একটা শিরোপা খুব করে চাই মোহামেডানের

ইতিহাস, ঐতিহ্য সবই আছে। দীর্ঘদিন ধরে নেই কেবল ফুটবল মাঠের সাফল্য। সেই ২০১৪ সালে স্বাধীনতা কাপ জয়ের পর একে একে কেটে গেছে ছয়টি বছর, কোনো ট্রফিতে চুমু আঁকতে পারেনি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব! চার বিদেশি এবং দেশের অভিজ্ঞ ও তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে ২০২১-২২ মৌসুমের জন্য নতুন স্বপ্ন নিয়ে দল গুছিয়ে নিয়েছে দলটি। দলবদলের আনুষ্ঠানিকতা সারতে এসে কোচ শন লেনও জানালেন, শিরোপা বড্ড দরকার তাদের।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2021, 01:40 PM
Updated : 24 Nov 2021, 06:31 PM

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) বুধবার দলবদলের আনুষ্ঠানিকতা সারে মোহামেডান। দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ৩১ জনের রেজিস্ট্রেশন করিয়েছে তারা। চার বিদেশির মধ্যে বর্তমানে দলের সঙ্গে আছেন কেবল সুলেমানে দিয়াবাতে; মালির এই ফরোয়ার্ডের কাঁধে থাকছে অধিনায়কত্বের ভার। বাকি তিন বিদেশির মধ্যে দুই সেন্টার-ব্যাক হলেন অস্ট্রেলিয়ান অ্যারন রিয়ারডন, মেসিডোনিয়ার ইয়াসমিন মেসিনোভিকি ও নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ওবি মোনেকে এখনও যোগ দেননি দলের সঙ্গে। সামনের মাসেই এ তিনজন যোগ দেবেন বলে আশা করছে মোহামেডান।

স্থানীয়দের মধ্যে মোহামেডানে প্রথমবার খেলবেন ডিফেন্ডার ইমন খান, আবিদ হোসেন, আলমগীর মোল্লা এবং মিডফিল্ডার শেখ গালিব নেওয়াজ, শাহরিয়ার ইমন। ফিরেছেন মিডফিল্ডের অভিজ্ঞ সেনানী মামুনুল ইসলাম ও ফরোয়ার্ড তকলিস আহমেদ।

২০০৭ সালে প্রিমিয়ার লিগ নামকরণের পর থেকে এই শিরোপার স্বাদ আজও পাইনি মোহামেডান। ফেডারেশন কাপের ১০ শিরোপার সর্বশেষটি তারা জিতেছে ২০০৯ সালে। স্বাধীনতা কাপের সর্বোচ্চ তিনবারের চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান সবশেষ এ ট্রফি ঘরে তুলেছে ২০১৪ সালে। স্বাধীনতা কাপ দিয়েই নতুন মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছে দলটি।

দলবদল সারতে এসে কোচ শন লেন শোনালেন আশার কথা। সাফল্যের জন্য ক্ষুধার্ত সমর্থকদের প্রত্যাশা মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন ৫৭ বছর বয়সী এই ইংলিশ কোচ। দলকে মনে করিয়ে দিলেন ক্লাবের ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথাও।

“নতুন মৌসুম আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। ভালো ও ফিট খেলোয়াড়দের নিয়ে দল গড়েছি আমরা, যারা এখনও শিখছে। প্রতিটি বিভাগে আমাদের ভালো মানের খেলোয়াড় আছে। দলটা গত মৌসুমের চেয়ে ভালো এবং আমরা আশা করছি, গত মৌসুমের চেয়ে আমাদের ফল এবার ভালো হবে।”

“আমার প্রত্যাশা সবসবময় ভালো কিছুর। মোহামেডান বড় ক্লাব, তাদের ঐতিহ্য ও ইতিহাস আছে। ছেলেদেরও সে ঐতিহ্য এবং ইতিহাস সমুন্নত রাখতে খেলতে হবে।”

গত লিগে প্রত্যাশিত ফল পায়নি মোহামেডান। ষষ্ঠ স্থানে থেকে শেষ করেছিল দলটি। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের (১০টি) পর সবচেয়ে কম গোল হজম করা দলটিও ছিল তারাই (২৫টি)। লেন তাই এবার আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের কাছে আরও ভালো পারফরম্যান্স আশা করছেন।

“গতবার আমরা গোল কম খাওয়ার দিক থেকে দ্বিতীয় সেরা দল ছিলাম। বসুন্ধরার পরই ছিলাম আমরা। এর অর্থ হচ্ছে ডিফেন্সে আমরা জমাট এবং ভালো ছিলাম। বিশেষ করে আমাদের দুর্বলতা ছিল ফিনিশিংয়ে। আক্রমণভাগে আমরা যথেষ্ট ভালো ছিলাম না। এবার আমরা দুজন বিদেশি সেন্টার-ব্যাক নিয়েছি, ডিফেন্স কমপ্যাক্ট থাকবে। ওবি মোনেকে ও মামুনুলের আসাটা আমাদের দলে অনেক কিছু যোগ করেছে। আশা করি, এবার শুধু রক্ষণে নয়, ফিনিশিংয়ে ভালো করব আমরা।”

২০১৯ সালে মোহামেডানের হাল ধরার পর এখনও কোনো শিরোপা জিততে না পারার হতাশা আড়াল করেননি লেন। ট্রফির হাহাকার ঘোঁচাতে মরিয়া তিনিও।

“আমিও একটা ট্রফি চাই। আমার খেলোয়াড়রাও চায়, সমর্থকরাও চায়। কিন্তু আমি মনে করি এটা খুব কঠিন। কেননা বিদেশি খেলোয়াড়ের মানের (প্রতিটি দলে) উন্নতি হচ্ছে। স্থানীয় খেলোয়াড়রাও বিভিন্ন দলে যোগ দিচ্ছে। দলগুলো আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়েছে। আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।”

“আমরা খুবই লড়াকু দল হব। চোট, কার্ড এসব সমস্যা থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে, ফিনিশিংয়ে ভালো করতে হবে। তাহলে আমি মনে করি, মোহামেডানকে হারানো কঠিন হবে।”