২০২২ কাতার বিশ্বকাপের বাছাইয়ে বুধবার রাতে রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারায় পর্তুগাল। শুরুর দিকে পেনাল্টি মিস করা রোনালদো শেষ দিকে সাত মিনিটের মধ্যে জোড়া গোলে নিশ্চিত করেন দলের জয়।
গত জুন-জুলাইয়ে হওয়া ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে সর্বোচ্চ পাঁচ গোল করে ইরানের কিংবদন্তি ফুটবলার দাইয়ের ১০৯ গোলের রেকর্ড স্পর্শ করেন রোনালদো।
আইরিশদের বিপক্ষে ম্যাচে দলের অতি প্রয়োজনের মুহূর্তে ৮৯তম মিনিটে হেডে দাইকে ছাপিয়ে যান রোনালদো। আর যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে আরেকটি হেডে নিশ্চিত করেন জয়। আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার গোল এখন ১১১টি। ইন্সটাগ্রামে দীর্ঘ পোস্টে এই অর্জনের আনন্দ ভক্ত-সমর্থকদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন রোনালদো।
“এমনকি আমি নিজের অনুভূতি শব্দে প্রকাশ করতে পারছি না। অবিশ্বাস্য আনন্দে আমি শিহরিত! এগিয়ে যাও, পর্তুগাল! এগিয়ে যাও!”
“ক্যারিয়ারে আমি যত রেকর্ড ভেঙেছি…তার মধ্যে এটা আমার কাছে খুবই বিশেষ কিছু এবং নিশ্চিতভাবেই এটা আমার অর্জনের শোকেসে থাকবে, যেটা সত্যিই আমাকে গর্বিত করেছে।”
১৯৯৩-২০০৬ সালের ক্যারিয়ারে রেকর্ডটি গড়েছিলেন দাই। ১৮০তম ম্যাচ খেলতে নেমে তাকে ছাড়িয়ে গেলেন সম্প্রতি ইউভেন্তুস থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফেরা রোনালদো।
“প্রথমত, দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা সব মুহূর্তই আমার কাছে বিশেষ মুহূর্ত। কারণ প্রতিটা সময় আমার মধ্যে একটা অনুভূতি কাজ করে যে আমি পর্তুগালকে ডিফেন্ড করতে এবং পর্তুগিজরা কী দিয়ে তৈরি, সেটা বিশ্বকে দেখাতে নামছি। দ্বিতীয়ত, আমার ওপর সবসময়ই জাতীয় দলের প্রতিযোগিতাগুলোর প্রভাব অনেক, কারণ অন্যান্য গ্রীষ্মে ইউরো ও বিশ্বকাপে আমার আদর্শ খেলোয়াড়দের পর্তুগালের পতাকার জন্য লড়াই করা দেখতে দেখতে আমি বেড়ে উঠেছি।”
“সর্বোপরি, পর্তুগালের হয়ে ১১১ গোল করার অর্থ হচ্ছে ১১১টি মুহূর্ত, যেমন একটি অভিজ্ঞতা আজ আলগার্ভেতে আমাদের হয়েছে, এমন মুহূর্তগুলো সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লাখো লাখো পর্তুগিজদের জন্য আনন্দের ও সম্মিলনের মুহূর্ত। তাদের জন্য প্রতিটি ত্যাগই মূল্যবান।”
দাইকেও প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি দেশের হয়ে শেষ ৪৭ ম্যাচে ৪৯ গোল করা রোনালদো। ৩৬ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন নিজের সিংহাসনকে আরও উঁচুতে তোলার।
“এই মুহূর্তটা আমার কাছে এতটা মূল্যবান ও আনন্দময় হয়ে ওঠার পেছনে কৃতিত্ব আছে আলি দাইয়েরও। এমন উঁচু পর্যায়ে মানদণ্ডটা তিনিই দাঁড় করিয়েছিলেন। কিছু সময় তো আমিও ভাবতে শুরু করেছিলাম, হয়তো কখনোই তাকে ছুঁতে পারব না। দীর্ঘদিন ধরে রেকর্ডটা ধরে রাখার জন্য ‘শারিয়ারকে’ অভিনন্দন এবং যখনই আমি গোল করেছি এবং তার ওই অসামান্য সংখ্যাটার কাছ থেকে আরও কাছে এসেছি, সবসময় তিনি আমার প্রতি ভীষণ শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন-এজন্য তাকে ধন্যবাদ।”
“পর্তুগাল, তোমাকে ধন্যবাদ। এই পথচালাকে অবিস্মরণীয় করে তোলার জন্য আমার সব সতীর্থ এবং প্রতিপক্ষকে ধন্যবাদ। সামনের দিনগুলোতেও মাঠে আমাদের দেখা হবে। এখনই থামছি না আমি….।”