প্যারাগুয়ের জমাট রক্ষণে ফিনিশিংয়ে ভুগল আর্জেন্টিনা

ম্যাচ জুড়ে দারুণ সব আক্রমণ গড়লেন লিওনেল মেসি। বাঁ দিক থেকে ভীতি ছড়ালেন আনহেল দি মারিয়া। সুযোগও তৈরি হলো অনেক, কিন্তু সাফল্য মিলল না। শেষ আধা ঘণ্টায় প্রতি-আক্রমণে পাল্টা জবাব দেওয়া প্যারাগুয়ে আবারও রুখে দিল দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2021, 00:52 AM
Updated : 8 Oct 2021, 01:43 AM

প্রতিপক্ষের মাঠে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোরে শুরু হওয়া ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। কাতার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এই নিয়ে চতুর্থ ম্যাচে পয়েন্ট হারাল আর্জেন্টিনা। আর প্যারাগুয়ের এটি ষষ্ঠ ড্র। 

পুরো ম্যাচে প্রায় ৭০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে ১৪টি শট নেয় আর্জেন্টিনা, যার আটটি ছিল লক্ষ্যে। আর প্যারাগুয়ের ১০ শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে।

প্যারাগুয়ের জাল অক্ষত রাখায় বড় কৃতিত্ব তাদের গোলরক্ষক আন্তোনি সিলভার। মেসিদের অনেক প্রচেষ্টা দারুণ নৈপুণ্যে ব্যর্থ করে দেন তিনি। 

আক্রমণাত্মক শুরু করা আর্জেন্টিনা ম্যাচের প্রথম তিন মিনিটেই দুটি সুযোগ তৈরি করে। চতুর্থ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে অনেক দূর থেকে সান্তিয়াগো আর্সামেন্দিয়ার শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেস।

ক্রমেই চাপ আরও বাড়ানো আর্জেন্টিনা দুই মিনিটের ব্যবধানে দুটি নিশ্চিত সুযোগ পায়। দশম মিনিটে মেসির রক্ষণচেরা পাস ডি-বক্সে পেয়ে হোয়াকিন কোররেয়ার কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে ফেরান প্যারাগুয়ে গোলরক্ষক সিলভা।

পরেরবারও মেসি ডি-বক্সে খুঁজে নেন কোররেয়াকে। এবার ইন্টার মিলানের এই মিডফিল্ডারের শট গোলরক্ষক ঠিকমতো ফেরাতে না পারলে গোলমুখে পেয়ে যান দি মারিয়া। তার টোকায় বল ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বাইরে যায়। আগের রাউন্ডে বলিভিয়ার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করা মেসির ২৬তম মিনিটের ফ্রি-কিক অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

প্রথমার্ধের বাকি সময়েও বল দখলে আধিপত্য করে আর্জেন্টিনা। আক্রমণেও, তবে ধার ছিল না মোটেও। তাই বিরতির আগে আর নিশ্চিত কোনো সুযোগ তৈরি হয়নি।

দ্বিতীয়ার্ধেও একইরকম আক্রমণাত্মক শুরু করে আর্জেন্টিনা। তবে বারবার শেষে গিয়ে খেই হারাচ্ছিল তারা। পাল্টা-আক্রমণে ৫৪তম মিনিটে ম্যাচে দ্বিতীয়বার লক্ষ্যে শট নেয় স্বাগতিকরা। মিগেল আলমিরোনের দুরূহ কোণ থেকে নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন মার্তিনেস।

চার মিনিট পর বাঁ থেকে দি মারিয়ার ক্রসে মেসির শট ক্রসবার ঘেঁষে ভিতরে ঢুকতে যাচ্ছিল। শেষ মুহূর্তে কর্নারের বিনিময়ে ঠোকান গোলরক্ষক।

৬৪তম মিনিটে বেঁচে যায় আর্জেন্টিনা; আন্তোনিও সানাব্রিয়ার কাছ থেকে নেওয়া শট দারুণ রিফ্লেক্সে রুখে দেন মার্তিনেস। সাত মিনিট পর তোরিনোর এই ফরোয়ার্ডের কোনাকুনি শটে বল পোস্টের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়।

৮২ ও ৮৩তম মিনিটে আর্জেন্টিনার দুটি নিশ্চিত সুযোগ ব্যর্থ করে দেন গোলরক্ষক সিলভা। গিদো রদ্রিগেসের হেড ঝাঁপিয়ে ফেরানোর পর আলেহান্দ্রো গোমেসের জোরালো শটও ঠেকিয়ে দেন ৩৭ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক।

৮৮তম মিনিটে ১০ গজ দূর থেকে প্যারাগুয়ের কার্লোস গনসালেস উড়িয়ে মারলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়ে দু’দল।

ম্যাচের আগে প্যারাগুয়ে কোচ হুমকি দিয়ে বলেন, তারা যেকোনো দলের জন্যই কঠিন প্রতিপক্ষ। আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনিও প্রতিপক্ষকে সমর্থন করে বলেন, “তাদের বিপক্ষে আমরা যতবার খেলেছি, তারা আমাদের সমস্যায় ফেলেছে।” আবারও ঠিক তাই দেখা গেল।

এই নিয়ে শেষ ৬ বারের দেখায় দুই দলের জয় একটি করে, বাকি চার ম্যাচ ড্র।

লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইয়ে ৯ ম্যাচে পাঁচ জয় ও চার ড্রয়ে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে আর্জেন্টিনা।

আরেক ম্যাচে উরুগুয়ের মাঠে গোলশূন্য ড্র করে ফিরেছে কলম্বিয়া। ১০ ম্যাচে উরুগুয়ের পয়েন্ট ১৬ ও কলম্বিয়ার পয়েন্ট ১৪।

তাদের সমান ১০ ম্যাচ খেলা প্যারাগুয়ের পয়েন্ট ১২।