২০২০-২১ মৌসুমের লিগ শিরোপা কিংস নিশ্চিত করে চার ম্যাচ বাকি থাকতেই। আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে আসরে নিজেদের সবশেষ ম্যাচে পয়েন্ট আরেকটু বাড়িয়ে নিয়ে নিজেদের আগের রেকর্ড ভেঙেছে দলটি। ১-১ ড্রয়ে ২০১৮-১৯ মৌসুমে পাওয়া ৬৩ পয়েন্ট ছাড়িয়ে এবার থেমেছে ৬৫ পয়েন্টে।
শেষ ম্যাচে জিতলে অবশ্য কিংসের সামনে সুযোগ ছিল এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ৬৭ পয়েন্ট পাওয়া আবাহনীর পাশে বসার। ২০০৭ সালে প্রিমিয়ার লিগ নামকরণের পর ২০০৯-১০ মৌসুমে আবাহনী ১৩ দলের লিগে সর্বোচ্চ ৬৭ পয়েন্ট পেয়েছিল।
ওই রেকর্ডে ভাগ বসাতে না পারলেও কিংসের উদযাপনের কমতি হয়নি। ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজতেই শুরু হয় উচ্ছ্বাস-উৎসব। প্রতিপক্ষ কোচ, খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের আলিঙ্গনে বাঁধেন ব্রুসন। কিন্তু গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জাতীয় দল নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি এই স্প্যানিশ কোচ!
কদিন আগে জেমি ডেকে ‘ছুটি’ দিয়ে দুই মাসের জন্য ব্রুসনের হাতে জাতীয় দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। গুঞ্জন আছে আগামী ১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য বাংলাদেশের প্রাথমিক দলও আটকে আছে ব্রুসনের দায়িত্ব নিতে লিগ শেষের অপেক্ষার কারণে। কিন্তু এসব বিষয় নিয়ে ওঠা প্রশ্নে ইঙ্গিতপূর্ণ উত্তরই দিয়েছে কিংসের হয়ে পাঁচটি শিরোপা জেতা এই কোচ।
“আজকের দিনটির জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। যে কোনো ক্লাব কোচের জন্যই লিগ শিরোপা অনেক বড় অর্জন। এই ট্রফিটা আমি উপভোগ করতে চাই। জাতীয় দল নিয়ে আজ কোনো কথা হবে না। এটা একটা নতুন চ্যালেঞ্জ হবে। নিশ্চয় এটা নিয়ে কাল কথা হবে।”
২৪ ম্যাচে ২১ জয় ও দুই ড্র ও এক হার নিয়ে লিগ শেষ করেছে কিংস। প্রতিপক্ষে জালে ৬০ গোল দিয়ে হজম করেছে মাত্র ১০টি। এমন অসাধারণ পারফরম্যান্সে দল নিয়ে খুশি ব্রুসন ধন্যবাদ জানালেন সবাইকে। প্রশংসা করলেন তৃতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করা আবাহনীরও।
“সাফল্যের জন্য টিম ম্যানেজমেন্টের সকলেই কৃতিত্ব পাবে। দলের পারফরম্যান্সে সেভাবে উত্থান-পতন হয়নি। প্রায় একই তালে মৌসুমটা খেলে গেছি। ম্যানেজমেন্ট পার্থক্য গড়ে দেওয়ার মতো প্লেয়ার নিয়ে কাজটা সহজ করে দিয়েছে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলাতে পেরেছি। অনেক বেশি বিকল্প ছিল। আমি খুবই উপভোগ করেছি পুরো মৌসুমটা।”
“পুরো মৌসুমেই আবাহনী কঠিন প্রতিপক্ষ ছিল। (আজকের ম্যাচে) প্রথমে গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়েছি। তবে ফিরে এসে আমরা গোলের জন্য অলআউট ফুটবল খেলেছি। তবে পারিনি। কারণ আবাহনী খুব ভালো দল।”
সদ্য শেষ হওয়া লিগে দুই তরুণ কিংসের কাজী তারিক রায়হান ও আবাহনীর ওবায়দুর রহমান নবাবের খেলার আলাদাভাবে প্রশংসাও করলেন ব্রুসন। দুজনের সামনে দারুণ ভবিষ্যৎ দেখছেন ৪৪ বছর বয়সী এই কোচ।
“তারিক কাজী অসাধারণ প্রাপ্তি। খুবই কার্যকর একজন লেফটব্যাক। দেশেরও অনেকে আছে। এছাড়া কাতার প্রবাসী ওবায়দুর রহমান নবাবও অনেক ভালো। সে সামনের মৌসুমে আরও ভালো ফুটবল খেলবে।”
করোনাভাইরাসের কারণে গত মৌসুমে বাতিল হয়ে যাওয়া এএফসি কাপে খেলা এক ম্যাচে জিতেছিল কিংস। এবার দলটি গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিলেও হারেনি কোনো ম্যাচ। তবে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্ব পেরুতে না পারার আফসোস আছে বলেও জানালেন ব্রুসন।
“এএফসি কাপের জন্য খানিকটা আফসোস আছে। তবে এটা এএফসি কাপে আমাদের প্রথম মিশন ছিল। প্রথম মিশনে এক ম্যাচও হারিনি। এটা অবশ্যই ভালো একটা প্রাপ্তি। নতুন দলের জন্য বিশাল অভিজ্ঞতা। আশা করছি সামনে দল সাফল্যের দেখা পাবে।”