২ বছর পরপর বিশ্বকাপের বিপক্ষে উয়েফা

দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজনের কথা ভাবছে ফিফা। তবে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থার এই পরিকল্পনা উয়েফা এবং ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোর বাধার মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উয়েফা প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দের চেফেরিনও বললেন, বিশ্বকাপের এই পরিবর্তনের বিষয় নিয়ে তারা ‘উদ্বিগ্ন’।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Sept 2021, 04:13 PM
Updated : 4 Sept 2021, 04:13 PM

আন্তর্জাতিক ম্যাচের বার্ষিক সূচি নতুন করে সাজানোর অংশ হিসেবে দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজনের ধারণা নিয়ে মাঝেমধ্যেই বলতে শোনা যাচ্ছে ফিফার বিশ্ব ফুটবল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান আর্সেন ভেঙ্গারকে। এ সপ্তাহে ফ্রান্সের ক্রীড়া প্রত্রিকা লেকিপেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও বিশ্বকাপের চার বছরের প্রথা পরিবর্তনের জন্য পুনরায় তার সমর্থন ব্যক্ত করেন আর্সেনালের সাবেক এই কোচ।

তবে ইউরোপিয়ান ফুটবল সংস্থার সূত্রের বরাত দিয়ে শনিবার রয়টার্স জানায়, ফিফার এই ধরনের পরিবর্তন আনার যেকোনো প্রচেষ্টা উয়েফা, ইউরোপিয়ান ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের (ইসিএ) বাধার মুখে পড়বে। বড় ঘরোয়া লিগগুলোর সমর্থন পাওয়ার সম্ভাবনাও কম।

ফুটবলের সমর্থক গোষ্ঠী ‘ফুটবল সাপোর্টার্স ইউরোপ’-কে লেখা চিঠির জবাবে চেফেরিন বলেন, দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে ‘ফুটবল বিশ্ব উদ্বিগ্ন।’ উয়েফা প্রধানের লেখা চিঠির একটি কপি রয়টার্স দেখেছে বলে দাবি করা হয়েছে।

“এই সংস্কার বিশ্ব ফুটবলের ওপর যে প্রভাব ফেলতে পারে, সেটা ভেবে সবাই খুব চিন্তিত। ফিফা তাদের এই প্রস্তাবকে এগিয়ে নিতে প্রচারাভিযান চালাতে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। যদিও এই ধরনের কোনো প্রস্তাব কনফেডারেশন, জাতীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, লিগ, ক্লাব, খেলোয়াড়, কোচ এবং ফুটবল সংশ্লিষ্ট কারও কাছে উত্থাপন করা হয়নি।”

ভেঙ্গারের পরিকল্পনা হলো, প্রতি বিশ্বকাপের পরের বছর হবে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ও কোপা আমেরিকার মতো মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট। এর ফলে মেয়েদের বিশ্বকাপ ও তাদের মহাদেশীয় টুর্নামেন্টের সূচি কেমন হবে, তা স্পষ্ট নয়।

“ফিফার পরিকল্পনার খবরগুলো নিয়ে উয়েফা ও এর জাতীয় সংস্থাগুলো সতর্ক এবং গভীরভাবে উদ্বিগ্ন”-বলেন চেফেরিন।

ফিফা জানিয়েছে, এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে এবং কনফেডারেশন ও সদস্য সংস্থাগুলোসহ সব অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা সামনের দিনগুলিতেও চলবে। এ বিষয়ে ফুটবল সমর্থকদের পরামর্শও নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ফিফার একজন মুখপাত্র।

তবে ইউরোপের ক্লাব এবং লিগগুলো যে তাদের খেলোয়াড়দের জাতীয় দলের প্রতিযোগিতায় অতিরিক্ত সময় ব্যয় করার পক্ষে নয়, এটা স্পষ্ট।

দুই বছর পরপর বিশ্বকাপ ও নারী বিশ্বকাপ আয়োজনের সম্ভাব্যতা যাচাই করার জন্য গত মে মাসে ফিফা কংগ্রেসে ভোট হয়। যেখানে ১৬৬টি জাতীয় দলের ফেডারেশন পক্ষে এবং ২২টি বিপক্ষে ভোট দেয়।

দুই বছর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের এই প্রস্তাবটা প্রাথমিকভাবে দিয়েছিল সৌদি আরব ফুটবল ফেডারেশন। তবে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এটিকে ‘খোলামেলা ও বিশদ’ বলে বর্ণনা করেন।

মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট এবং বিশ্বকাপের আগে বছরজুড়ে নিয়মিত বাছাইপর্বের বর্তমান পদ্ধতিটি সেরা মডেল কিনা, সেই প্রশ্নও তোলেন ফিফা প্রধান।

“আমরা সত্যিই কি মনে করি ফুটবলের জন্য এটি সঠিক পথ? যখন আমরা শুনছি যে সমর্থকরা বলছেন, তারা আরও অর্থবহ খেলা চায়, কম অর্থহীন খেলা। এই সব বিষয় বিবেচনা করতে হবে।”

“আমরা এটি নিয়ে আলোচনা করব, বিশ্লেষণ করব। তবে সব আলোচনায় আমরা খেলার বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেব, বাণিজ্যিক বিষয়গুলোকে নয়।”

বিশ্বকাপে যেকোনো পরিবর্তনের জন্য ফিফার কংগ্রেসে ভোট হতে হবে, যেখানে আছে ২১১টি জাতীয় ফুটবল ফেডারেশন।

পুরুষ ফুটবল বিশ্বকাপের আগামী আসর বসবে কাতারে, ২০২২ সালে। এর পরের আসর ২০২৬ সালে হওয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডার যৌথ আয়োজনে।