দি মারিয়ার শেষের গোলে পিএসজির জয়োল্লাস

একগাদা তারকা নিয়েও অনেকটা সময় ভুগতে দেখা গেল পিএসজিকে। জেগেছিল আরেকটি হারের শঙ্কাও। শেষ দিকে গিয়ে যেন নিজেদের খুঁজে পেল তারা। মার্কিনিয়োস সমতা টানার পর দারুণ গোলে দলকে জয়ের আনন্দে ভাসালেন আনহেল দি মারিয়া।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2021, 08:54 PM
Updated : 29 Oct 2021, 09:28 PM

ঘরের মাঠে শুক্রবার রাতে লিগ ওয়ানের ম্যাচে শিরোপাধারী লিলকে ২-১ গোলে হারিয়েছে পিএসজি। নাটকীয় জয়ে লিগ টেবিলে ১০ পয়েন্টে এগিয়ে গেছে শিরোপা পুনরুদ্ধারের অভিযানে থাকা দলটি।

জোনাথন ডেভিডের গোলে প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়েছিল মাওরিসিও পচেত্তিনোর দল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও কিছুটা সময় দলটির পারফরম্যান্স আশানুরূপ ছিল না। তবে ঠিক সময়ে নিজেদের মেলে ধরে তারা। 

ম্যাচে প্রায় ৬০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে ১৭টি শট নেয় পিএসজি, যার ছয়টি থাকে লক্ষ্যে। লিলের ১১ শটের তিনটি লক্ষ্যে ছিল।

গত মৌসুমে লিলের কাছে শিরোপা হারানোর পথে দলটির মাঠে গোলশূন্য ড্র করেছিল পিএসজি। ফিরতি লেগে গত এপ্রিলে নেইমারদের তাদের মাঠেই ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছিল লিল। এরপর গত অগাস্টে ফরাসি সুপার কাপেও লিলের জয় একই ব্যবধানে।

অবশেষে এবার জয়ের স্বাদ পেল পিএসজি।

ম্যাচের প্রথম মিনিটেই অবশ্য বিপদে পড়তে বসেছিল তারা। সতীর্থের উদ্দেশ্যে লিওনেল মেসির বাড়ানো ক্রস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে প্রতি-আক্রমণে ওঠে লিল। ডান দিক থেকে মিডফিল্ডার নানিতামো ইকোনের পাস পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকেই কোনাকুনি শট নেন তুর্কি স্ট্রাইকার বুরাক ইলমাজ। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা। 

শুরু থেকে বল দখলে পিএসজি এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে সুবিধা করতে পারছিল না তারা। এর মাঝেই পঞ্চদশ মিনিটে আরেকটি ভালো আক্রমণ শানায় লিল। তবে ডি-বক্সের মুখ থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ইকোনে।

২৩তম মিনিটে প্রথম একটা হাফ-চান্স পায় পিএসজি। তবে মেসির পাস পেয়ে যথেষ্ট জোরে শট নিতে পারেননি দি মারিয়া।

এর ছয় মিনিট পরই এগিয়ে যায় লিল। বাঁ দিক দিয়ে ইলমাজ ডি-বক্সে ঢুকে ডিফেন্ডার টিলো কেরারকে কাটিয়ে বাইলাইন থেকে কাটব্যাক করেন। আর ছয় গজ বক্সের মুখে কেবল পা বাড়িয়ে বলের গতিপথ পাল্টে দেন কানাডার ফরোয়ার্ড ডেভিড।

প্রথমার্ধে পিএসজি নিজেদের সেরা সুযোগ পায় ৪০তম মিনিটে। তবে দুরূহ কোণ থেকে দি মারিয়ার কোনাকুনি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। খানিক পর মেসির ফ্রি কিক ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে উড়ে গেলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।

প্রথমার্ধে মেসি-নেইমাররা তাদের সেরা অবস্থার ধারেকাছেও ছিলেন না। বিরতির পর আর্জেন্টাইন তারকাকে তুলে তার স্বদেশি ইকার্দিকে নামান কোচ। কিন্তু তাদের পারফরম্যান্সের উন্নতি হচ্ছিল না। ৫৭তম মিনিটে তো ব্যবধান বাড়তেও পারত। তবে ইলমাজের ক্রস দোন্নারুম্মা কোনোরকমে ঠেকানোর পর ফাঁকায় বল পেয়ে উড়িয়ে মারেন ডেভিড।

একটু একটু করে চাপ বাড়াতে থাকা পিএসজি ৬৯ ও ৭৩তম মিনিটে ভালো দুটি সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু নেইমারের শট রক্ষণে প্রতিহত হওয়ার পর দি মারিয়ার ক্রসে অরক্ষিত ইকার্দির হেডে বল উড়ে যায়।

অবশেষে ৭৪তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় পিএসজি। বাঁ দিকের বাইলাইনের কাছ থেকে দি মারিয়ার উঁচু কাটব্যাকে ডান পায়ের শটে বল ঠিকানায় পাঠান মার্কিনিয়োস। 

শেষ ১০ মিনিটে একচেটিয়া চাপ ধরে রাখে পিএসজি। ৮৫তম মিনিটে নেইমার বাঁ দিক থেকে অসাধারণ এক রক্ষণচেরা থ্রু পাস বাড়ান ইকার্দির উদ্দেশ্যে। কিন্তু ডি-বক্সে বিনা বাধায়ও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার।

তিন মিনিট পরই ওই জয়সূচক গোল। এবার ডি-বক্সের মুখে বল ধরে ছোট পাসে ডান দিকে দি মারিয়াকে খুঁজে নেন নেইমার। আর বল ধরে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে জালে পাঠান সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার।

গত রাউন্ডে মার্সেইয়ের মাঠে ড্র করা পিএসজির লিগে এটা দশম জয়। সঙ্গে এক ড্রয়ে ১২ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে তারা। এক ম্যাচ কম খেলা লঁস ১০ পয়েন্ট কম নিয়ে আছে দুই নম্বরে।

চ্যাম্পিয়ন লিল ১৫ পয়েন্ট নিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে, তাদের অবস্থান ১১ নম্বরে।