পোর্তোকে উড়িয়ে দিল লিভারপুল

একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়ে দিল লিভারপুল। ম্যাচজুড়ে দাপুটে পারফরম্যান্সে পোর্তোকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল ইয়ুর্গেন ক্লপের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2021, 09:00 PM
Updated : 28 Sept 2021, 09:55 PM

প্রতিপক্ষের মাঠে মঙ্গলবার রাতে‘বি’ গ্রুপের ম্যাচটি ৫-১ গোলে জিতেছে লিভারপুল। দুটি করে গোল করেন মোহামেদ সালাহ ও দ্বিতীয়ার্ধে তার বদলি নামা রবের্তো ফিরমিনো। অন্য গোলটি আক্রমণভাগের আরেক সেনানী সাদিও মানের। স্বাগতিকদের একমাত্র গোলদাতা মেহদি তারেমি।

ম্যাচে ৬৭ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে লিভারপুল গোলের উদ্দেশে মোট ২১টি শট নেয়, যার ১৩টি ছিল লক্ষ্যে। আর পোর্তোর ৬ শটের ৩টি লক্ষ্যে ছিল।

প্রথম ম্যাচে এসি মিলানকে ৩-২ গোলে হারানো লিভারপুল শুরুতে পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে ভুগছিল। অষ্টাদশ মিনিটে প্রথম ভালো আক্রমণ থেকে এগিয়ে যায় তারা। বাঁ দিক দিয়ে এক ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে কার্টিস জোন্সের শট গোলরক্ষক ফেরালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। কাছ থেকে বল জালে পাঠান সালাহ।

২৩তম মিনিটে ডি-বক্সে জর্ডান হেন্ডারসনের শট প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের হাতে লাগলে পেনাল্টির আবেদন করে লিভারপুল। তবে রেফারির সাড়া মেলেনি। তিন মিনিট পর দিয়োগো জটার শটে এক হাতে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তা।

৩৮তম মিনিটে ভালো একটি সুযোগ পান পোর্তোর লুইস দিয়াস। তবে ডি-বক্সের ভেতর থেকে তার দুর্বল শট ঠেকাতে কোনো সমস্যা হয়নি লিভারপুল গোলরক্ষক আলিসনের।

৪৩তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে হেন্ডারসনের জোরালো শটে ঝাঁপিয়ে দারুণভাবে এক হাতে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান কস্তা। এক মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলে সফরকারীরা। ডান দিক থেকে জেমস মিলনারের নিচু ক্রসে দূরের পোস্টে সহজেই বল জালে পাঠান অরক্ষিত মানে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে লিভারপুলের আরও দুটি প্রচেষ্টা রুখে দেন কস্তা। রবার্টসনের শট ঠেকানোর এক মিনিট পর কাছ থেকে জটার ফ্লিক পা বাড়িয়ে ঠেকান তিনি।

পাল্টা আক্রমণে ৬০তম মিনিটে স্কোরলাইন ৩-০ করে ফেলে ক্লপের দল। জোন্সের পাস ডি-বক্সে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাঁ পায়ের শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন সালাহ।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবশেষ সাত ম্যাচে এটি সালাহর সপ্তম গোল। সব মিলিয়ে প্রতিযোগিতাটিতে তার গোল হলো ৩১টি।

পাঁচ মিনিট পর দুই গোলদাতা সালাহ ও মানেকে তুলে নিয়ে ফিরমিনো ও তাকুমি মিনামিনোকে মাঠে নামান লিভারপুল কোচ।

৭৪তম মিনিটে ব্যবধান কমায় পোর্তো। সতীর্থের ক্রসে ছয় গজ বক্সের মুখে দারুণ ডাইভিং হেডে গোলটি করেন ইতালিয়ান ফরোয়ার্ড তারেমি।

দুই মিনিট পরই প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের মারাত্মক ভুলে ব্যবধান আবার বাড়িয়ে নেয় লিভারপুল। নিজেদের অর্ধ থেকে বল বাড়ান জোন্স। কী বুঝে যে পোস্ট ছেড়ে অনেকটা বেরিয়ে আসেন কস্তা! সুযোগ বুঝে দূর থেকেই শট নেন ফিরমিনো। ছুটে গিয়ে শেষ মুহূর্তে ডাইভ দিয়ে কস্তা বল ফেরালেও ততক্ষণে তা গোললাইন পেরিয়ে যায়।

আর ৮১তম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলে দলের বড় জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন ফিরমিনো। জোন্সের শট একজন ঠেকানোর পর ঠিকানা খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। শুরুতে লাইন্সম্যান অফসাইডের পতাকা তুললেও ভিএআরে পাল্টায় সিদ্ধান্ত।

গ্রুপের আরেক ম্যাচে শুরুতে পিছিয়ে পড়ে শেষ দিকের দুই গোলে এসি মিলানকে ২-১ ব্যবধানে হারায় আতলেতিকো মাদ্রিদ। ম্যাচের বেশিরভাগ সময় অবশ্য একজন কম নিয়ে খেলে মিলান।

ঘরের মাঠে ২০তম মিনিটে রাফায়েল লেয়াওয়ের গোলে এগিয়ে যাওয়ার আট মিনিট পর মিলান ১০ জনের দলে পরিণত হয়, দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ফ্রাঙ্ক কেসি। ৮৪তম মিনিটে অঁতোয়ান গ্রিজমান সমতা ফেরানোর পর যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে আতলেতিকোর জয়সূচক গোলটি করেন লুইস সুয়ারেস।

দুই ম্যাচে শতভাগ সাফল্যে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে আছে লিভারপুল। একটি করে জয় ও ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদ। পোর্তোর পয়েন্ট ১, মিলানের শূন্য।