মিলানের সান সিরোয় রোববার রাতে দ্বিতীয় আসরের ফাইনালে ২-১ গোলে জিতেছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। মিকেল ওইয়ারসাবাল স্পেনকে এগিয়ে নেওয়ার পর চমৎকার গোলে সমতা ফেরান করিম বেনজেমা। জয়সূচক গোলটি করেন কিলিয়ান এমবাপে।
প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপ, ইউরো ও নেশন্স লিগ-তিনটিই জয়ের কীর্তি গড়ল ফ্রান্স। ২০১৯ সালে নেশন্স লিগের প্রথম আসরের শিরোপা জিতেছিল পর্তুগাল।
সেমি-ফাইনালে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর বেলজিয়ামের জালে তিনবার বল পাঠিয়ে ৩-২ ব্যবধানে জিতেছিল ফরাসিরা। তিন দিনের ব্যবধানে ঘুরে দাঁড়ানোর আরেকটি নজির গড়ল তারা।
শেষ চারে জোড়া গোলে ইতালির ৩৭ ম্যাচের অপরাজেয় যাত্রা থামিয়ে দেওয়ার নায়ক ফেররান তরেসের ফাইনালে খেলা নিয়ে শঙ্কা জেগেছিল। তবে ফিটনেস পরীক্ষায় উতরে মাঠে নামেন এই স্প্যানিশ স্ট্রাইকার।
প্রথমার্ধে বল দখলে স্পেন আধিপত্য করলেও কোনো দলের আক্রমণেই ছিল না ধার। এই সময়ে গোলের জন্য স্পেনের দুই শটের একটি লক্ষ্যে ছিল। আর ফ্রান্স শটই নিতে পারে স্রেফ একটি।
দ্বাদশ মিনিটে পাবলো সারাবিয়ার শট সহজেই ঠেকান ফ্রান্স গোলরক্ষক উগো লরিস। দেশের হয়ে শততম ম্যাচ খেলতে নামা অঁতোয়ান গ্রিজমানের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে ২৬তম মিনিটে করিম বেনজেমার শট রুখে দেন স্পেনের ডিফেন্ডার এরিক গার্সিয়া।
৫৩তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে ডি-বক্সে দারুণ নিচু ক্রস বাড়ান সারাবিয়া। তবে বলের কাছে যেতে পারেননি স্পেনের কেউ। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ওঠে ফ্রান্স। বেনজেমা পাস দেন এমবাপের উদ্দেশে। ছুটে গিয়ে পা বাড়িয়ে বিপদমুক্ত করেন আলোনসো।
৬৩তম মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি ফ্রান্স। পল পগবার পাস বাঁ দিকে খুঁজে নেয় বেনজেমাকে। এই স্ট্রাইকারের পাসে কাছ থেকে থিও এরনঁদেজের প্রচেষ্টা ক্রসবারের নিচের দিকে লেগে ফেরে।
উল্টো পরের মিনিটে এগিয়ে যায় স্পেন। সের্হিও বুসকেতসের থ্রু বল ধরে সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে ডি-বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের শটে দূরের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন ওইয়ারসাবাল।
৭২তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ পান এমবাপে। কিন্তু তার দুর্বল শট সহজেই ঠেকান উনাই সিমোন।
৮০তম মিনিটে কিছুটা সৌভাগ্যসূচক গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। থিও এরনঁদেজের বাড়ানো বলে অফসাইড পজিশনে ছিলেন এমবাপে। কিন্তু বল স্প্যানিশ ডিফেন্ডার গার্সিয়ার পায়ে লেগে আসায় অফসাইডের বাঁশি বাজেনি। বল ধরে দারুণ ফিনিশিংয়ে দলকে এগিয়ে নেন পিএসজি ফরোয়ার্ড।
শিরোপা জিতে সেঞ্চুরির মাইলফলক ছোঁয়ার দিনটি রাঙাতে চেয়েছিলেন গ্রিজমান। নিজে খুব একটা আলো ছড়াতে না পারলেও শিরোপা স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় ম্যাচ শেষে তার উদযাপনটা ছিল দেখার মতো। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে দলের ছিটকে পড়ায় দায় থাকায় যিনি কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন, সেই এমবাপেই সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে গোল করে শিরোপা জয়ে রাখলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
এদের সবার পেছনের নেপথ্যের নায়ক কোচ দিদিয়ে দেশম। খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ ও ইউরো জয়ের পর কোচ হিসেবে ২০১৮ সালে দেশকে জিতিয়েছিলেন বিশ্বকাপ। অর্জনের ঝুলিতে এবার যোগ করলেন নেশন্স লিগের মুকুট।