জোড়া গোলে রঙিন শুরু রোনালদোর

‘রোনালদো ইজ ব্যক’-লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে এক ভক্তের সে কী উল্লাস। অনেকের গায়ে জড়ানো রোনালদো লেখা জার্সি। উল্লাস-উচ্ছ্বাস সবই যেন পর্তুগিজ তারকাকে ঘিরে। ওল্ড ট্র্যাফোর্ড হয়ে উঠল রোনালদোময়। মাঠের লড়াইও অনেকটা তাই। শুরুতে এগিয়ে নেওয়া দলকে দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে আবারও পথ দেখালেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। এনে দিলেন দারুণ এক জয়। স্বপ্নের মতোই শুরু হলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে তার দ্বিতীয় অভিষেক।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2021, 03:56 PM
Updated : 11 Sept 2021, 07:16 PM

প্রিমিয়ার লিগে শনিবার নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৪-১ গোলে জিতেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। রোনালদোর জোড়া গোলের পর অসাধারণ নৈপুণ্যে ব্যবধান বাড়ান ব্রুনো ফের্নান্দেস। এরপর শেষ গোলটি করেন জেসে লিনগার্ড।

বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণেও আধিপত্য করা উলে গুনার সুলশারের দল ম্যাচে মোট ২১টি শট নেয়, যার সাতটি লক্ষ্যে। আর নিউক্যাসলের ১২ শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে।

ঘরের ছেলে ঘরে ফিরেছে। তাকে আবারও প্রিয় দলের জার্সিতে দেখতে রোমাঞ্চিত ইউনাইটেড সমর্থকদের ভিড়ে গ্যালারিতে যেন তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।

ম্যাচের নবম মিনিটেই দলকে উদযাপনের উপলক্ষ এনে দিতে পারতেন রোনালদো। ফের্নান্দেসের দূরের পোস্টে বাড়ানো ক্রস খুঁজে নেয় পর্তুগাল অধিনায়ককে, দুরূহ কোণ থেকে প্রথম প্রচেষ্টায় শট নিতে গিয়ে পড়ে যান তিনি।

দুই মিনিট পর বাঁ দিক দিয়ে দারুণভাবে একজনকে এড়িয়ে বক্সে ঢুকে রোনালদোর নেওয়া জোরালো শট পাশের জাল কাঁপায়। চাপ ধরে রেখে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে ইউনাইটেড। কিছুক্ষণ পর কর্নারে রাফায়েল ভারানের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

অবশেষে বিরতির ঠিক আগে মেলে জালের দেখা। ম্যাসন গ্রিনউডের সোজাসুজি শট ঠেকাতে গিয়ে তালগোল পাকান গোলরক্ষক। ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় থাকা রোনালদো আলগা বল টোকায় জালে পাঠান। উল্লাসে ফেটে পড়ে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড।

জোড়া গোলে দ্বিতীয় মেয়াদে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে অভিষেক রাঙিয়েছেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। ছবি: রয়টার্স

১২ বছর ১২৪ দিন পর আবারও প্রিমিয়ার লিগে জালের দেখা পেলেন রোনালদো। ম্যানচেস্টার ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যাওয়ার বছর ২০০৯ সালের মে মাসে সবশেষ ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে গোল করেছিলেন তিনি। প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে তার চেয়ে বেশি ব্যবধানে কেবল একজনই গোল পেয়েছেন; ইংলিশ ডিফেন্ডার ম্যাট জ্যাকসন, ১৩ বছর ১৮৭ দিন (১৯৯৩ সালের পর আবার ২০০৬ সালে)।

মাঝে মধ্যে নিউক্যাসল পাল্টা আক্রমণে উঠলেও সুবিধা করতে পারছিল না। তবে ৫৬তম মিনিটে দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে স্বাগতিকদের স্তব্ধ করে দেয় তারা। সতীর্থের পাস ডি-বক্সে পেয়ে কোনাকুনি শটে সমতা টানেন হাভি মানকিলো।

তাদের সে স্বস্তি অবশ্য স্থায়ী হয় মিনিট পাঁচেক। ৬২তম দারুণ নৈপুণ্যে আবারও দলকে এগিয়ে নেন রোনালদো। লুক শয়ের পাস পেয়ে দুই জনের মধ্যে দিয়ে প্রথম ছোঁয়ায় বল সামনে বাড়িয়ে নিচু শটে গোলরক্ষকের পায়ের ফাঁক দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার।

সব মিলিয়ে এই জার্সিতে তার মোট গোল হলো ১২০। ছয় বছরের প্রথম মেয়াদে করেছিলেন ১১৮টি।

৮০তম মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে ব্যবধান বাড়ানোর পাশাপাশি জয়টাও প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন ফের্নান্দেস। অনেক দূর থেকে বুলেট গতির শটে ঠিকানা খুঁজে এই পর্তুগিজ মিডফিল্ডার।

আর যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে দারুণ পাসিং ফুটবলে ওঠা আক্রমণে স্কোরলাইন ৪-১ করেন লিনগার্ড। পল পগবার পাস বক্সে পেয়ে একজনকে কাটিয়ে নিচু শটে গোলটি করেন ইংলিশ মিডফিল্ডার।

লিগে এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় ও আসরে তৃতীয় জয় পেল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সঙ্গে এক ড্রয়ে চার ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠেছে তারা।