শেষের বাঁশি বাজতেই চয়ন-সোহানদের কেউ উঠলেন লাফিয়ে, কেউ শুয়ে পড়লেন টার্ফে। মুহূর্তেই স্রোতের মতো সমর্থকরা ঢুকে পড়ল মাঠে। মোহামেডানকে হারিয়ে প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি লিগের শিরোপা জয়ের উৎসবে মাতল মেরিনার ইয়াংস।
Published : 27 Nov 2021, 07:36 PM
শিরোপা জিততে মেরিনার্সের দরকার ছিল মাত্র ১ পয়েন্ট। আবাহনীর বিপক্ষে এই সমীকরণ মেলাতে মেলাতেও শেষ পর্যন্ত পারেনি তারা। মোহামেডানের বিপক্ষে ম্যাচে শুরুতে পিছিয়ে পড়ায় কিছুটা দুর্ভাবনা তাই উঁকি দিয়েছিল। শঙ্কার মেঘ শেষ পর্যন্ত উড়িয়ে দিল মেরিনার্স।
মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে শনিবার ৩-২ গোলে জিতেছে মেরিনার্স। ১৫ ম্যাচে ১৪ জয়ে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে মুকুট পরল মেরিনার্স। এ নিয়ে প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি লিগে দ্বিতীয় শিরোপার স্বাদ পেল তারা। শিরোপাটির স্বাদ মেরিনার্স প্রথম পেয়েছিল ২০১৬ সালে।
প্রথম পিসি (পেনাল্টি কর্নার) নষ্ট করার পর দশম মিনিটে দ্বিতীয় পিসি থেকে গোল তুলে নেয় মোহামেডান। অধিনায়ক রাসেল মাহমুদ জিমির পুশ কামরুজ্জামান পিন্টু স্টপ করার পর আর্জেন্টাইন গনসালো পেইয়াতের হিটে বল জালে জড়ায়। প্রথম কোয়ার্টারে শেষ মিনিটে পিসি থেকে সমতায় ফিরে মেরিনার্স। মিলন হোসেনের পুশ প্রদীপ মোর স্টপ করার পর সোহানুর রহমান সোহান লক্ষ্যভেদ করেন।
তৃতীয় কোয়ার্টারের শুরুতে মোহামেডানের মেনিনির হিট পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ৪৩তম মিনিটে প্রিন্স লালের হিট ঠেকিয়ে মেরিনার্সকে জয়ের পথে রাখেন বিপ্লব কুজুর।
৫১তম মিনিটে বক্সে ঢুকেই জোরালো হিট নেন প্রদীপ মোর। বল আটকানোর সুযোগই পাননি মোহামেডান গোলরক্ষক। ছয় মিনিট পর মোহামেডানের সারোয়ারি হোসেনের গোলে জমে ওঠে ম্যাচ।
শঙ্কাও জাগে আবাহনীর বিপক্ষে আগের ম্যাচে ৩-৩ সমতায় থাকার পর দুই সেকেন্ড বাকি থাকতে গোল হজম করে মেরিনার্সের হেরে যাওয়ার পুনরাবৃত্তি হয় কি-না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব শঙ্কা দূর করে জিতেই শেষটা রাঙাল তারা।
১৫ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় হয়েছে আবাহনী। ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় মোহামেডান।
জয়ের প্রতিক্রিয়ায় মেরিনার্স অধিনায়ক মামুনুর রহমান চয়ন জানালেন, আগের ম্যাচে আবাহনীর কাছে হারের হতাশা ঝেড়ে ফেলার তৃপ্তি।
“আবাহনীর কাছে হারের পর একটা শঙ্কা ছিল। মানসিকভাবে একটু বিপর্যস্ত ছিলাম। সতীর্থদের তাই বলেছিলাম, যাই হোক না কেন, জয়ের জন্য আমরা আক্রমণাত্মক হকি খেলব। এর ফল পেয়েছি, ২০১৬ সালের পর শিরোপা জিতলাম।”
“দলবদলের সময় আমাদেরকে অনেকে হালকাভাবে নিয়েছিল। কিন্তু মাঠে আমরা প্রমাণ করেছি আমরাই সেরা। আর হকিতে ছোট-বড় বলে কিছু নেই। দিন শেষে ভালো খেলাটাই মুখ্য। দীর্ঘদিন পর জমজমাট একটা লিগ হলো। খেলোয়াড় হিসেবে আমরা খুব খুশি এবং উজ্জীবিত।”