মালদ্বীপের রাজধানী মালের রাশমি ধান্দু স্টেডিয়ামে শুক্রবার শুরু হবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ত্রয়োদশ আসর। উদ্বোধনী দিনে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টায় শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে ব্রুসনের দল।
সাফে বাংলাদেশের মতো শ্রীলঙ্কাও মাত্র একবারই শিরোপা জিতেছিল। ১৯৯৫ সালে আয়োজক হিসেবে। আর বাংলাদেশের সামনে ২০০৩-এ সাফল্য পাওয়ার পরের আসরেই লাল-সবুজের কেতন আবারও ২০০৫ সালে পাকিস্তানে ওড়ানোর সুযোগ এসেছিল। কিন্তু ভারতের কাছে ফাইনালে হেরে যায় তারা। এরপর ২০০৯ সালে সেমি-ফাইনাল খেলার পর বাংলাদেশের উল্টো রথে ছোটার শুরু। সবশেষ চার আসরে গ্রুপ পর্বের বৈতরণীই পার হতে পারেনি দল।
গত চার আসরের পরিসংখ্যান আশা দেখায় না মোটেও-১২ ম্যাচে ৭ হার, দুই ড্র ও তিন জয় বাংলাদেশের। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে অবস্থানও স্বপ্ন দেখার সাহস যোগায় না। এবারের পাঁচ দলের মধ্যে সবার চেয়ে এগিয়ে ভারত (১০৭), এরপর মালদ্বীপ (১৬০) ও নেপাল (১৬৮)। বাংলাদেশের (১৮৯) চেয়ে পিছিয়ে কেবল শ্রীলঙ্কা (২০৫)। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েই শুরু চান অধিনায়ক জামাল।
দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সবশেষ বাংলাদেশের দেখা হয়েছিল ২০০৯ সালে। সেবার এনামুল হকের জোড়া গোলে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। দুই দলের সবশেষ দেখা ২০২০ সালে, বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে। মতিন মিয়া ও মোহাম্মদ ইব্রাহিমের নৈপুণ্যে ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ।
গোল্ড কাপের ওই ম্যাচে জোড়া গোল করা মতিন ও এক গোল করা ইব্রাহিমও বর্তমান দলের সঙ্গী। কিন্তু এখানেও খুব বেশি আশা করা যাচ্ছে না; সবশেষ লিগে বসুন্ধরা কিংসের হয়ে গোলের খাতায় নামই যে তুলতে পারেননি মতিন!
সাফের প্রস্তুতির জন্য ব্রুসন সময়ও পেয়েছেন কম। জেমি ডেকে ‘ছুটি’ দিয়ে শেষ মুহূর্তে এই স্প্যানিশ কোচকে বেছে নেয় বাফুফে। সব মিলিয়ে এক সপ্তাহের প্রস্তুতিতে জেমির রক্ষণাত্মক কৌশল থেকে দলকে বের করে আক্রমণাত্মক খেলানোর ছক কষেছেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম পরীক্ষায় সে ছক কাজে দেবে বলেও বিশ্বাস ব্রুসনের।
“আমরা এক সপ্তাহের প্রস্তুতি নিয়েছি এবং আমি মনে করি, সুন্দর এই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে জয়ে শুরুর জন্য আমাদের আত্মবিশ্বাস সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। ফাইনাল খেলার কথা বলা বাস্তবসম্মত হবে না। কেননা, আমরা ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে নিচের দিক থেকে দ্বিতীয় দল এবং এটাকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না।”
“আগামীকাল (শুক্রবার) আমাদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা এবং উদ্বোধনী ম্যাচে ভালো শুরু করতে আমরা মুখিয়ে আছি। আমরা নিজেদের কৌশল আকঁড়ে ধরে খেলব এবং জয়ের চেষ্টা করব। র্যাঙ্কিংয়ে আমরা নিচের দিক থেকে দ্বিতীয়, কিন্তু আত্মবিশ্বাসের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ ১০ দলের একটি। এটা কেবল আমার বিশ্বাস নয়, সব খেলোয়াড়ের মধ্যে এই বিশ্বাস আমি অনুভব করছি।”
“আমরা মনে করি না, আমরা ফেবারিট। আমাদের উপর কোনো চাপ নেই। আমরা শান্ত এবং স্থির আছি, কিন্তু দায়িত্ব সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন আছি। শ্রীলঙ্কার খেলার ধরন সম্পর্কে জানি।”
“জানি গত তিন বছর এবং সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ ইতিবাচক ফল পাচ্ছে না। এটাও জানি, কেবল আমরা নই, শ্রীলঙ্কারও একই অবস্থা। তারাও চাইবে ভিন্ন কিছু চেষ্টা করে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে। তবে আমাদের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে। সাফে প্রভাব রাখার জন্য প্রস্তুত আমরা।”