আবাহনীর দ্বাদশ নাকি রহমতগঞ্জের প্রথম

এক মৌসুম আগে সম্ভাবনা উঁকি দিয়েছিল প্রথমবারের মতো। কিন্তু বসুন্ধরা কিংসের কাছে হেরে স্বপ্ন ভেঙেছিল রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটির। নতুন করে আবার জেগেছে আশা। এবার তাদের প্রতিপক্ষ ফেডারেশন কাপের রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেড। আকাশী-নীলরাও মুখিয়ে রেকর্ডটাকে আরেকটু উচুঁতে তুলতে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Jan 2022, 12:36 PM
Updated : 8 Jan 2022, 12:36 PM

কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে রোববার বেলা সাড়ে ৫টায় মুখোমুখি হবে দুই দল।

গ্রুপপর্ব পেরুনোর পর আবাহনীর তুলনায় একটু কঠিন পথই পাড়ি দিতে হয়েছে রহমতগঞ্জকে। কোয়ার্টার-ফাইনালে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে এবং সেমি-ফাইনালে প্রতিযোগিতার ১০বারের চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানকে হারিয়েছে তারা। ফাইনাল সামনে রেখে দলটির কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানীও টানলেন ওই প্রসঙ্গ।

“যে তিনটা ম্যাচ খেলে আমরা ফাইনালে এসেছি, তিনটি দেশের কঠিন প্রতিপক্ষ। এখন আমাদের প্রতিপক্ষ আবাহনী। যে ক্লাব দেশের সবচেয়ে…ছেলেবেলায় আবাহনী-মোহামেডান খেলা দেখতাম। বাংলাদেশের ফুটবল বলতে আবাহনী-মোহামেডান; এখন তো অনেক করপোরেট দল এসেছে। আবাহনী অনেক ভালো দল, তারা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য খেলে। আমরা চেষ্টা করব, ভালো একটা খেলা উপহার দিয়ে ট্রফি আদায় করা যায় কিনা।”

কোচের মতো রহমতগঞ্জ অধিনায়ক মাহমুদুল হাসান কিরণও ফেভারিট হিসেবে এগিয়ে রাখলেন প্রতিপক্ষকে। কিন্ত পথের শেষপ্রান্তে দাঁড়িয়ে তিনিও জানালেন ইতিহাস লেখার আশাবাদ।

“আবাহনী আমাদের কাছে ফেভারিট। যেহেতু ফাইনাল ম্যাচ ভিন্ন ম্যাচ, ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে এসে…আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। আবাহনীর শক্তি-দুর্বলতা নিয়ে কাজ করছি। জমজমাট লড়াই দেখতে পারবেন ইনশাল্লাহ। আমাদের রিবাউন্ড মেন্টালিটি আছে..আমরা দ্রুত কামব্যাক করতে পারি। সবাই ইতিহাসের অংশ হতে চাই।”

ইতিহাস আবাহনীর পক্ষে। আবার চোখ রাঙানিও আছে কিছুটা। ২০১৯-২০ মৌসুমের ফেডারেশন কাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে রহমতগঞ্জের কাছেই হেরে ছিটকে গিয়েছিল তারা। ফাইনাল সামনে রেখে কোচ মারিও লেমোসও জানিয়েছেন তিক্ত সে স্মৃতি না ভোলার কথা।

“রহমতগঞ্জের কাছে হারটি আমার মনে আছে। আমি এগুলো ভুলি না। তাদের প্রতি আমার যথেষ্ট শ্রদ্ধা আছে। (সৈয়দ গোলাম) জিলানীকে আমি ভীষণ শ্রদ্ধা করি। আমি মনে করি, সে চমৎকার একজন কোচ। সানডে (চিজোবা) আমাদের সঙ্গে ছিল, ওয়ালী ফয়সালও ছিল। তারা চমৎকার খেলোয়াড়। সানডে দারুণ গোল স্কোরার। নিশ্চিতভাবে আগামীকাল সে তার সেরা ফুটবল খেলবে। তাকে জায়গা দেওয়া যাবে না।”

লেমোসের দুর্ভাবনা আরও বাড়িয়েছে চোট। দুই ব্রাজিলিয়ান রাফায়েল অগাস্তো সান্তোস দি সিলভা ও ফরোয়ার্ড দোরিয়েলতন গোমেস নাসিমেন্তো, ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরার খেলার সম্ভাবনা ‘ফিফটি-ফিফটি’। মিডফিল্ডার মোহাম্মদ হৃদয় খেলতেই পারবেন না। আক্রমণভাগে ভরসা তাই দেনিয়েল কলিনদ্রেস সোলেরা ও নাবীব নেওয়াজ জীবন। ফাইনালের মহারণের জন্য তাই এসব বাধা সামলেই দলকে শতভাগ প্রস্তুত করে নেওয়ার দিকে মনোযোগী লেমোস।

“দুই দিন আগে আমরা সাইফ স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে সেমি-ফাইনাল খেলেছি। রিকভারিটা এ মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেহেতু মাঝে খুব বেশি সময় পাইনি। এ কারণে রিকভারির দিকে এবং ফাইনালের জন্য ছেলেদের শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত করার দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছি।” 

“চোট নিয়ে আমি খুব বেশি চিন্তিত নই। আমি মনে করি কঠিন ম্যাচগুলো খেলোয়াড়দের পরখ করে নিতে আরও সাহায্য করে। আমি মনে করি না আমাদের মাঝমাঠে বড় কোনো সমস্যা আছে। যদি ওরা (ডোরিয়েলতন ও রাফায়েল) ভালো বোধ করে খেলবে, তা না হলে ওদের নিয়ে ঝুঁকি নিব না।”

কোয়ার্টার-ফাইনালে জোড়া গোল করা ফরোয়ার্ড জীবন প্রতিশ্রুতি দিলেন টানা খেলার ক্লান্তি ঝেড়ে জয়ের জন্য ঝাঁপানোর।

“কোচও বললেন আমরা আসলে অনেক ক্লান্ত। দুই দিন পর পর খেলা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত রিকভার করার জন্য। কাল আমরা ইনশাল্লাহ মাঠে যাব জয়ের জন্য।”