ইউএস ওপেনের মেয়েদের এককে দুই টিনএজারের ফাইনালে কানাডার লায়লা ফার্নান্দেজকে ৬-৪, ৬-৩ গেমে হারিয়ে বাজিমাত করেন রাডুকানু। গড়েন গ্র্যান্ড স্ল্যামের ইতিহাসে বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে শিরোপা জয়ের অনন্য কীর্তি।
রাডুকানুর হাত ধরেই ঘুচেছে ব্রিটিশদের ৪৪ বছরের অপেক্ষার। ১৯৭৭ সালে উইম্বলডনে ভার্জিনিয়া ওয়েডের পর কোনো মেজরের নারী এককে ট্রফিজয়ী পেল ব্রিটেন। অ্যামাজন প্রাইমে ব্রিটেনের সাবেক নাম্বার ওয়ান টিম হেনম্যানের সঙ্গে আলাপচারিতায় ১৭ দিনের লম্বা পথচলা নিয়ে নিজের অনুভূতি জানান রাডুকানু।
“গতকাল অদ্ভূত সব অনুভূতি হচ্ছিল, ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না-আমার মনে হয়, এমনটাই স্বাভাবিক। যখন বেরিয়ে এলাম, তখন সবকিছু স্বাভাবিক হলো।”
বাছাইপর্বের তিনটিসহ এই ১০ ম্যাচে একটি সেটও হারেননি র্যাঙ্কিংয়ে ১৫০তম স্থানে থেকে আসর শুরু করা রাডুকানু। প্রত্যেকটি ম্যাচ জেতেন সরাসরি সেটে। ফাইনালের শেষ পর্যায়ে গিয়ে অবশ্য ক্ষণিকের জন্য খেই হারানোর শঙ্কা জেগেছিল। দ্বিতীয় সেটে ৫-৩ গেমে এগিয়ে থাকার সময় পায়ে আঘাত পান তিনি। তবে মেডিকেল টাইম আউট নিয়ে ফেরার পর আর বেশি সময় নেননি, দুর্দান্ত একটি ‘এইস’ মেরে নিশ্চিত করেন শিরোপা।
“প্রথম সেটের জন্য কঠিন লড়াই করতে হয়েছিল এবং দ্বিতীয় সেটে নিজেকে এগিয়ে রাখতে হয়েছিল। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোয় আমি ছোঁ মেরে পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়েছি সার্ভ দিয়ে।”
“আমি সবসময় একটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের স্বপ্ন দেখতাম। এমন কথা বলাই যায়। কিন্তু জয়ের সেই বিশ্বাসটা নিজের মধ্যে রাখা যেটা আমি রেখেছি এবং সত্যিই জিতেছি…এখন যেন আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না।”
“যখন ছোট্ট ছিলাম, তখন থেকে এই পথে চলা শুরু করেছিলাম। আমি মনে করি, সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে-জয়ের মুহূর্ত স্বপ্নাতুর চোখে ধারণ করতে হবে এবং দলের সবার সঙ্গে উদযাপন এবং বেদিতে সবার উপরে ওঠার চেষ্টা করতে হবে। গত কয়েক রাত আমার মাথার মধ্যে এটাই ঘুরপাক খেয়েছে; এই ভাবনা নিয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়েছি।”
“এটা টেনিসে মেয়েদের ভবিষ্যৎ এবং দুর্দান্ত এই খেলাটির দারুণ গভীরতা দেখাচ্ছে-এ আসরে খেলা প্রতিটি খেলোয়াড়ের যেকোনো টুর্নামেন্টে শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা আছে, দেখাচ্ছে সেটাও।”
“(দ্বিতীয় সেটে) কোনোভাবে পড়ে গিয়েছিলাম আমি…প্রার্থনা করছিলাম যেন ডাবল ফল্ট না করি। দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলা হচ্ছিল। আশা করি, আমরা আরও অনেক টুর্নামেন্টে খেলতে পারব এবং ফাইনালও খেলব।”
ফাইনালে হেরে গেলেও ফার্নান্দেজের ট্রফির লড়াইয়ে আসার গল্পটাও দারুণ রোমাঞ্চকর। র্যাঙ্কিংয়ে ৭৩তম স্থানে থেকে টুর্নামেন্ট শুরু করা কানাডার এই তরুণী ফাইনালের পথে একে একে বিদায় করেন তৃতীয় রাউন্ডে গতবারের চ্যাম্পিয়ন নাওমি ওসাকা, চতুর্থ রাউন্ডে আঞ্জেলিক কেরবার, কোয়ার্টার-ফাইনালে পঞ্চম বাছাই এলিনা সলিতোলিনাকে ও সেমি-ফাইনালে দ্বিতীয় বাছাই আরিনা সাবালেঙ্কাকে। খুব কাছে এসে স্বপ্নভঙ্গের হতাশা সঙ্গী হলেও রাডুকানুকে অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি ফার্নান্দেজ।
“দিনটা কঠিন যাবে, কিন্তু এমা চমৎকার খেলেছে। তাকে অভিনন্দন। নিজেকে নিয়েও আমি গর্বিত এবং দর্শক সমর্থন ছিল চমৎকার। নিউ ইয়র্ককে অসংখ্য ধনব্যাদ। ধন্যবাদ সবাইকে।”