ্যে রাখতে পারে আলাভেসও; তবে প্রতিপক্ষকে পরীক্ষায় ফেলার মতো উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেনি তারাও।

দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে মুহূর্তের ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার সহজ সুযোগ নষ্ট হয় রিয়ালের। ভিনিসিউসের শট গোলরক্ষক পা দিয়ে ঠেকানোর পর বল চলে যায় ডি-বক্সের মুখে বেনজেমার পায়ে। তবে তার শট গোললাইনে ঠেকিয়ে দেন ডিফেন্ডার ফ্লোরিয়ান।

৬১তম মিনিটে নিজেদের ভুলে বিপদে পড়তে বসেছিল রিয়াল। আসেনসিওর দুর্বল ব্যাকপাস ধরে গোলমুখ থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন পেরে পন্স।

এর দু্ই মিনিট পরই একক নৈপুণ্যে দলকে এগিয়ে নেন আসেনসিও। বেনজেমার পাস পেয়ে প্রায় ২২ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত শটে দূরের পোস্টের ওপরের কোণা দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।

৭৬তম মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোল পাননি বেনজেমা। ভিনিসিউসের কাটব্যাক ফাঁকায় পেয়ে ফরাসি ফরোয়ার্ডের নেওয়া শট লাগে পোস্টে।

আক্রমণত্রয়ীর দারুণ বোঝাপড়ায় চার মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করে রিয়াল। ডি-বক্সে ছোট্ট টোকায় বাঁ দিকে আসেনসিওকে বল বাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যান বেনজেমা। পরমুহূর্তে সতীর্থের নজরকাড়া ব্যাকহিলে বল পেয়ে ছয় গজ বক্সের মুখে কাটব্যাক করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। আর ঠাণ্ডা মাথায় প্লেসিং শটে বল জালে পাঠান ভিনিসিউস।

আসরে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের এটা ১৩তম গোল।

রিয়াল তৃতীয় গোলটি পায় যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে। রদ্রিগো ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে ১৮তম গোলটি করেন আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা।

২৫ ম্যাচে ১৭ জয় ও ৬ ড্রয়ে রিয়ালের পয়েন্ট ৫৭। ৭ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে আছে এক ম্যাচ কম খেলা সেভিয়া।