মালদ্বীপের রাজধানী মালের রাশমি ধান্দু স্টেডিয়ামে আগামী ১ অক্টোবর শুরু হবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলের ত্রয়োদশ আসর। ২০০৩ সালে একবারই শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। এর বাইরে ১৯৯৯ ও ২০০৫ সালের ফাইনালে উঠলেও দুইবারই ভারতের কাছে হেরেছিল দল।
২০০৯ সালের প্রতিযোগিতায় সর্বশেষ সেমি-ফাইনালে খেলা বাংলাদেশের পরের চার আসর কাটে চরম হতাশায়। চারবারই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় দল। এর মধ্যে তিনবার জামাল ছিলেন দলের সঙ্গী।
নিজের চতুর্থ সাফ রাঙিয়ে রাখার কথা তাই জোর গলায় বলতে পারছেন না জামালও। প্রিমিয়ার লিগে বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে ম্যাচের পর সাইফ স্পোর্টিংয়ের এই মিডফিল্ডার জানালেন, সাফে এবার পাঁচ দলের রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে ফাইনাল খেলতে ১০ পয়েন্ট লাগবে তাদের।
“আমরা অবশ্যই জিততে চাই। কিন্তু আমাদের ম্যাচ বাই ম্যাচ ভাবতে হবে। যদি বলি আমরা জিতব, তাহলে হবে না। কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, অনুশীলন করতে হবে। তাহলে ফল আসবে।”
“আমি আগেও বলেছি আমাদের একটা করে ম্যাচ নিয়ে ভাবতে হবে। যেহেতু সেমি-ফাইনাল নেই। চারটা ম্যাচ জিতলে আমাদের ফাইনাল খেলা নিশ্চিত। এর বাইরে কমপক্ষে চার ম্যাচের মধ্যে তিন জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট পেলে আমরা কনফার্ম ফাইনালে খেলতে পারব।”
সাফে সর্বোচ্চ সাতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। শ্রীলঙ্কা ১৯৯৫ সালে শিরোপা জিতেছিল। আর এবারের স্বাগতিক মালদ্বীপ এ পর্যন্ত দুবার দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সেরার মুকুট জয়ের স্বাদ পেয়েছে; ২০০৮ ও ২০১৮ সালে। ২০১৩ সালে সাফ জেতা আফগানিস্তান এখন আর খেলে না এই প্রতিযোগিতায়।
এবারের আসরে চার প্রতিপক্ষের মধ্যে শ্রীলঙ্কা (২০৫তম) কেবল ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের (১৮৮তম) চেয়ে পিছিয়ে। বাকি তিন দল ভারত (১০৫তম), মালদ্বীপ (১৫৮তম) ও নেপাল (১৬৮তম) এগিয়ে।
কদিন আগে কিরগিজস্তানে ত্রিদেশীয় আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টে র্যাঙ্কিংয়ে অনেক এগিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে খেলেছে বাংলাদেশে। জামাল জানালেন, কিরগিজস্তানে নতুন ফরমেশনের পরীক্ষায় ভালো করতে পারেননি তারা। তবে সাফের প্রতিপক্ষ র্যাঙ্কিংয়ের কাছাকাছি দল বলে তাদের সুযোগ আছে।
“অবশ্যই সুযোগ আছে। এখন আমরা ফিলিস্তিন ও কিরগিজস্তানের বিপক্ষে খেলেছি। ওরা আমাদের চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে ৮০ বা তারও বেশি ধাপ উপরে। যদি আমরা ১৪০, ১৩০ র্যাঙ্কিংয়ের দলের বিপক্ষে খেলি, অবশ্যই সুযোগ আছে আমাদের।”
“কিরগিজস্তানে যাওয়াটা আমাদের জন্য ভালো হয়েছে। কোচ ওখানে নতুন ফরমেশনে চেষ্টা করেছে। উনি মনে করেছে এই ফরমেশন হবে না। অধিকাংশ খেলোয়াড় লিগে যখন খেলে, তখন তারা ৪-৩-৩ ও ৪-৫-১ ফরমেশনে খেলে। কিরগিজস্তানে আমরা ৩-৪-৩ ফরমেশনে খেলার চেষ্টা করেছি। কোচও এই ফরমেশন চেষ্টা করেছে। কাজ হয় না। আমার মতে, আমাদের বেসিকে (৪-৩-৩) ফিরে যাওয়া উচিত।”
কিরগিজস্তান সফরে কানাডা ও ফ্রান্স প্রবাসী রাহবার ওয়াহেদ খান ও নাইব মোহাম্মদ তাহমিদ ইসলাম প্রথমবারের মতো খেলেন জাতীয় দলে। এই নতুনদের আরও সময় প্রয়োজন বলেও মনে করেন জামাল।
“নতুনরা ভালো অনুশীলন করেছে। আমি মনে করি, আরও সময় লাগবে। সেকেন্ড হাফে রাহবার আমার সঙ্গে খেলেছে। ১০-১৫ মিনিট পর বলছে ও আর পারছে না। আমি মনে করি, ওদের সময় লাগবে।”
মঙ্গলবার প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে এলিটা কিংসলের জোড়া গোলে বসুন্ধরা কিংসের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হেরেছে জামালের সাইফ স্পোর্টিং। নাইজেরিয়ান থেকে বাংলাদেশি হয়ে যাওয়া এই ফরোয়ার্ডকে সাফের দলে নিবন্ধন করিয়েছে বাফুফে। কিংসলের মতো স্ট্রাইকার দরকার আছে বলে মনে করেন জামাল।
“বক্সে বল হোল্ড করার মতো স্ট্রাইকার দরকার আছে। বক্স প্লেয়ার আমাদের টিমে নাই। যারা এখন আমাদের সামনে খেলে, তারা উইংয়ে খেলছে। নরমাল নাম্বার নাইন নাই। কিংসলে আসলে যদি ভালো খেলে, তাহলে সুযোগ পাবে।”
২০ তারিখ লিগ শেষের পর শুরু হবে জাতীয় দলের ক্যাম্প। সাফের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সারতে সময় খুব বেশি মিলবে না। জামাল অবশ্য জানালেন, আরও আগে ক্যাম্প শুরুর পক্ষে ছিলেন তিনি।
“আমি কোচকে বলেছি, আমরা একটু আগে অনুশীলন করলে দলের জন্য ভালো। জানি, কিংস ও ঢাকা আবাহনীর প্লেয়াররা পরে যোগ দিবে। কিন্তু বাকিদের ফিটনেস ধরে রাখতে হবে। বেশি অফ-ডে হলে ফিটনেস থাকে না। কিন্তু কোচ বলছে এটা বাফুফের সিদ্ধান্ত, তারাই সিদ্ধান্ত নিবে।”