অস্ট্রেলিয়ায় জোকোভিচের ভিসা ফের বাতিল

অস্ট্রেলিয়া সরকার দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বের শীর্ষ টেনিস তারকা নোভাক জোকোভিচের ভিসা বাতিল করেছে, যিনি করোনাভাইরাসের টিকা না নিয়েও আদালতের রায়ে অষ্ট্রেলিয়া ওপেন খেলার জন্য সেখানে অবস্থান করার সুযোগ পেয়েছিলেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2022, 07:24 AM
Updated : 14 Jan 2022, 08:46 AM

বিবিসি জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন মন্ত্রী অ্যালেক্স হকের এই সিদ্ধান্তের ফলে জোকোভিচকে এখন অস্ট্রেলিয়া থেকে ফেরত পাঠানো হবে।

অবশ্য ৩৪ বছর বয়সী এই সার্বিয়ান ক্রীড়াবিদ অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানের অনুমতির জন্য আবারও আদালতে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। সোমবার শুরু হতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে তার।

জোকোভিচের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন মন্ত্রী অ্যালেক্স হক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জনস্বার্থ’ বিবেচনা করে তিনি তার নির্বাহী ক্ষমতার প্রয়োগ করেছেন।   

বিবিসি লিখেছে, জোকোভিচকে ফেরত পাঠানো হলে আগামী তিন বছরের জন্য অস্ট্রেলিয়ার দুয়ার তার জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অবশ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেরও সুযোগ আছে।

নয়বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ী জোকোভিচ মুকুট রক্ষার লক্ষ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার টুর্নামেন্টের ড্রতে অংশ নেন। সেই লক্ষ্য পূরণ হলে তিনি হবেন ২১টি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী প্রথম পুরুষ টেনিস খেলোয়াড়।  

অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের জন্য এখন কোভিড টিকা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও ১৭ জানুয়ারি থেকে অনুষ্ঠেয় অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলার সুযোগ দিতে সার্বিয়ার খেলোয়াড় জোকোভিচের ক্ষেত্রে ওই শর্ত শিথিল করে ভিসা দেওয়া হয়েছিল। টিকা না নিয়েও জোকোভিচের ভিসা পাওয়ার সেই খবরে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার স্কট মরিসনের সরকার।

এরপর গত ৬ জানুয়ারি জোকোভিচ মেলবোর্নের টুলামারিন বিমানবন্দরে নামার পর তাকে আটকে দেওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা বসিয়ে রেখে অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, টিকার শর্ত শিথিলের কোনো প্রমাণ জোকোভিচ দেখাতে পারেননি, সুতরাং ভিসা বাতিল করে তাকে ফেরত পাঠানো হবে।   

পরে বিমানবন্দর থেকে জোকেভিচকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি হোটেলে রাখা হয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের হেফাজতে। ফেরত পাঠানো এড়াতে অস্ট্রেলিয়ার হাই কোর্টে আবেদন করেন জোকোভিচ।

সেই আবেদনের শুনানি করে ১০ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার একটি আদালত জোকোভিচকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ভিসা বাতিল করে তাকে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের হেফাজতে আটক রাখার ‘যৌক্তিকতা খুঁজে পায়া যায়নি’ জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করারও অনুমতি দেয় আদালত।

আদালতে জয় পেলেও জোকোভিচের পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হওয়ার সুযোগ ছিল না, কারণ অভিবাসন মন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতায় ফের তার ভিসা বাতিলের সুযোগ ছিল। শুক্রকার সে কাজটিই করেছেন অ্যালেক্স হক।

দেশটির অভিবাসন আইন অনুযায়ী, ‘স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও সামাজিক শৃঙ্খলার’ ক্ষেত্রে কাউকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন অভিবাসন মন্ত্রী। তবে এর বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ রয়েছে।

জোকোভিচের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণের সময় তিনি ঘোষণাপত্রে ‘মিথ্যা তথ্য’ দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছিল, অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার আগের ১৪ দিন তিনি কোথাও ভ্রমণ করেননি। অথচ জোকোভিচ তখন স্পেনে ছিলেন।

বিষয়টি স্বীকার করে জোকোভিচ একে দেখাতে চাইছেন ‘মানবিক ভুল’ হিসেবে। তার দাবি, ফরম পূরণের সময় ভুলটি করেন তার এক এজেন্ট, এটি ইচ্ছাকৃত কিছু নয়।

এ ছাড়া কোভিড পজিটিভ হওয়ার পরও এক সাংবাদিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং ফটোশুটে অংশ নেওয়ার কথাও স্বীকার করেছেন শীর্ষ এই টেনিস তারকা।

পুরনো খবর