দুই বছর পরপর বিশ্বকাপের বিপক্ষে ৭৫ শতাংশ ফুটবলার

চার বছরের ব‍্যবধান ঘুচিয়ে দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজনের চেষ্টা করে যাচ্ছে ফিফা। বিভিন্ন সময় এর পক্ষে-বিপক্ষে মত দিয়েছেন অনেকে। সম্প্রতি ফিফপ্রোর প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, অধিকাংশ খেলোয়াড়ই ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থার প্রস্তাবের বিপক্ষে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2022, 04:20 PM
Updated : 15 Feb 2022, 04:20 PM

নিজেদের ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার বিষয়টি তুলে ধরেছে ফিফপ্রো। সেখানে বলা হয়েছে, পেশাদার ফুটবলারদের ৭৫ শতাংশ মনে করেন, বৈশ্বিক আসরটি চার বছর পরপরই হওয়া উচিত।

ইউরোপ এবং এশিয়ার ৭৭ শতাংশ খেলোয়াড় চার বছর পরপর বিশ্বকাপ খেলার পক্ষে, আমেরিকার খেলোয়াড়দের মধ্যে সেটা নেমে এসেছে ৬৩ শতাংশে। আফ্রিকার ৪৯ শতাংশ খেলোয়াড় এর পক্ষে মত দিয়েছেন। বাকি ৪৯ শতাংশ বিভক্ত দুই বা তিন বছরের চক্রে বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনায়।

দুই বিশ্বকাপের ব‍্যবধান দুই বছরে নামিয়ে আনার প্রস্তাবের পক্ষে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু দেশ মতামত দিয়েছে। তবে ফুটবলার, কোচ, সাবেক খেলোয়াড় থেকে শুরু করে বেশ কিছু কনফেডারেশন, বিশেষ করে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল সংস্থা কড়া বিরোধিতা করেছে। তাদের শঙ্কা, ঘন ঘন আয়োজনে আবেদন হারাবে প্রতিযোগিতাটি।

আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিও (আইওসি) সম্প্রতি জানিয়েছে, দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজনের বিপক্ষে তারা।

তবে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এবং সাবেক আর্সেনাল কোচ ও ফিফার হেড অব ফুটবল ডেভেলপমেন্ট আর্সেন ভেঙ্গার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিতভাবেই দুই বছর অন্তর বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে কথা বলছেন। তুলে ধরছেন এর সুযোগ-সুবিধা এবং বিশ্ব ফুটবলে এর সম্ভাব্য ইতিবাচক প্রভাবের দিকটি।

ফিফপ্রো ও জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ইউনিয়ন আয়োজিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, চারজনের মধ্যে তিনজন পেশাদার পুরুষ ফুটবলারই দুই বছর বিরতিতে বিশ্বকাপের বিপক্ষে। ছয়টি মহাদেশের এবং ৭০টি দেশের এক হাজারেরও বেশি ফুটবলার জরিপে অংশ নিয়েছিলেন।

মহামারীর জন্য ২০২০ সালে কয়েক মাস বন্ধ ছিল ইউরোপের শীর্ষ লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও জাতীয় দলের বিভিন্ন প্রতিযোগিতার ম্যাচও। সেই ঘাটতি পূরণে এর পর থেকে খেলোয়াড়দের যেতে হচ্ছে ঠাসা সূচির মধ্য দিয়ে। এছাড়াও রয়েছে নেশন্স লিগ ও আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের ধকল।

যদিও নেশন্স লিগ নিয়ে বলা হয়েছিল, ‘প্রীতি ম্যাচগুলোকে অর্থপূর্ণ করতে এই আয়োজন। বাস্তব চিত্রটা অবশ্য একেবারেই ভিন্ন। ওই প্রতিযোগিতার বাইরেও প্রীতি ম‍্যাচ থাকায় বিভিন্ন সময় এসব নিয়ে সরব হয়েছেন ইউরোপের ফুটবলাররা।

টানা খেলে যাওয়ায় বাড়ছে চোটের সংখ‍্যা। এর সঙ্গে যদি যোগ হয় দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ, নিশ্চিতভাবেই তা খেলোয়াড়দের আরও চাপে ফেলে দেবে।

এভাবে খেলতে খেলতে হাঁপিয়ে ওঠা রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার টনি ক্রুস গত নভেম্বরে ফিফার পাশাপাশি উয়েফাকেও এক হাত নেন। জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী তারকা বলেন, ফুটবল কর্তৃপক্ষের কাছে খেলোয়াড়রা স্রেফ ‘পুতুল।’

ফিফপ্রো বিবৃতিতে বলেছে, “বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই বিশ্বকাপ এবং নিজস্ব ঘরোয়া লিগকে তাদের প্রিয় প্রতিযোগিতা হিসেবে প্রাধান্য দেয়। মাত্র ২১ শতাংশ খেলোয়াড় বিশ্বাস করেন, খেলোয়াড়দের ভাবনাকে সম্মান করা হয় এবং আন্তর্জাতিক ফুটবল চালানোর প্রেক্ষাপটে তাদের মঙ্গলের দিকটি বিবেচনা করা হয়।”