আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সে সোমবার স্বাগতিক ক্যামেরুনের বিপক্ষে কমোরোসের শেষ ষোলোর ম্যাচ শুরুর আগে স্টেডিয়ামে ভিড়ের চাপে অন্তত আট জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় ৩৮ জন।
করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধের কারণে স্টেডিয়ামে ৮০ শতাংশের বেশি দর্শক ঢোকার অনুমতি ছিল না। ৬০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে হাজির হয় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। স্টেডিয়ামে ঢোকার সময় পদদলিত হয়ে হতাহতের ঘটনাটি ঘটে।
আফ্রিকার স্টেডিয়ামে এই ধরনের ঘটনা নিয়মিত হলেও মহাদেশটির সবচেয়ে বড় ফুটবল টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো ঘটল। যা আফ্রিকার ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার জন্য বড় ধাক্কা হয়েই এসেছে।
ওই ঘটনার এক বছর আগে একই কাজ করে জিম্বাবুয়ে পুলিশ। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে জিম্বাবুয়ে দল প্রতিবেশী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরে যাওয়ার সময় সমর্থকরা মাঠে বস্তু নিক্ষেপ করার প্রতিক্রিয়ায় পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে টিয়ার গ্যাস ছুড়েছিল।
তদন্তে দেখা যায়, ন্যাশনাল স্পোর্টস স্টেডিয়ামের ওই ঘটনায় ১৩ জনের মৃত্যুর কারণ ছিল পুলিশ, কিন্তু কাউকে শাস্তি দেওয়া হয়নি।
দেশটিতে ২০১৯ সালে জিম্বাবুয়ে ও কঙ্গোর মধ্যে আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সের বাছাইপর্বের ম্যাচের আগে স্টেডিয়ামে পদদলিত হওয়ার আরেকটি ঘটনা ঘটে। যেখানে মারা যায় একজন দর্শক।
২০১২ সালে মিশরের পোর্ট সাইদ স্টেডিয়ামে সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৭৪ জনের মৃত্যু হয়। স্বাগতিক আল মাসরি ও আল আহলির ম্যাচের পর ঘটেছিল এই ঘটনা।
ওই সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিল, আল আহলি ম্যাচটি ৩-১ গোলে জেতার পর দলটির সমর্থকরা আল মাসরি দলকে ব্যাঙ্গ করে লেখা ব্যানার তুলে ধরলে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়।
আতঙ্কিত দর্শক স্টেডিয়ামের ফটক দিয়ে হুড়মুড় করে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টার সময়েই সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটে।
একটি সংসদীয় তদন্ত কমিটি মৃত্যুর ঘটনার জন্য সমর্থক এবং পুলিশকে দায়ী করে এবং পোর্ট সাইদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রধান ও মিশরীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ডকে বরখাস্ত করা হয়।
ওই ঘটনার পর থেকে মিশরে ম্যাচগুলোতে দর্শকদের উপস্থিতি সীমাবদ্ধ ছিল।
বেশিরভাগ দুর্ঘটনার মূল কারণ পুলিশের দুর্বল ভূমিকা এবং দর্শকদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা। তবে এখানে দুর্নীতির বিষয়ও আছে।
একটি তদন্তে দেখা গেছে, ২০০১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় দুই ক্লাব কাইজার চিফস ও অরল্যান্ডো পাইরেটসের ডার্বি ম্যাচে টিকেট ছাড়াই স্টেডিয়ামে ঢোকার জন্য দর্শকরা জোহানেসবার্গের এলিস পার্কের গেটরক্ষকদের (গেটকিপার) ঘুষ দিয়েছিল।
আগেই পূর্ণ হয়ে যাওয়া স্টেডিয়ামে ঢুকে পড়ে হাজার হাজার বাড়তি দর্শক। স্টেডিয়ামে ঢোকার মুখে ধাক্কাধাক্কিতে মারা যায় ৪৩ জন।