কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ বছর বয়সীদের নিয়ে হওয়া এই প্রতিযোগিতায় শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। সে হিসাবে মুকুট ধরে রাখার মিশনে ছোটনের দল।
সেবার নেপালের কাছে সেমি-ফাইনালে হেরে ছিটকে গিয়েছিল ভারত। প্রথমবারের মতো শিরোপা মঞ্চে উঠে এসেছে তারা। ফাইনালে ওঠার পথে ভারতকে একমাত্র হারের তেতো স্বাদ দিয়েছিল বাংলাদেশ।
পাঁচ দলের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশই এ পর্যন্ত কোনো গোল হজম করেনি। গোলও দিয়েছে সবচেয়ে বেশি; ১৯টি। ভারত ৯ গোল দিয়ে হজম করেছে একটি। এই একটি গোল তারা খেয়েছে রাউন্ড রবিন লিগে বাংলাদেশের কাছে হেরে যাওয়া ম্যাচে।
এ মুহূর্তে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে বাংলাদেশের শাহেদা আক্তার রিপা (৫টি)। ৪ গোল নিয়ে এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ভারতের ফরোয়ার্ড প্রিয়াঙ্কা দেবী। ফাইনালের আগের দিন ছোটন বললেন, পরিসংখ্যানের এই আধিপত্য আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে তাদের।
“এই টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বলেছিলাম আমাদের লক্ষ্য ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলা। প্রতি ম্যাচে দরকার জয়। দর্শকদের ভালো খেলা উপহার দেওয়া। মেয়েরা ভালো ফুটবল খেলেছে। সঠিকভাবে কাজ করে ফাইনালে উঠেছে। এখন একটা ম্যাচ বাকি। আশা করি, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হবে। মেয়েরা ম্যাচ বাই ম্যাচ যে ফুটবল খেলে এসেছে, সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।”
“মেয়েরা প্রতি ম্যাচ সাধ্যমতো ভালো খেলেছে। ফাইনালের প্রতিপক্ষ ভারত। জানি, তারা শক্তিশালী। তবে আমারও বিশ্বাস আছে মেয়েরা ভালো করবে এবং কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে।”
সবশেষ শ্রীলঙ্কাকে ১২-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া ম্যাচে বেঞ্চের শক্তিও দেখিয়েছে বাংলাদেশ। নিয়মিত একাদশের পাঁচ জনকে বিশ্রাম দিয়ে ছক কষেও বড় ব্যবধানে জিতেছে দল। তবে ছোটন কাউকে ছোট করে দেখছেন না।
“(শ্রীলঙ্কা ম্যাচে) ফরোয়ার্ডরা গোল পেয়েছে। ডিফেন্ডাররা গোল পেয়েছে। সবার মধ্যে গোল করার আত্মবিশ্বাস জন্মেছে। ভারত কঠিন প্রতিপক্ষ। তাদের বিপক্ষে ফিনিশিংয়ে ভালো করতে হবে। আত্মবিশ্বাসের অভাব নেই। সবাই সব কিছু ওভারকাম করেছে। বেঞ্চের অনেকের অভিষেক হয়েছে, কিন্তু দলের খেলার ছন্দে কখনও ভাটা পড়েনি। যে যখনই মাঠে এসেছে, সে ওই জায়গা পূরণ করেছে এবং এটা ভালো দিক। কাল আশা করব দল আরও ভালো খেলবে।”
“তবে এখানে কাউকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। ভারত প্রতিটি ম্যাচ ভালো খেলে এখানে এসেছে। যদিও ওদের বিপক্ষে রাউন্ড রবিন লিগে জিতেছি, কিন্তু ওরা ভালো প্রতিপক্ষ। এটা ফাইনাল। দুই দল সুযোগ পাবে। আমরা উন্নতি করব, ক্লিনিক্যাল ফিনিশ করার চেষ্টা করব। মেয়েরা প্রতিটা ম্যাচে সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলেছে। কাল ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে আরও ভালো পারফরম্যান্স করতে হবে।”
নেপাল ও ভারতের বিপক্ষে রাউন্ড রবিন লিগে প্রত্যাশা অনুযায়ী গোল না পাওয়ার জন্য দায় নিজেদের দিলেন মারিয়া মান্ডা। আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে অধিনায়ক জানালেন ভারতকে আবারও হারানোর আশাবাদ।
“আমাদের লক্ষ্য ছিল ম্যাচ বাই ম্যাচ ভালো খেলা। সেভাবে খেলেই জিতেছি। আমরা প্রতিটি ম্যাচেই ভালো খেলা উপহার দিয়েছি। অন্য দল থেকে এগিয়ে থেকেছি। কাল আমাদের ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ। আগের ম্যাচগুলোতে যে ভুল-ত্রুটি করেছি, সেটা শুধরে ফাইনালে লড়াই করব। জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ব।”