বাংলাদেশ ‘লুজার’ নয়, জামালদের বোঝাতে চান নতুন কোচ

প্রায় সব প্রতিপক্ষই র‌্যাঙ্কিংয়ে বেশ এগিয়ে। তাই লড়াই শুরুর আগেই হয়তো একটু পিছিয়ে যায় বাংলাদেশ। বেশি গোল হজম করা যাবে না, খেলোয়াড়দের মাঝে এমন রক্ষণাত্মক ভাবনা চলে আসে। এখানটায় পরিবর্তন চান অস্কার ব্রুসন। বাংলাদেশের নতুন কোচ জানালেন, ফুটবলারদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে কাজ করবেন তিনি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2021, 01:42 PM
Updated : 22 Sept 2021, 01:42 PM

প্রায় ১৪ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে ব্রুসন এতদিন কাজ করেছেন ক্লাব পর্যায়ে। ২০১৮ সাল থেকে কোচিং করাচ্ছেন বসুন্ধরা কিংসকে। বাংলাদেশের দলটি এই সময়ে জিতেছে পাঁচটি শিরোপা।

সদ্য শেষ হওয়া ২০২০-২১ মৌসুমের লিগেও কিংস ছিল দুর্দান্ত। ২৪ ম্যাচের মধ্যে ২১ জয় ও দুই ড্র তাদের। চার ম্যাচ হাতে রেখে লিগ শিরোপা নিশ্চিত করা দলটির হার মাত্র একটি। আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা মেলে কিংস লিগে গোল করেছে ৬০টি, হজম করেছে মাত্র ১০টি।

জাতীয় দলের পরিস্থিতি ঠিক উল্টো। একরকম হারের চক্রেই পড়ে আছে দলটি। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সাম্প্রতিক রেকর্ড বেশ খারাপ। গত চার আসর মিলিয়ে ১২ ম্যাচে ৭ হার, দুই ড্র ও তিন জয়। প্রতিটি আসরেই গ্রুপ পর্বে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের অভিযান।

এবার অনেক দূর যেতে চায় তারা। সেই লক্ষ্যে জেমি ডেকে ‘ছুটি’ দিয়ে ব্রুসনকে দায়িত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে)। বুধবার নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে নতুন ব্রুসন বুঝিয়ে দিয়েছেন কিংসের আগ্রাসী মনোভাব জাতীয় দলেও টেনে আনতে চান। জামাল-জিকোদের মনে ছড়িয়ে দিতে চান বিজয়ীর আত্মবিশ্বাস।

“দলের মানসিক দিক নিয়ে কাজ করতে চাই। ছেলেদের বোঝাতে চাই আমরা লুজার নই; কত গোল হজম করব-এটা ভেবে যেন মাঠে না নামি। … এক সপ্তাহের মধ্যে ফুটবলকে আমূল বদলে দেওয়া সম্ভব নয়। কিছু পরিবর্তন করলেই যে সর্বোচ্চ সাফল্য পাব, তা আমি বিশ্বাস করি না। কিন্তু এই পরিবর্তনে যদি দলের দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাসের উন্নতি হয়, সেটাও বড় পাওয়া হবে।”

“বিপিএলের সেরা খেলোয়ারড়রাই এই দলের অংশ। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, সেরা ক্লাবগুলোর সেরা খেলোয়াড়, যারা সচারচর জেতে, তাদের নিয়ে এই দল গড়া হয়েছে। অবশ্যই আপনারা বাংলাদেশের র‌্যাঙ্কিং জানেন। জাতীয় দল যখন খেলে, তখন গোল না হজম করার মানসিতা নিয়ে খেলে। আমরা এই মনোভাব বদলানোর চেষ্টা করব। আমি ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। কোনো চাপ অনুভব করছি না। আবারও বলতে চাইছি, ক্লাবে আমরা যে কাজটা করতাম, জাতীয় দলেও একই কাজের ধারাবাহিকতা রাখতে চাই আমরা।”

২৬ জনের প্রাথমিক দলে কিংসের ১০ খেলোয়াড়কে পাচ্ছেন ব্রুসন। তবে স্কোয়াডের বাকিদের প্রতিও একই রকম আস্থা রাখছেন ৪৪ বছর বয়সী এই কোচ। কঠোর পরিশ্রমের ভেলায় চেপে পার হতে চাইছেন সাফের বৈতরণী। তবে ব্যর্থ হলে দায় নিজের কাঁধেই নিতে প্রস্তুত তিনি।

“আমি বলতে চাইছি, এটা হবে পরিশ্রম করে যাওয়ার ধারাবাহিকতায় থাকা। কিছু পরিবর্তন হতে পারে, চারপাশের সবাই এটা বিশ্বাস করে বলেই আমি এখানে। আমিও বলতে পারি, কিছু একটা পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। আমরা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিততে যাচ্ছি-বিষয়টা ওভাবে বলব না। তবে হ্যাঁ, খেলোয়াড়দের উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমি সবকিছুতে ঐক্য আনতে পারব বলে আত্মবিশ্বাসী।”

“আমার চিন্তা, পরিকল্পনা ছেলেদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারব। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের ৫০ ভাগ সুযোগ আছে। ভিন্ন কিছুর স্বাদ তারা পেতে পারে। চিন্তার কিছু নেই। যদি পরিকল্পনা কাজে না দেয়, তাহলে আমিই প্রথম দায় নিব। কেননা, প্রধান কোচ হিসেবে এটা নেওয়া আমার দায়িত্ব।”