ফিরমিনোর হ্যাটট্রিকে লিভারপুলের গোল উৎসব

একসঙ্গে জ্বলে উঠলেন আক্রমণভাগের তিন তারকা। হ্যাটট্রিক করলেন রবের্তো ফিরমিনো। জালের দেখা পেলেন মোহামেদ সালাহ ও সাদিও মানেও। দাপুটে ফুটবলে ওয়াটফোর্ডকে উড়িয়ে জয়ে ফিরল লিভারপুল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2021, 01:24 PM
Updated : 16 Oct 2021, 02:09 PM

প্রতিপক্ষের মাঠে শনিবার প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ৫-০ গোলে জিতেছে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। লিগে শততম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মানে।

দুই দলের আগের দেখায় এই মাঠেই গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৩-০ গোলে হেরেছিল লিভারপুল। সেই ক্ষতে এবার প্রলেপ দিল অ্যানফিল্ডের দলটি।

দুই ম্যাচ পর লিগে জয়ের স্বাদ পেল সবশেষ ২০১৯-২০ আসরে শিরোপা জেতা লিভারপুল। আন্তর্জাতিক বিরতির আগে শিরোপাধারী ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে ২-২ ও নবাগত ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে ৩-৩ গোলে ড্র করেছিল তারা। 

সবাইকে চমকে দিয়ে ২০১৫-১৬ মৌসুমে লেস্টার সিটিকে প্রিমিয়ার লিগ জেতানো ক্লাওদিও রানিয়েরির ওয়াটফোর্ডের কোচ হিসেবে শুরুটা হলো ভীষণ বিবর্ণ।

ম্যাচে ৭৭ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে লিভারপুল গোলের উদ্দেশে ১৯টি শট নেয়, যার আটটি ছিল লক্ষ্যে, পাঁচটিতে মেলে সাফল্য। স্বাগতিকদের ছয় শটের দুটি লক্ষ্যে ছিল।

শুরু থেকে আক্রমণে দাপট দেখানো লিভারপুল এগিয়ে যায় নবম মিনিটে। ডান দিক থেকে সালাহর দারুণ ক্রসে ডি-বক্সের মাথা থেকে প্রথম স্পর্শে ডান পায়ের শটে ঠিকানা খুঁজে নেন সেনেগালের ফরোয়ার্ড মানে।

দিদিয়ের দ্রগবা (১০৪) ও সালাহর পর (১০৩) তৃতীয় আফ্রিকান ও সব মিলিয়ে ৩১তম খেলোয়াড় হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে শত গোলের মাইলফলক স্পর্শ করলেন মানে।

দুই মিনিট পর দ্বিগুণ হতে পারত ব্যবধান। ডি-বক্সের বাইরে থেকে সালাহর শট দারুণভাবে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন স্বাগতিক গোরক্ষক বেন ফস্টার। ২০তম মিনিটে সালাহর আরেকটি প্রচেষ্টা ঠেকান তিনি।

৩৭তম মিনিটে দারুণ গোছানো আক্রমণ থেকে ব্যবধান বাড়ায় সফরকারীরা। মানের পাস ডি-বক্সে খুঁজে পায় জেমস মিলনারকে। তার বাড়ানো বল কাছ থেকে ফাঁকা জালে পাঠান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ফিরমিনো।

বিরতির আগে ব্যবধান বাড়তে পারত আরও। ডি-বক্সের বাইরে থেকে নাবি কেইতার জোরালো শট গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে ক্রসবার কাঁপায়।

প্রথমার্ধে ৮৩ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে আধিপত্য করে লিভারপুল। এ সময় ওয়াটফোর্ড কোনো শটই নিতে পারেনি। আলিসনের অনুপস্থিতিতে গোলপোস্টের নিচে দাঁড়ানো কুইভিন কেলেহারকে তাই পরীক্ষাও দিতে হয়নি।

দ্বিতীয়ার্ধের চতুর্থ মিনিটে একজনের বাধা এড়িয়ে সালাহর শটে লাফিয়ে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান ফস্টার। একটু পর তিন মিনিটে দুইবার প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠিয়ে বড় জয়ের পথে এগিয়ে যায় লিভারপুল।

৫২তম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলে স্কোরলাইন ৩-০ করেন ফিরমিনো। অ্যান্ড্রু রবার্টসনের ক্রস ক্লিয়ার করার চেষ্টায় নিজেদের জালে পাঠাতে বসেছিলেন ওয়াটফোর্ডের ডিফেন্ডার। ফস্টার বল ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন ফিরমিনো।

সালাহর গোলটি ছিল চমৎকার। ডি-বক্সে তিন জনের মাঝ থেকে বল নিয়ে একটু এগিয়ে আরও একজনের বাধা এড়ান তিনি। পরে দুরূহ কোণ থেকে বাঁ পায়ের শটে দূরের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন মিশরের এই ফরোয়ার্ড। প্রিমিয়ার লিগে তার গোল হলো ১০৪টি।

৭১তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন মানে। ফিরমিনোর ক্রস ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে বাইরে মারেন তিনি। যোগ করা সময়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন ফিরমিনো। নিকো উইলিয়ামসের পাস পেয়ে কাছ থেকে গোলটি করেন তিনি। বড় জয়ের আনন্দে মাঠ ছাড়ে সফরকারীরা।   

আট ম্যাচে পাঁচ জয় ও তিন ড্রয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে চেলসিকে পেছনে ফেলে আপাতত শীর্ষে উঠেছে লিভারপুল।