বাছাইপর্ব থেকে তার ফাইনাল পর্যন্ত উঠে আসার অভিযানই ছিল এক কথায় অবিশ্বাস্য। বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামে এটিই যে তার প্রথম অংশগ্রহণ। সেখানে মুকুটও জয় করে রাডুকানু তাক লাগিয়ে দিলেন টেনিস বিশ্বকে।
মেয়েদের এককে সাড়া জাগানো দুই টিনএজারের ফাইনালে ৬-৪, ৬-৩ গেমে জিতে অনন্য কীর্তি গড়লেন ১৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ তারকা।
গ্র্যান্ড স্ল্যামের ইতিহাসে বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে শিরোপা জয়ের ইতিহাস গড়লেন তিনি। সেই সঙ্গে ঘুচল ব্রিটিশদের ৪৪ বছরের অপেক্ষার। ১৯৭৭ সালে উইম্বলডনে ভার্জিনিয়া ওয়েডের পর কোনো মেজরের নারী এককে ট্রফিজয়ী পেল ব্রিটেন।
এই ১০ ম্যাচে একটি সেটও হারেননি র্যাঙ্কিংয়ে ১৫০তম স্থানে থেকে আসর শুরু করা রাডুকানু। প্রত্যেকটি ম্যাচ জেতেন সরাসরি সেটে এবং প্রতিটি লড়াইয়েই ফুটে ওঠে তার আগ্রাসী মনোভাব ও প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার প্রবল ইচ্ছাশক্তি।
জিতেই দুই হাতে মুখ ঢেকে কোর্টে শুয়ে পড়েন রাডুকানু, যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না তার! সবচেয়ে কম বয়সী ব্রিটিশ খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের ইতিহাসও লেখা হয়ে গেল তাতে।
আগামী ১৩ নভেম্বর ১৯ বছর পূর্ণ করতে যাওয়া রাডুকানু কীর্তি গড়েন আরও বেশ কিছু। ২০০৪ সালে মারিয়া শারাপোভার পর সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় (শারাপোভা জিতেছিলেন সে বছরের উইম্বলডনে)। ২০১৪ সালের সেরেনা উইলিয়ামসের পর প্রথম নারী হিসেবে কোনো সেট না হেরে ইউএস ওপেন জয়।
ফাইনালে হেরে গেলেও ফার্নান্দেজের ট্রফির লড়াইয়ে আসার গল্পটাও কম বিস্ময়কর নয়। নাওমি ওসাকা, আঞ্জেলিক কেরবারদের মতো তারকাদের হারিয়ে ফাইনালে ওঠেন তিনি। রাডুকানুর সঙ্গে মিলে জন্ম দেন গ্র্যান্ড স্ল্যামের ইতিহাসে নারী-পুরুষ মিলে প্রথম এমন ফাইনালের, যেখানে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীই অবাছাই খেলোয়াড়!
অনেক শক্ত বাধা পেরিয়ে ফাইনালে উঠলেও রাডুকানুর সামনে কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেননি ফার্নান্দেজ।
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে অচেনা ফার্নান্দেজ এখন যেন টেনিস বিশ্বের মধ্যমণি। টুইটারে তাকে অভিনন্দন জানান রড লেভার, মার্তিনা নাভ্রাতিলোভার মতো কিংবদন্তিরা।
এই শিরোপা জয়ে ১৫০ নম্বর থেকে এক লাফে র্যাঙ্কিংয়ে ২৩ নম্বরে উঠে আসবেন রাডুকানু। হয়ে যাবেন ব্রিটেনের এক নম্বর। সেই সঙ্গে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে ১৮ লাখ পাউন্ড!