টঙ্গীতে লিগ আয়োজন নিয়ে বাফুফেকে ধুয়ে দিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী

টঙ্গীর শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে প্রিমিয়ার লিগের খেলা আয়োজন নিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) সমালোচনা করেছিল আর্চারি ফেডারেশন। একই ইস্যুতে এবার দেশের ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থাটিকে এক হাত নিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। পারস্পরিক সমঝোতা ছাড়া টঙ্গীতে লিগ আয়োজন করে বাফুফে ‘ঠিক কাজ করেনি’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2022, 02:08 PM
Updated : 7 Feb 2022, 02:08 PM

টঙ্গীর এ মাঠেই বছর জুড়ে চলে আর্চারির প্রস্তুতি। এশিয়ান গেমস, এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের মতো প্রতিযোগিতা সামনে রেখে যথারীতি প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন রোমান সানা, দিয়া সিদ্দিকীরা। কিন্তু হঠাৎ করে এ মাঠে লিগের খেলা শুরু হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে আর্চারদের অনুশীলন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন আর্চারি দলের কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ। বাফুফের কর্মকাণ্ডকে ‘বাজে রসিকতা’ বলে মন্তব্য করেছিলেন এই জার্মান কোচ।

শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার টার্গেটবল প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করতে এসে সোমবার এ ইস্যুতে কথা বলেন রাসেল। দুটি ভেন্যুতেই যদি প্রিমিয়ার লিগ হবে, তাহলে সারাদেশে এত স্টেডিয়াম করার অর্থ কি, সে প্রশ্ন রাখেন তিনি।

“বিশেষ করে ফুটবল ফেডারেশন ও আর্চারির মধ্যে যে ঝামেলাটি তৈরি হয়েছে, সেটা হওয়ার কথা নয়। গতবার আমরা যখন ফুটবলকে খেলার অনুমোদন দিয়েছিলাম শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে, তখন বলা হয়েছিল আর্চারি যেহেতু এটা ব্যবহার করছে, আর্চারির সঙ্গে আলোচনা করে তারপর সেটা ব্যবহার করবেন। আর্চারি যদি মনে করে আপনারা ব্যবহার করতে পারবেন, তাহলে পারবেন, নইলে আপনাদের অন্যত্র যেতে হবে। সেটা কিন্তু লেখাও ছিল।”

“কিন্তু গতবারও তারা (বাফুফে) সেটা করেনি। আর এইবার দেখলাম যে বিষয়টা আরও ভয়াবহ। সাতটি ভেন্যুতে ফুটবল খেলার কথা ছিল, কিন্তু সেটিতে না গিয়ে পরবর্তীতে চারটিতে নেমে আসে। চারটি থেকে কমতে কমতে দুটিতে আসল। আমার কথা হচ্ছে, সারা বাংলাদেশে যে তাহলে আমরা এত স্টেডিয়াম করেছি, সেটা কাদের জন্য করছি। কারা ব্যবহার করবে? কে খেলবে এ সব স্টেডিয়ামে? এসব মাঠে যদি খেলাগুলোকে না নিয়ে যাওয়া হয়, আমরা যে সরকারিভাবে কোটি কোটি টাকা খরচ করে স্থাপনাগুলো তৈরি করছি, এগুলো তো পুরোটাই বিফলে যাবে।”

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৮৬তম স্থানে থাকা বাংলাদেশ ফুটবল দলের নিকট অতীতে নেই কোনো সাফল্যের গল্প। সেখানে আর্চারির হাত ধরে প্রায়ই পদক পাচ্ছে বাংলাদেশ। সবশেষ এসএ গেমসে এই ইভেন্ট থেকে ১০টি সোনা জেতে রোমান-ইতিরা। তাদের প্রস্তুতি বন্ধ করে লিগ আয়োজন ‘জবরদস্তিমূলক’ বলে মনে করেন রাসেল।

“ফুটবল-আর্চারির মধ্যে যে ঝামেলাটি তৈরি হয়েছে, সেটা কারও কাছে কাম্য ছিল না। চিঠিতে উল্লেখ ছিল আলোচনা করে করবেন। সেটা না করে একপ্রকার জবরদখলের মতো হয়েছে, যে কাজটা সঠিক হয়নি। কারণ আপনারা জানেন বাংলাদেশের যে কয়েকটি খেলা আন্তর্জাতিকভাবে খুব ভাল করছে, তাদের অন্যতম আর্চারি। অবশ্যই এটিকে আমরা ভালোভাবে দেখিনি। ভবিষ্যতে এরকম কর্মকাণ্ড দেখলে তাদের অনুমোদন দেওয়াটাও আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে।”

“দু'পক্ষের সঙ্গে বারবার কথা হয়েছে আমার। শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে কিন্তু এ ধরনের লিগ করার মতো সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা নেই। ফুটবলের মতো বড় একটা খেলার জন্য সেখানে ড্রেসিং রুম নেই, সাংবাদিকদের বসার স্থান নেই, সব ধরনের সুযোগ সুবিধা নেই। ভবিষ্যতে হয়তো সুযোগ সুবিধা আমরা করে দিব, যদি অন্যান্য খেলা আয়োজন করতে চাই। তবে যেহেতু এটা আর্চারিকে দেওয়া হয়েছে, এই মাঠে আর্চারিকেই সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হবে।”

টঙ্গীর শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়াম ও মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে: মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে লিগ আয়োজন করছে বাফুফে। তবে টঙ্গীর ভেন্যু নিয়ে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান বাফুফেকেই খুঁজতে বললেন রাসেল।

“২০ (ফেব্রুয়ারি) তারিখের পর প্রতি সপ্তাহে একটি করে ফুটবল ম্যাচ, যেভাবে গত বছর হয়েছিল, তাতে কারোরই সেভাবে সমস্যা হয়নি…আমি বাফুফেকে বলেছি এটা সমাধান করেন। সামনে আমাদের কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়ান গেমস, ইসলামি সলিডারিটি গেমস আছে। এ অবস্থায় আর্চারির অনুশীলন যাতে কোনোভাবেই ব্যাঘাত না ঘটে।”