মানসিকভাবে ভেঙে পড়েনি বাংলাদেশ: রহমত

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ পথচলায় ছেদ পড়েছে মালদ্বীপের বিপক্ষে হেরে। তবে এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে না বাংলাদেশ। সাত দিনে তিন ম্যাচ খেলার ক্লান্তি ঝেড়ে নেপালের বিপক্ষে লক্ষ্য পূরণে আশাবাদী ডিফেন্ডার রহমত মিয়া।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2021, 01:09 PM
Updated : 8 Oct 2021, 01:09 PM

শ্রীলঙ্কাকে ১-০ গোলে হারিয়ে আসর শুরু করা বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশালী ভারতকে রুখে দেয় ১-১ ব্যবধানে। রাশমি ধান্দু স্টেডিয়ামে গত বৃহস্পতিবার নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে স্বাগতিক মালদ্বীপের বিপক্ষে ২-০ গোলে হারে অস্কার ব্রুসনের দল।

সাফের শিরোপাধারীদের বিপক্ষে ব্রুসনের কোনো কৌশলই কাজে লাগেনি। আগের দুই ম্যাচের মতো আক্রমণাত্মক খেলতে পারেনি দল। রক্ষণের দৃঢ়তাও ধরে রাখা যায়নি। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) শুক্রবার পাঠানো ভিডিও বার্তায় রহমত জানালেন কোচের পরিকল্পনা মাঠে বাস্তবায়ন করতে না পারার কারণ।

“গতকালের ম্যাচ নিয়ে কোচিং স্টাফ বলুন, খেলোয়াড় বলুন, কেউই চাপ নেয়নি। গতকাল মূল যে সমস্যা হয়েছে, আমরা গত সাত দিনে তিনটা ম্যাচ খেলেছি। আমাদের অধিকাংশ খেলোয়াড় প্রায় ৭২ ঘণ্টা পর পর ম্যাচ খেলতে নামে। এর মাঝে মালদ্বীপ ৫ দিনের বিশ্রাম পেয়েছে, সতেজভাবে খেলতে পেরেছে তারা। এদিক থেকে শুরুর দিকে যারা বেশি খেলেছে, তারা কিছুটা ক্লান্ত ছিল। আমার মনে হয় একারণেই আমাদের পারফরম্যান্স নিচের দিকে গেছে। আশা করি, এটা কাটিয়ে উঠতে পারব।”

“এইবারের সাফে সবচেয়ে সেরা আক্রমণভাগ মালদ্বীপের, যেটা আমাদের কোচিং স্টাফরাও বলেছিল। যদি এদেরকে আটকাতে পারি, তাহলে ভালো ফল পেতে পারি। আমাদের গেম প্ল্যান আগের মতোই ছিল। মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণ রাখব এবং এরপর আক্রমণে যাব। কিন্তু যে কোনোভাবে সেটা কাজে আসেনি। আগেও বলেছি, আমাদের এনার্জিতে ঘাটতি ছিল। এটা বিপিএলের ম্যাচ নয়, যেন অনেক ধীরে হয়, রিল্যাক্স পাওয়া যায়। এটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ, কঠিন ম্যাচ। কঠিন পরিস্থিতিতে তিনটা ম্যাচ সাত দিনের মধ্যে খেলা অনেক কঠিন।”

দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম গোল হজমের পর আক্রমণাত্মক খেলার জন্য সুমন রেজা, জুয়েল রানা ও মাহবুবুর রহমান সুফিল-এই তিন ফরোয়ার্ডকে নামিয়েছিলেন কোচ। তাতেও কাজ হয়নি। তবে চলতি আসরে প্রথম হারের তেতো স্বাদ পেলেও দল মানসিকভাবে ভেঙে পড়েনি বলে জানালেন রহমত। আগামী ১৩ তারিখে নেপালের ম্যাচে দল সতেজভাবে নামতে পারবে বলেও বিশ্বাস তার।

“গতকাল ম্যাচে যাওয়ার আগে সবার পরিকল্পনা ছিল, যদি জিতে আসতে পারি, তাহলে হয়ত ফাইনাল খেলা নিশ্চিত করে ফেলব। যদি জিততে নাও পারি, তাহলে যেন পয়েন্ট আদায় করে নিতে পারি, কোনোটাই হয়নি..কিন্তু কেউ মোরালি ডাউন নয়। এখনও আমাদের সুযোগ আছে। ১৩ তারিখে যদি জিততে পারি, তাহলে হয়ত ফাইনাল খেলতে পারব।”

“৫ দিনের বিশ্রামে আমরা নিশ্চিতভাবে সতেজ হয়ে ফিরতে পারব। যেহেতু সাতটা দিন খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে, সেহেতু এই পাঁচ দিন আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখন সবাই রিকভারি করছে। হাতে যে সময় আছে, সেই সময়ে আমরা নেপাল ম্যাচের পরিকল্পনা করব।”

সতীর্থদের সঙ্গে রহমত মিয়া (ডানে)। ফাইল ছবি

আসরে এখনও বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা গোল পায়নি। শ্রীলঙ্কা ও ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে গোল এনে দেন দুই ডিফেন্ডার তপু বর্মন ও ইয়াসিন আরাফাত। বাকি দলগুলোর ফরোয়ার্ড সুনিল ছেত্রি, আশফাক আলি, হামজা মোহামেদরা গোল পেয়েছেন। রহমত আশাবাদী, বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডদের গোলখরা কাটবে অচিরেই।

“ফিনিশিং তো আমাদের আজকের সমস্যা নয়, অনেক দিন থেকে হয়ে আসছে। সবাই চেষ্টা করছে, ইনশাল্লাহ ঠিক হয়ে যাবে। কোচিং স্টাফরা ফিনিশিং নিয়ে অনেক চেষ্টা করছে, হয়ে যাবে।”

লেফট-ব্যাক কিংবা রাইট-ব্যাক, দুই পজিশনেই খেলেন রহমত। তবে মালদ্বীপের বিপক্ষে তাকে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ড ও উইংয়ে খেলান ব্রুসন। পজিশন পরিবর্তন দলের স্বার্থে বলে জানালেন রহমত।

“আমি অন্য পজিশনে খেলেছি দলের স্বার্থে। কার্ডের কারণে দুজন খেলতে পারেনি। চোট আছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে কোচ আমাকে ওই পজিশনে খেলিয়েছেন। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। জানি না কেমন খেলেছি, বাইরে থেকে যারা দেখেছেন, তারা বলতে পারবেন।”