বুরকিনা ফাসোকে হারিয়ে ফাইনালে সেনেগাল

শক্তি-সামর্থ্যে পিছিয়ে থাকা বুরকিনা ফাসো অনেকটা সময় প্রতিপক্ষকে আটকে রাখল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আর পারল না তারা। প্রত্যাশিত জয়ে আফ্রিকান নেশন্স কাপের ফাইনালে উঠল সেনেগাল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2022, 09:03 PM
Updated : 2 Feb 2022, 09:24 PM

প্রথম সেমি-ফাইনালে বুধবার রাতে ৩-১ গোলে জিতেছে সেনেগাল। ম্যাচের সবকটি গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে, ১৭ মিনিটের মধ্যে।

ঘটনাবহুল প্রথমার্ধের পর ৭০তম মিনিটে সেনেগালকে এগিয়ে নেন আবদু দিয়ালো। ইদ্রিসা গেয়ি ব্যবধান দ্বিগুণ করার পর একটি শোধ করেন ব্লাতি তুরে। এর একটু পরই ব্যবধান আবার বাড়িয়ে জয় নিশ্চিত করেন সাদিও মানে।

টুর্নামেন্টের ইতিহাসে টানা দ্বিতীয় ও মোট তৃতীয়বার ফাইনালে উঠল সেনেগাল।

ম্যাচের শুরু থেকে দুই দল আক্রমণাত্মক ফুটবল খেললেও প্রথমার্ধে খুব বেশি নিশ্চিত সুযোগ তৈরি হয়নি। তারকা ফরোয়ার্ড সাদিও মানে প্রথম ২০ মিনিটে কয়েকবার বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে উঠলেও তেমন ভীতি ছড়াতে পারেননি।

তবে এই সময়ে ঘটনার কমতি ছিল না। নাটকীয়তা জাগে ২৯তম মিনিটে। সতীর্থের ক্রস ডি-বক্সে পেয়ে হেড করতে লাফ দেন সেনেগালের সেইতু কুইয়াতে। আগেই পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা বুরকিনা গোলরক্ষক এর্ভে কফি ঠিক একই সময়ে লাফ দেন। প্রতিপক্ষকেও দুর্ঘটনাবশত আঘাত করে বসেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজে, যদিও পরে ভিএআরের সাহায্যে সিদ্ধান্ত বদল করেন রেফারি।

পেনাল্টির সিদ্ধান্ত পাল্টালেও ওই ঘটনায় বড় ধাক্কা ঠিকই খায় বুরকিনা। বেকায়দায় পড়ে গিয়ে চোট পাওয়া কফি মাঠ ছাড়েন স্ট্রেচারে করে।

৩৯তম মিনিটে ম্যাচে প্রথম ও সেরা সুযোগটি পায় বুরকিনা। ছয় গজ বক্সের বাঁ দিক থেকে মিডফিল্ডার বনদের কাছের পোস্টে নেওয়া শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান গোলরক্ষক এদুয়াঁ মঁদি।

প্রথমার্ধের ছয় মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ দিকে আবারও সেনেগালের পক্ষে পেনাল্টির বাঁশি বাজে। ডি-বক্সে বুরকিনার ডিফেন্ডার তাপসোবার হাতে বল লাগার অভিযোগে তাকে হলুদ কার্ডও দেখান রেফারি। অবশ্য এই দফায়ও ভিএআরে দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টান তিনি।

দুই সেন্টার-ব্যাকের অবদানে ৭০তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যায় সেনেগাল। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল বুরকিনার রক্ষণ ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে ওভারহেড কিক নেন কালিদু কলিবালি। বল ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে নিচু শটে বাকি কাজ সারেন আবদু দিয়ালো।

ছয় মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনেগাল। বাঁ দিক দিয়ে একজনকে কাটিয়ে ডি-বক্সে বাইলাইন ধরে এগিয়ে যান মানে। তাকে আটকাতে এগিয়ে যান গোলরক্ষক। সুযোগ বুঝে কাটব্যাক করেন লিভারপুল ফরোয়ার্ড। ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে নিচু শটে ফাঁকা জালে বল পাঠান পিএসজি মিডফিল্ডার গেয়ি।

৮২তম মিনিটে তুরে হাঁটু দিয়ে গোল করে নাটকীয়তার আভাস দেন। তবে পাঁচ মিনিট পরই সব উত্তেজনায় পানি ঢেলে দেন মানে।

দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে সবাইকে পেছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন মানে। দেশের হয়ে এটা তার ২৯তম গোল, স্পর্শ করলেন দেশের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। সমান গোল নিয়ে আগে থেকে তালিকার চূড়ায় আছেন সাবেক স্ট্রাইকার হেনরি কামারা।

২০০২ আসরে প্রতিযোগিতাটিতে প্রথম ফাইনালে উঠেছিল সেনেগাল। এরপর গত আসরে আবার ফাইনালে উঠলে আলজেরিয়ার কাছে হেরে শিরোপা স্বপ্ন ভাঙে তাদের।

তৃতীয়বারে কি তারা পাবে শিরোপার স্বাদ? জবাব মিলবে আগামী রোববারের ফাইনালে। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ক্যামেরুন কিংবা মিশর। দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে বৃহস্পতিবার মুখোমুখি হবে দল দুটি।