ডিজে ব্রাভোর ‘চ্যাম্পিয়ন’ গানে রিপা-ঋতুদের উৎসবের রাত

ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজতেই শুরু উৎসব, আর যেন থামাথামি নেই। ড্রেসিং রুমে ফেরা, বাসে ওঠা থেকে শুরু করে হোটেলে ফেরার পরও চলেছে উচ্ছ্বাসের স্রোতে অবগাহন। ডিজে ব্রাভোর ‘চ্যাম্পিয়ন’ গানের সঙ্গে নাচ, নাগিন গানের সঙ্গে দুলুনি আর বাঁধনহারা উল্লাস, শিরোপা জয়ের পর সবকিছুতেই মেতেছিলেন রিপা-ঋতু-মগিনিরা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Dec 2021, 02:31 PM
Updated : 23 Dec 2021, 03:06 PM

কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে বুধবার মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। শেষ দিকে জয়সূচক গোলটি করেন আনাই মগিনি।

২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ বছর বয়সীদের  নিয়ে হওয়া এই প্রতিযোগিতায় নেপালকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। সেই হিসাবে এবার মুকুট ধরে রাখল গোলাম রব্বানী ছোটনের দল।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপচারিতায় ছোটন ফুটিয়ে তুললেন উৎসবমুখর রাতের ছবি।

“বলতে পারেন, মেয়েদেরকে একেবারে ছেড়ে দিয়েছিলাম। যে যার যার মতো নেচেছে, গেয়েছে। কেউ গান গেয়েছে। ইচ্ছেমতো যার যা খুশি করেছে, কোথাও কোনো বাধা দেইনি। ওরা কঠোর পরিশ্রম করেছে, সেই পরিশ্রমের ফল পেয়েছে। উদযাপনের জন্য তাই সবকিছুতেই ছাড় দিয়েছিলাম।”

“প্রতিটি ম্যাচেই মেয়েরা সব বিভাগে আধিপত্য করে জিতেছে। নেপালের বিপক্ষে আমরা কেবল গোল পাইনি। কিন্তু প্রতিটি ম্যাচেই আমাদের আধিপত্য ছিল।”

৫ গোল নিয়ে প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোলদাতা শাহেদা আক্তার রিপা। প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতেছেন তিনি। আনাইয়ের গোলটি এসেছিল রিপার ব্যাক হিল থেকেই।

ম্যাচের পর আনন্দে আত্মহারা হয়ে তোপ চালিয়েছেন তিনি সতীর্থদের ওপর! মাঠে সমর্থকদের আবদার মেটাতে না পারার আক্ষেপও কিছুটা পোড়াচ্ছে তাকে। 

“কী আনন্দ, সেটা বলে বোঝাতে পারব না। আমি তো খুশিতে আত্মহারা হয়ে কয়েকজনকে দু-চারটা কিলও বসিয়ে দিয়েছি, আহত করে দিয়েছি (হাসি)। রাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা হলো, তারাও ভীষণ খুশি। হোটেলে ফেরার পর বক্সে ডিজে ব্রাভোর চ্যাম্পিয়ন গান বাজিয়ে আমরা সবাই নেচে-গেয়ে ভীষণ আনন্দ করেছি। আমি তো নাগিন ড্যান্স দিয়েছি। এরপর ক্লান্ত হয়ে সবাই ১২টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েছি (হাসি)।”

“আসলে কখনও ভাবিনি, এমন কিছু হতে পারে আমার জীবনে। যখন ট্রফিগুলো নিয়ে গ্যালারির কাছাকাছি গেলাম, তখন সবাই আমার নাম ধরে উল্লাস করছিল, ছবি তুলতে চাইছিল, কিন্তু আমার পক্ষে তো সবার সঙ্গে ছবি তোলা সম্ভব নয়। সমর্থকদের জন্য তাই খারাপ লাগছে। মাঠে এসে আমাদের সমর্থন দেওয়ার জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ।”

ঋতু পর্না চাকমার কথাতেও উঠে এলো উৎসবের রাতের টুকরো ছবি। এই ফরোয়ার্ড জানালেন, উদযাপনের আরেকটি উপলক্ষ্য হবে বাফুফের উইমেন’স উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণের আয়োজন।

“ডিজে ব্রাভোর চ্যাম্পিয়ন গানের সঙ্গেই আমরা বেশি নেচেছি। যেহেতু আমরাই চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, তাই এই গানের সঙ্গে নেচেছি আমরা। সবাই ইচ্ছেমতো গান গেয়েছে, আর আমরা তো সবাই নাচতে পারি (হাসি)। নাচ-গান, খাওয়া-দাওয়া সবই হয়েছে।”

“খুবই আনন্দ হয়েছে। কিরণ আপা বলেছেন, আমাদের পার্টি দিবেন। এখন আমরা সেই পার্টির অপেক্ষায় আছি।”

তবে এখানেই যে পথচলার শেষ নয়, শিষ্যদের উচ্ছ্বাসের স্রোতেও সেই বাস্তবতার দোলা দিয়েছেন কোচ ছোটন।

“উৎসবের মধ্যেও মেয়েদের বলেছি, এই ধারাবাহিকতা আমাদের ধরে রাখতে হবে, যেন আগামীতে এমন উদযাপন আরও করতে পারি।”