বেনজেমার নৈপুণ্যে শাখতারকে আবারও হারাল রিয়াল

জোড়া গোল উপহার দিলেন করিম বেনজেমা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে হাজার গোলের মাইলফলক স্পর্শ করল রিয়াল মাদ্রিদ। শাখতার দোনেৎস্ককে আবারও হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর পথে আরেকটু এগিয়ে গেল প্রতিযোগিতাটির রেকর্ড ১৩ বারের চ্যাম্পিয়নরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Nov 2021, 07:35 PM
Updated : 3 Nov 2021, 11:13 PM

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে বুধবার ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে রিয়াল। প্রথম লেগে শাখতারের মাঠ থেকে ৫-০ ব্যবধানে জয় নিয়ে ফিরেছিল কার্লো আনচেলত্তির দল।

চার ম্যাচে তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে আছে রিয়াল। ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে থাকা শাখতারের গ্রুপ পর্ব পেরুনোর আশা টিকে আছে কাগজে-কলমে।

শুরু থেকে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটে সুযোগ পায় দুই দলই। পঞ্চম মিনিটে বক্সের ভেতরে লুকাস ভাসকেসের ছোট পাস ধরে শট নেন লুকা মদ্রিচ। ক্রোয়াট মিডফিল্ডারের প্রচেষ্টা ঝাঁপিয়ে ফেরান গোলরক্ষক আনাতোলি ত্রুবিন।

দশম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে আলান পাত্রিকের বুলেট গতির কোনাকুনি নিচু শট ঝাঁপিয়ে পড়া থিবো কর্তোয়াকে ফাঁকি দিলেও দূরের পোস্টে লেগে ফিরে আসে। এরপরই পাল্টা আক্রমণে ওঠে রিয়াল। কিন্তু মাঝমাঠ থেকে এক ছুটে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে নিয়ন্ত্রণ হারান প্রথম লেগে জোড়া গোল করা ভিনিসিউস জুনিয়র।

চার মিনিট পরই ডি-বক্সে ডিফেন্ডাররা তালগোল পাকালে গোল হজম করে বসে শাখতার। এদের মিলিতাওয়ের লং পাস নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি বেনজেমা। শাখতারের এক ডিফেন্ডার বল ধরে ব্যাক পাস বাড়ান গোলরক্ষককে; তার ছোট পাস সামনে থাকা মারলন পায়ে জমাতে পারেননি, ভিনিসিউস নেন বলের নিয়ন্ত্রণ। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের আড়াআড়ি পাস থেকে অনায়াসে লক্ষ্যভেদ করেন বেনজেমা।

এ গোলে ইতিহাসেও নাম লেখা হয়ে গেল বেনজেমার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে হাজারতম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করল রিয়াল। বলার অপেক্ষা রাখে না, রিয়ালের মোট গোলের ধারেকাছে নেই কোনো ক্লাব। সবচেয়ে কাছাকাছি থাকা বায়ার্ন মিউনিখের গোল সাড়ে সাতশ’র একটু বেশি।

সপ্তদশ মিনিটে মদ্রিচকে আবারও হতাশ করেন ত্রুবিন। লুকাস ভাসকেসের বাড়ানো বল ধরে ক্রোয়াট মিডফিল্ডারের জোরালো শট পা বাড়িয়ে আটকান শাখতার গোলরক্ষক।

৩২তম মিনিটে শাখতারের সমতায় ফেরার ভালো একটি সুযোগ নষ্ট হয়। মিখাইলো মুদ্রিকের টোকায় ফের্নান্দো বল পেলেও গায়ের সঙ্গে ডিফেন্ডার সেঁটে থাকায় ঠিকমতো শট নিতে পারেননি এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। বলও থাকেনি লক্ষ্যে।

আট মিনিট পর পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল হয়নি ফের্নান্দোর। সতীর্থের ক্রস আলান বুক দিয়ে নামানোর পর রিয়ালের ভিফেন্ডার দাভিদ আলাবার সামনে সুযোগ ছিল বিপদমুক্ত করার; কিন্তু পারেননি তিনি। বাতাসে ভেসে থাকা বল দারুণ শটে জালে জড়িয়ে দেন ফের্নান্দো। চলতি আসরে গোলের খাতা খুললেন ২২ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়, প্রথম গোলের দেখা পেল শাখতারও!

প্রথমার্ধের শেষ দিকে আবারও রিয়ালের রক্ষণে চিড় ধরে। সতীর্থের পাস ধরে বক্সে ঢুকেও পড়েন ফের্নান্দো। এবার তার শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান কোর্তোয়া।

দ্বিতীয়ার্ধে শাখতারের রক্ষণে বেশ চাপ দিতে থাকে রিয়াল। ৫০তম মিনিটে ডান দিক থেকে ভাসকেস এক ডিফেন্ডারের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল বাড়ান। বলে গতি থাকায় কাসেমিরো স্লাইড করলেও নাগাল পাননি। খানিক পর ভিনিসিউসের বাইলাইনের একটু ‍উপর থেকে বাড়ানো কাট ব্যাকে পা ছোঁয়াতে পারেননি কেউ।

৬১তম মিনিটে দারুণ বোঝাপড়ায় এগিয়ে যায় রিয়াল। কাসেমিরো ফ্লিক করে ভিনিসিউসকে ফিরিয়ে দেন বল। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড দ্রুত পাস দেন ফাঁকায় থাকা বেনজেমাকে। নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। চলতি আসরে তার গোল হলো ৪টি।

৭৮তম মিনিটে ভাসকেসের লব বুক দিয়ে নামিয়ে জায়গা করে নিয়ে শরীরটা ঘুরিয়ে শট নিয়েছিলেন বেনজেমা, কিন্তু বল উড়ে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। এরপরই তাকে তুলে লুকা ইয়োভিচকে নামান আনচেলত্তি।

শেষ দিকে রিয়ালের রক্ষণে চাপ দেওয়া শাখতার পরীক্ষা নেয় কোর্তোয়ার। কিন্তু সুদাকোভের শট ফিরিয়ে দলকে জয়ের পথে রাখেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিতল রিয়াল মাদ্রিদ। লা লিগায় সবশেষ সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে ওসাসুনার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করার ক্ষতেও দিল কিছুটা প্রলেপ।