টঙ্গীর শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে রোববার ৩-০ গোলে জিতেছে আবাহনী। পুলিশ এফসির বিপক্ষে ১-১ ড্রয়ের পর জয়ে ফিরল মারিও লেমোসের দল।
পুরান ঢাকার দলটির ওপর আধিপত্য ধরে রাখল আবাহনী। গত লিগে প্রথম পর্বে ১-০ গোলে জয়ের পর ফিরতি লেগে তারা জিতেছিল ৬-০ ব্যবধানে। সবশেষ দেখায় রহমতগঞ্জকেই ২-১ গোলে হারিয়ে ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতেছিল আকাশী-নীল জার্সিধারীরা।
এ ম্যাচের শুরুতে অবশ্য আবাহনী নয়, আক্রমণে আধিপত্য ছিল রহমতগঞ্জেরই। দশম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে সানোয়ার হোসেনের শট ক্রসবারে লেগে ফেরে। ২১তম মিনিটে সিওভুস আসরোরভের ফ্রি কিক ফিরিয়ে আবাহনীর ত্রাতা গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল।
পরের মিনিটে আবারও আবাহনীর রক্ষণে হানা দেয় রহমতগঞ্জ। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে ফিলিপ আজাহর জোরাল কোনাকুনি শট দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়। ২৯তম মিনিটে আক্রমণ ঠেকাতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা শহীদুলের ওপর দিয়ে চিপ করেছিলেন আজাহ, কিন্তু বল পোষ্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
শুরুর মলিনতা ঝেড়ে ফেলে প্রথমার্ধের শেষ দিকে চেনা রূপে দেখা যায় লিগের রেকর্ড ছয়বারের চ্যাম্পিয়নদের। ৩৯তম মিনিটে সুশান্ত ত্রিপুরার থ্রো ইনে দোরিয়েলতনের হেড পাসে নাবীব নেওয়াজ জীবনের হেড লাফিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান গোলরক্ষক রাকিবুল হাসান তুষার।
৪০ থেকে যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিট পর্যন্ত তুষারের উপর দিয়ে গোলের ঝড় বয়ে যায়। দেনিয়েল কলিনদ্রেস সোলেরার কর্নারে দোরিয়েলতনের হেড দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ায়। সেখানে পাহারায় ছিলেন ওয়ালী ফয়সাল, কিন্তু বল পায়ের ফাঁক দিয়ে চলে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায় এই অভিজ্ঞ ডিফেন্ডারকে।
তিন মিনিট পর আবারও কলিনদ্রেস-দোরিয়েলতন জাদু। কোস্টা রিকার ফরোয়ার্ডের থ্রু পাস ধরে এক ছুটে বক্সে ঢুকে গায়ের সঙ্গে সেঁটে থাকা এক ডিফেন্ডার ও আগুয়ান গোলরক্ষকের ফাঁক দিয়ে কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন দোরিয়েলতন।
এরপর ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ঠাণ্ডা মাথার শটে। নুরুল নাইম ফয়সালের পাস ধরে আক্রমণে ওঠা দোরিয়েলতনকে আটকাতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন তুষার। বুদ্ধিদ্বীপ্ত টোকায় তাকে কাটিয়ে ফাঁকা পোস্টে হ্যাটট্রিক পূরণের আনন্দে মাতেন ৩১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। জার্সি খুলে দেখেন হলুদ কার্ডও।
চলতি লিগে দোরিয়েলতনের গোল হলো ৫টি। সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় তার পরেই আছেন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড চিনেডু ম্যাথিউ (৩টি)।
দ্বিতীয়ার্ধেও ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল আবাহনী, কিন্তু গোল মেলেনি। ৫৯তম মিনিটে দলটির মিডফিল্ডার আবু সাইদের শট ক্রসবার কাঁপায়।
রহমতগঞ্জ ম্যাচে ফেরার সুবর্ণ সুযোগ পায় ৭২তম মিনিটে। সানডে চিজোবাকে বক্সে সুশান্ত ফাউল করলে পেনাল্টি পায় তারা। কিন্তু গতিহীন শটে শহীদুলের হাতে বল তুলে দিয়ে হতাশা বাড়ান নাইজেরিয়ার এই ফরোয়ার্ড।
৭৫তম মিনিটে দোরিয়েলতনের শট লক্ষ্যে থাকেনি। ফয়সালের দূরপাল্লার শট আটকান রহমতগঞ্জ গোলরক্ষক। এরপর জীবনের পাস ধরে বক্সে ঢুকে ভারসাম্য হারিয়ে ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি কলিনদ্রেস। বল চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।
দিনের আরেক ম্যাচে, মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে: মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে দিনের অপর ম্যাচে সাইফ স্পোর্টিংকে ১-০ গোলে হারায় শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। ৩৯তম মিনিটে আইজার আখমেদভের স্পট কিক থেকে ব্যবধান গড়ে দেন।
তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট আবাহনীর। তাদের সমান পয়েন্ট শেখ জামালেরও। ৫ পয়েন্ট শেখ রাসেলের। প্রথম হারের স্বাদ পেলেও ৬ পয়েন্ট নিয়ে তাদের উপরে আছে সাইফ স্পোর্টিং।