'বার্সায় ড্রয়ে চলবে না, সব ম্যাচ জিততে হবে'

খেলোয়াড়ি জীবনে চাভি এরনান্দেস ছিলেন বার্সেলোনার ইতিহাসে স্বর্ণালী এক সময়ের সাক্ষী। এবার তিনি ফিরেছেন নতুন ভূমিকায়। এমন এক সময়ে কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন, যখন ক্লাবটিকে পার করতে হচ্ছে কঠিন সময়। প্রত্যাবর্তনের ক্ষণে বার্সেলোনার এই গ্রেট আশ্বাস দিলেন ক্লাবের সুদিন ফিরিয়ে আনার। নতুন কোচের মতে, প্রতিটি ম্যাচ জয়ের মানসিকতা নিয়েই খেলতে হবে তাদের।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2021, 04:16 PM
Updated : 8 Nov 2021, 04:45 PM

গত শনিবার এক বিবৃতিতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চাভিকে নতুন কোচ হিসেবে ঘোষণা করে বার্সেলোনা। এর আগে গত শুক্রবার আল সাদ শুক্রবার টুইট করে জানায়, বার্সেলোনা রিলিজ ক্লজের অর্থ পরিশোধ করতে রাজি হওয়ায় তারা চাভিকে ছেড়ে দিতে প্রস্তুত।

সোমবার কাম্প নউয়ে চাভিকে হাজার হাজার ভক্তদের উপস্থিতিতে কাতালান ক্লাবটির নতুন কোচ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে সেখানেই চুক্তিপত্রে সাক্ষর করেন স্পেনের এই বিশ্বকাপ জয়ী তারকা৷

বার্সেলোনার যুব একাডেমিতে বেড়ে ওঠা চাভি ক্লাব ছাড়ার আগে এর মূল দলের হয়ে খেলেন তখনকার রেকর্ড ৭৭৯ ম্যাচ। সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারে চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও আটটি লা লিগাসহ জেতেন মোট ২৫টি শিরোপা। 

যে ক্লাবে বেড়ে উঠেছেন এবং খেলোয়াড় হিসেবে ক্যারিয়ারে যোগ করেছেন অসংখ্য সাফল্যের পালক, সেখানে ফিরে আবেগ ছুঁয়ে যায় চাভিকে। তবে কণ্ঠে দৃঢ়তা নিয়েই জানান দিলেন, দুঃসময় থেকে ক্লাবকে ফিরিয়ে আনাটাই হবে তার মূল লক্ষ্য।

"আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। আমি আবেগপ্রবণ হতে চাই না কিন্তু শিহরণ অনুভব করছি।”

"এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্লাব এবং আপনাদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য আমি কঠোর পরিশ্রম করব। বার্সেলোনা ড্র বা পরাজয় মেনে নিতে পারে না। আমাদের সব ম্যাচেই জিততে হবে।" 

স্পেনের হয়ে ২০১০ বিশ্বকাপ ও দুটি ইউরো জয়ী এই তারকা ২০১৫ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে আল সাদে খেলোয়াড় হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০১৯ সালে দলটির কোচের দায়িত্ব নেন।

তার হাত ধরে দলটি জিতেছে একটি করে কাতার স্টার্স লিগ ও কাতার সুপার লিগ এবং দুটি করে কাতার কাপ ও আমির অব কাতার কাপ। লিগে অপরাজিত আছে রেকর্ড ৩৬ ম্যাচ ধরে।

তবে নতুন অভিযানে তার কাজটা মোটেও সহজ হতে যাচ্ছে না। লা লিগায় ১১ ম্যাচে চারটি করে জয় ও ড্রয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে বার্সেলোনা আছে নবম স্থানে। শীর্ষে থাকা রিয়াল সোসিয়েদাদের চেয়ে তারা আছে ১১ পয়েন্টে পিছিয়ে। ইউরোপ সেরার মঞ্চেও নেই চেনা ছন্দে। 

ক্লাবের অর্থনৈতিক দীনতা ও লা লিগার ফিনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে নিয়মের কারণে স্প্যানিশ ক্লাবটি এই মৌসুমে ধরে রাখতে পারেনি তাদের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসিকে। গত অগাস্টে দুই বছরের চুক্তিতে পিএসজিতে যোগ দেন আর্জেন্টাইন তারকা। ফরাসি ফরোয়ার্ড অঁতোয়ান গ্রিজমানকে ধারে পাঠানো হয় তার পুরনো ঠিকানা আতলেতিকো মাদ্রিদে। 

এই মৌসুমে নতুন খেলোয়াড় কেনায় বার্সেলোনা অর্থ খরচ করতে পারেনি। ফ্রি ট্রান্সফারে দলটিতে যোগ দেন মেমফিস ডিপাই, সের্হিও আগুয়েরো ও এরিক গার্সিয়া। সেভিয়া থেকে ধারে নিয়ে আসা হয় ডাচ স্ট্রাইকার লুক ডি ইয়ংকে। 

সব মিলিয়ে দায়িত্বের শুরু থেকেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছেন চাভি। তবে জানালেন, কোচ হিসেবে প্রস্তুত হয়েই এসেছেন বার্সেলোনায়। নিজস্ব ফুটবল দর্শনে ক্লাবকে চেনা রুপে ফেরানোর ছক কষছেন তিনি।

"আমি প্রস্তুত হয়েই এসেছি। আমার ডিএনএ পরিবর্তন হয়নি। আমাদের লাগাম ধরতে হবে, বল দখলে রাখতে হবে, সুযোগ তৈরি করতে হবে, উজাড় করে দিতে হবে। হারিয়ে যাওয়া অনেক কিছুই উদ্ধার করার ব্যাপার আছে আমাদের।”

আন্তর্জাতিক বিরতির পর লিগে আগামী ২১ নভেম্বরে এস্পানিওলের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে কোচ হিসেবে বার্সেলোনায় শুরু হবে চাভির নতুন পথচলা।