আতলেতিকোকে ফের হারিয়ে শেষ ষোলোয় লিভারপুল

প্রথম লেগের মতো এবারও শুরুতেই জোড়া গোল খেয়ে বসল আতলেতিকো মাদ্রিদ। সেবার ঘুরে দাঁড়িয়ে দারুণ লড়াই করলেও এবার তার কিছুই পারল না দলটি। উল্টো প্রথমার্ধেই ১০ জনের দলে পরিণত হয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ল তারা। সুযোগ পেয়ে পুরোটা সময় আধিপত্য করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা চতুর্থ জয় তুলে নিল লিভারপুল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Nov 2021, 09:54 PM
Updated : 3 Nov 2021, 11:16 PM

গ্রুপ পর্বে বুধবার রাতে অ্যানফিল্ডে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে ২-০ গোলে জিতেছে ইয়ুর্গেন ক্লপের দলটি। তাদের গোল দুটি করেন দিয়োগো জটা ও সাদিও মানে। দারুণ এই জয়ে ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতাটির শেষ ষোলোয় উঠেছে তারা।

গত মাসে আতলেতিকোর মাঠে শুরুতে পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে লিভারপুল এগিয়ে গেলেও অঁতোয়ান গ্রিজমানের প্রথমার্ধেই করা জোড়া গোলে লড়াই জমিয়ে তুলেছিল স্বাগতিকরা। পরে অবশ্য গ্রিজমান লাল কার্ড দেখার পর ৩-২ গোলে হেরে যায় তারা।

এবার আট মিনিটের মধ্যে দুই গোল খেয়ে এবং তার একটু পর ডিফেন্ডার ফেলিপে লাল কার্ড দেখায় লড়াইও করতে পারেনি লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা।

বল দখল কিংবা আক্রমণ, সবখানেই একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল লিভারপুলের। ৭০ শতাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে ১৯টি শট নেয় তারা, যার ছয়টি লক্ষ্যে। আতলেতিকো পাঁচটি শট নিলেও কোনোটিই লক্ষ্যে রাখতে পারেনি।

মৌসুমে দারুণ ছন্দে এগিয়ে চলা লিভারপুল এদিনও শুরুটা করে দুর্দান্ত। আগের দেখায় প্রথম ১৩ মিনিটে দুই গোল করা দলটি এবার একই কাজ করে ২১ মিনিটের মধ্যে।

এবার ত্রয়োদশ মিনিটে ডান দিক দিয়ে ওঠা আক্রমণে দলকে এগিয়ে নেন জটা। ট্রেন্ট অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ডের ছয় গজ বক্সের মুখে বাড়ানো ক্রসে হেডে প্রথম গোলটি করেন অরক্ষিত এই পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। ঠেকানোর কোনো সুযোগই পাননি গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক।

দ্বিতীয় গোলটিতেও জড়িয়ে অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ডের নাম। এবার ইংলিশ এই ডিফেন্ডার ডান দিক থেকেই কোনাকুনিভাবে ডি-বক্সে থ্রু বল বাড়ান। আর ডিফেন্ডার ফেলিপেকে চোখের পলকে পেছনে ফেলে বাঁ পায়ের স্লাইডে ব্যবধান গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন মানে।

গত মাসে ঘরের মাঠে শুরুতে দুই গোল খেলেও অল্প সময়ের মধ্যে ঘু্‌রেও দাঁড়িয়েছিল আতলেতিকো। কিন্তু এবার তেমন কোনো সম্ভাবনাও বলতে গেলে শেষ হয়ে যায় ৩৬তম মিনিটে। মানেকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ফেলিপে। রেফারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন লুইস সুয়ারেস।

খেলোয়াড় কমার খানিক পরই আরেক গোল খেতে পারতো আতলেতিকো। তবে ইয়ান ওবলাকের ডাবল সেভে ম্যাচে থাকে তারা। প্রথমে মোহামেদ সালাহর শট ঠেকানোর পর জটার হেডও রুখে দেন স্লোভেনিয়ার এই গোলরক্ষক।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আবারও আতলেতিকোর জালে বল জড়ায়। তবে এবার স্কোরার মাতিপ অফসাইডে থাকায় ব্যবধান বাড়েনি। ৫২ ও ৫৪তম মিনিটে দারুণ দুটি সুযোগ নষ্ট হয় লিভারপুলের। প্রথমে খুব কাছ থেকে সালাহর শট ওবলাক ফিরিয়ে দেন। এরপর জটা অরক্ষিত থেকেও ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন।

খানিক পর সুয়ারেসের শট একজনের গায়ে লেগে জালে জড়ালে ক্ষনিকের জন্য ব্যবধান কমানোর স্বস্তি পেয়েছিল আতলেতিকো; তবে ভিএআরে তা বাতিল হয়ে যায়। অফসাইডে ছিলেন আতলেতিকোর হিমেনেস।

৮৬তম মিনিটে সালাহও একবার জালে বল পাঠান। তবে তার আগ মুহূর্তে জটা ভলির চেষ্টায় প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার ট্রিপিয়ারের মুখে পা দিয়ে আঘাত করায় ফাউলের বাঁশি বাজে।

টানা চার জয়ে ১২ পয়েন্টে গ্রুপের শীর্ষস্থানও নিশ্চিত হয়ে গেছে লিভারপুলের। আগের ম্যাচে এসি মিলানের মাঠে ১-১ ড্র করা পোর্তো সমান চার ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুইয়ে।

তিন নম্বরে আতলেতিকো মাদ্রিদের পয়েন্ট ৪। ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে থাকা মিলানেরও সুযোগ আছে নকআউট পর্বে ওঠার।