বার্সার ‘মন ভোলানো কথাগুলোই’ এমেরসনের কষ্ট

স্বপ্ন ছিল বার্সেলোনার একাদশে নিয়মিত হওয়ার। তা তো হলোই না, এমনকি কাতালান দলটিতে থাকতেই পারলেন না এমেরসন। তবে যে উপায়ে টটেনহ্যাম হটস্পারের কাছে তাকে বিক্রি করা হয়েছে, তা ভালো লাগেনি ব্রাজিলিয়ান এই ডিফেন্ডারের।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2021, 01:33 PM
Updated : 3 Sept 2021, 02:01 PM

সবকিছু ঠিকঠাকভাবেই এগোচ্ছিল। গত জুনে রিয়াল বেতিস থেকে বার্সেলোনায় ফেরার পর গেতাফের বিপক্ষে দলের সবশেষ ম্যাচের একাদশেও ছিলেন এমেরসন। কিন্তু হঠাৎ করেই জানতে পারেন, আর্থিক দুরাবস্থার কারণে তাকে রাখতে পারছে না দল। ভালো ভালো কথা বলে শেষ পর্যন্ত তাকে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে বলে মনে করেন ২২ বছর বয়সী এই রাইট-ব্যাক।

সম্প্রতি স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কাকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে কঠিন সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করেন এমেরসন। কীভাবে বার্সেলোনা তাকে বিক্রি করে দেওয়ার কথা জানিয়েছিল, শোনালেন সেই গল্প।

“ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো। তারা আমাকে বলতে লাগলেন যে ক্লাবের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়, তারা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং আমাকে বিক্রি করে দেওয়া তাদের জন্য ভালো হবে। আমি আবারও বললাম যে থাকতে চাই, কারণ এখানে খেলা আমার স্বপ্ন এবং বার্সেলোনায় অবদান রাখতে চাই।”

“আত্মবিশ্বাস ছিল যে নিজের সেরা অবস্থায় থাকলে এখানে সফল হতাম। তবে একটা সময় আমি বুঝতে পারলাম, আসলে যা কিছুই হোক না কেন, তারা আমাকে চলে যেতে বলছে। মন ভোলানো কথা দিয়ে আসলে তারা আমাকে তাড়িয়ে দিচ্ছে।”

পরিস্থিতি যে হুট করে এমন বদলে যাবে, তা একেবারেই ভাবেননি এমেরসন।

“ভেবেছিলাম ক্লাব আমাকে রাখতে চায়। গত রোববার আমি শুরুর একাদশে (গেতাফের বিপক্ষে) খেলেছিলাম। পরদিন ঘুম থেকে উঠে শান্তভাবেই অনুশীলনে যাই। সেখানে গিয়ে বুঝতে শুরু করলাম, অনেক কিছু ঘটছে, টটেনহ্যামের প্রতিনিধি বার্সেলোনার সঙ্গে কথা বলছে এবং বিষয়টা তখন আসলে প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কি ঘটছিল, বুঝতে পারছিলাম না; কারণ আমি কিছুই জানতাম না।”

“বিকেলে ক্লাব আমাকে অনুশীলন মাঠে ডেকে পাঠাল, কারণ আমার সঙ্গে কথা বলতে চায় তারা। আর সেখানে গিয়ে বুঝলাম, তারা আমাকে বিক্রি করতে চায়।”

চুক্তির মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর। চাইলে বার্সেলোনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতে পারতেন এমেরসন। কিন্তু ভালোবাসার ক্লাবে মনে কষ্ট নিয়ে থাকতে চাননি, চেয়েছেন সুখী হতে।

“আমার প্যাশন হলো খেলা। জানি, একজন চুক্তিবদ্ধ ফুটবলার হিসেবে বলতে পারতাম যে আমি থাকব। কিন্তু আমি এমন একজন মানুষ, যে সুখী হতে চাই। যে ক্লাবকে ভালোবাসি, সেখানে কষ্ট নিয়ে থাকতে চাইনি। বুঝতে পেরেছিলাম যে তারা আমাকে রাখতে চাচ্ছে না। তাই আমি চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। নিজেকে বলেছিলাম, দুঃখ নিয়ে আমি এখানে থাকতে চাই না।”

প্রথম দফায় ব্রাজিলের ক্লাব আতলেতিকো মিনেইরো থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে এমেরসনকে দলে টেনেছিল বার্সেলোনা। সেই সময়ই তাকে রিয়াল বেতিসে বেঁচে দেয় তারা। তখন এটাকে ‘ত্রিমুখী চুক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেছিল কাতালান দলটি।

দুই মৌসুম বেতিসে কাটানোর পর গত জুনে তাকে ফিরিয়ে আনে বার্সেলোনা। চলতি মৌসুমে রোনাল্ড কুমানের দলের হয়ে লা লিগায় প্রথম তিন ম্যাচেও খেলেন তিনি।

কেবল আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার ভাবনা থেকে কি তাকে ব্যবহার করা হয়েছে?-জবাবে এমেরসন প্রথমে বলেন, “ব্যবহার করা হয়েছে- বলাটা ঠিক নয়। তবে যেভাবে এটা হয়েছে তাতে আমি ব্যথিত। তারা এটা ভিন্নভাবেও করতে পারত। সবকিছু ঠিক করার আরও উপায় ছিল।”

“এখানে আসার পর আমি নিশ্চিত ছিলাম যে বার্সেলোনা আমাকে বেচতে চায় না। কিন্তু পরে যা কিছু হলো, তা থেকে আমি পরিষ্কার যে, বিক্রি করার উদ্দেশেই তারা আমাকে দলে টেনেছিল।”