দুটি করে আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলতে পারবেন না এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া, এমিলিয়ানো মার্তিনেস, জিওভানি লো সেলসো ও ক্রিস্তিয়ান রোমেরো।
একই সঙ্গে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে জরিমানাও করা হয়েছে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর সাও পাওলোর করিন্থিয়ান্স অ্যারেনায় বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি লড়াইটি নির্ধারিত সময়েই শুরু হয়। কিন্তু পাঁচ মিনিট পরই এই চার ফুটবলারের কোয়ারেন্টিন ভাঙার অভিযোগে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য বিভাগের হস্তক্ষেপে ম্যাচটি স্থগিত হয়ে যায়।
পরে এই ম্যাচ নিয়ে তদন্তের ঘোষণা দেয় ফিফা। তদন্ত শেষে সোমবার রাতে ম্যাচটি পুনরায় আয়োজনের সিদ্ধান্ত জানায় সংস্থাটি। তবে এর ভেন্যু ও সূচি এখনও জানানো হয়নি।
সেই ম্যাচের আগেই আর্জেন্টিনার মার্তিনেস, বুয়েন্দিয়া, লো সেলসো ও রোমেরো কোয়ারেন্টিনের নিয়ম ভেঙেছে বলে গণমাধ্যমে খবর আসে। ম্যাচটি শুরুর ঘণ্টাখানেক আগেও সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, ওই চার জনকে হোটেলে আইসোলেশনে থাকতে বলেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তবে আর্জেন্টিনার একাদশে ছিলেন তাদের তিন জন- গোলরক্ষক মার্তিনেস, ডিফেন্ডার রোমেরো ও মিডফিল্ডার লো সেলসো। বুয়েন্দিয়া ছিলেন বেঞ্চে। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে মাঠে প্রবেশ করেন স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তাদের অভিযোগের পর মাঠ ছেড়ে ড্রেসিং রুমে চলে যায় আর্জেন্টিনা দল।
ব্রাজিলিয়ান হেলথ রেগুলেটরি এজেন্সি (আনভিসা) জানিয়েছিল, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অ-ব্রাজিলিয়ানদের জন্য ব্রিটেন, উত্তর আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা বা ভারত থেকে ব্রাজিলে প্রবেশ নিষিদ্ধ। যাদের ছাড় দেওয়া হয়েছে, তাদের অবশ্যই (ব্রাজিলে) আসার সময় কর্তৃপক্ষকে অবগত করতে হবে এবং ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
তাদের দাবি, আর্জেন্টিনার চার খেলোয়াড় ব্রিটেনে থাকলেও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বলেছিলেন, ১৪ দিনের মধ্যে ওই অঞ্চলে তারা ছিলেন না।
নিয়ম ভাঙার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আর্জেন্টিনার কর্মকর্তারা বলেন, গত জুন-জুলাইয়ে ব্রাজিলে হয়ে যাওয়া কোপা আমেরিকায় যে প্রটোকল অনুসরণ করা হয়েছিল এবারও সেটাই হচ্ছে বলে মনে করেছিলেন তারা। সেবারের মতো এবারও বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অংশ নিতে খেলোয়াড়দের অন্য মহাদেশ থেকে আসতে দেওয়া হবে।
ম্যাচ ঠিকঠাকভাবে শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে না পারায় দুই ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনেরই দোষ দেখছে ফিফা।
“ফিফার ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখেছে, ম্যাচ বাতিল হয়ে যাওয়ার পেছনে সংশ্লিষ্টদর বেশ কিছু ঘাটতি রয়েছে। ম্যাচটি আবার হতে হবে এবং সেটি ফিফার ঠিক করে দেওয়া তারিখ ও ভেন্যু অনুযায়ী।”
ব্রাজিলিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে ৫ লাখ সুইস ফ্রাঁ ও আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে ২ লাখ সুইস ফাঁ জরিমানা করা হয়েছে।
ফিফার এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে দুই দেশের বোর্ড। ফিফার কাছে চার ফুটবলারকে শাস্তি দেওয়ার পেছনের আইনি ভিত্তি জানতে চেয়েছে আর্জেন্টিনা। সেটি পাওয়ার পর আপিল করবে তারা। কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ব্রাজিল।
দুই দলই অপরাজিত থেকে এরই মধ্য ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করেছে। এই ম্যাচসহ দুই দলের তিনটি করে ম্যাচ বাকি আছে।
সূচি অনুযায়ী শেষ রাউন্ডের ম্যাচগুলো হবে মার্চের শেষ দিকে। এরপর হতে পারে স্থগিত থাকা সেই ম্যাচ। শীর্ষে থাকা ব্রাজিল থেকে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে দুই নম্বরে রয়েছে আর্জেন্টিনা।