মালদ্বীপের কৌশল জানেন ব্রুসন

বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ কোচের জানাশোনা দুই বছরের। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দল বসুন্ধরা কিংসের হাল ধরার আগে মালদ্বীপের দল নিউ রেডিয়েন্টের কোচ ছিলেন অস্কার ব্রুসন। সেসময় তার প্রতিপক্ষ ছিলেন মালদ্বীপের বর্তমান কোচ সুজাইন আলি। স্বাভাবিকভাবে দুজনের কৌশল, পরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা আছে দুজনেরই। ব্রুসন তাই প্রতিশ্রুতি দিলেন ‘বন্ধু’র বিপক্ষে চমৎকার ফুটবল খেলার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2021, 07:43 PM
Updated : 6 Oct 2021, 07:43 PM

মালদ্বীপের রাজধানী মালের রাশমি ধান্দু স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। নতুন ভূমিকায় মুখোমুখি হবেন ব্রুসন ও সুজাইন।

দুজনের জাতীয় দলের দায়িত্ব পাওয়ার মধ্যেও আছে অদ্ভূত মিল। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর দিন দশেক আগে বাংলাদেশ দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব ওঠে ব্রুসনের কাঁধে। গত অগাস্টে মালদ্বীপের হাল ধরেছেন সুজাইন।

অল্প সময়ের মধ্যেই অবশ্য বাংলাদেশ দলকে নিজের মতো করে গুছিয়ে নিয়েছেন ব্রুসন। শ্রীলঙ্কাকে ১-০ গোলে হারিয়ে শুভসূচনার পর শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে ১-১ ড্র করে দারুণ আত্মবিশ্বাসী তার দল।

অন্যদিকে সুজাইনের শুরুটা ভালো হয়নি মোটেও। ভালো খেলেও কখনই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে না ওঠা নেপালের কাছে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১-০ গোলে হারে প্রতিযোগিতাটির শিরোপাধারীরা।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটি তাই মালদ্বীপের জন্য হয়ে উঠেছে ঘুরে দাঁড়ানোর মহারণ। হেরে গেলে ছিটকে যাওয়ার খাদের কিনারে চলে যাবে দলটি। অন্যদিকে দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশের সুযোগ আছে পাঁচ দল নিয়ে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতির এবারের আসরে ফাইনাল খেলা অনেকটাই নিশ্চিত করার।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) পাঠানো ভিডিও বার্তায় ব্রুসন জানালেন ধারাবাহিকতায় থাকার লক্ষ্য। দুদলেরই জয়ের সমান সুযোগ থাকবে বলেও মনে করেন এই স্প্যানিয়ার্ড।

“আমি জানি, সে আমাকে খুব ভালোভাবে চাপ দিবে। তাকে আমি খুব ভালোভাবেই জানি। এখানে দুই বছর ধরে সে আমার প্রতিপক্ষ ছিল। সে অভিজ্ঞ কোচ এবং আমি আমার দলের মধ্যে কোন আইডিয়া ইমপ্লিমেন্ট করতে চাই, সেটা বিশ্লেষণের জন্য সে যথেষ্ট সময় পেয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে তার কৌশলও আমি জানি।”

“আমি যে প্রতিশ্রুতি দিতে পারি, সেটা হচ্ছে কালকের ম্যাচটি উন্মুক্ত ম্যাচ হবে। আমরা দুই দলই জয়ের চেষ্টা করব। আমরা পরিকল্পনা করব জয়ের। আমাদের যে মোমেন্টাম রয়েছে, সেটা আমরা ধরে রাখতে চাই।”

দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ এই আসরে সেই ২০০৩ সালে শিরোপা জয়ের পথে মালদ্বীপকে সবশেষ হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে কেরালার আসরে দল হেরে যায় ৩-১ গোলে। সবশেষ ২০১৬ সালের প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশের ভীষণ তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল; মালদ্বীপের কাছে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল দল।

ম্যাচটি মালদ্বীপ খেলবে হাতের তালুর মতো চেনা মাঠে। দর্শক সমর্থনও থাকবে তাদের পক্ষে। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়েও বাংলাদেশের চেয়ে ২৯ ধাপ এগিয়ে মালদ্বীপ।

গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচে ব্রুসনের চিন্তা কিছুটা বাড়িয়েছে আতিকুর রহমান ফাহাদের চোট; পিঠের ব্যাথায় ভোগা এই মিডফিল্ডারের খেলা নিয়ে জেগেছে ঘোর অনিশ্চয়তা। কার্ডের খাঁড়ায় আগেই ছিটকে গেছেন ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ ও ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন। এসব কমতি নিয়েই চমৎকার ম্যাচ খেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশ কোচ।

“আমি মনে করি না, আমরা নিখুঁত হয়ে উঠেছি। আগেও বলেছি আমরা বেড়ে ওঠার পর্যায়ে আছি। তবে কে স্বাগতিক দেশ, তারা ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে কোথায় আছে, সেসব নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমি মনে করি, কালকের ম্যাচ ফিফটি-ফিফটি হবে। দুটো দলেরই শক্তিশালী এবং আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলার মনোভাব রয়েছে। কাল সম্ভবত আমরা চমৎকার একটা ম্যাচ দেখতে যাচ্ছি।”