মালদ্বীপের রাজধানী মালের রাশমি ধান্দু স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। বেঙ্গালুরু এফসি ও মাজিয়ার বিপক্ষে জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপে শীর্ষে মোহন বাগান। ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে কিংস।
বেঙ্গালুরু এফসির বিপক্ষে ড্র করে পথচলাটা কঠিন করে তুলেছে কিংসই। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে নকআউট পর্বে যেতে জয় ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা খোলা নেই বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নদের সামনে। বাস্তবের শক্ত জমিনে পা রেখে ব্রুসন দলকে বার্তা দিচ্ছেন ধৈর্য্য ধরার।
“এ মুহূর্তে দুই দলই পুরোপুরি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় আছে। গ্রুপে এই দুটি দলেরই কেবল সুযোগ আছে প্রতিযোগিতার পরের রাউন্ডে যাওয়ার। আগামীকাল খুবই দীর্ঘ ৯০ মিনিটের ম্যাচ হবে এবং আমাদেরকে স্মার্ট হতে হবে এবং সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমি নিশ্চিত, ফাইনাল রাউন্ডে ওঠার জন্য তিন পয়েন্ট পেতে আমরা সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারব।”
“আমাদের এই আত্মবিশ্বাসের কারণ, আমরা এই মৌসুমে মাত্র একটা ম্যাচ হেরেছি এবং আমি মনে করি না, আগামীকাল দ্বিতীয় হারের স্বাদ পাব। আপনারাও দেখতে পারছেন, আমরা মানসিকভাবে কতটা শক্তিশালী এবং আত্মবিশ্বাসী। আমাদের হারানো কঠিন। টানা দুই ম্যাচে আমরা গোল পাইনি, এটা হয়নি। আমরা প্রায় প্রতি ম্যাচে গোল পেয়েছি।”
চার ম্যাচ হাতে রেখে লিগ শিরোপা জেতা কিংস গোল হজম করেছিল মাত্র ৯টি। এএফসি কাপের চলতি আসরে তপু বর্মন-কাজী তারিক রায়হান-বিশ্বনাথ ঘোষের দৃঢ়তায় এখনও প্রতিপক্ষরা পায়নি তাদের জালের নাগাল। দুই ম্যাচে ক্লিনশিট পাওয়াটা ব্রুসনকে করছে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী।
“গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, আমরা রক্ষণ ভীষণ জমাট রাখতে পারছি। এই কঠিন প্রতিযোগিতায় এখনও গোল হজম করিনি। এই বিষয়গুলো মিলিয়ে আমি মনে করি, আমাদের মানসিক দৃঢ়তা সর্বোচ্চ উঁচুতে রাখা উচিত।”
গত দুই ম্যাচে কিংসের আক্রমণভাগে ছিলেন লিগে ১৯ গোল করা রবসন দি সিলভা রবিনিয়ো ও ১৬ গোল করা রাউল অস্কার বেসেরা। শুরুর একাদশও অপরিবর্তিত রাখেন ব্রুসন। মোহন বাগানের বিপক্ষে কিছুটা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন এই স্প্যানিয়ার্ড।
“শুরুর একাদশে পরিবর্তন আসবে। আমাদের খুবই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে এবং আমি আশা করি, সেটা কাজ করবে। এটাকে গ্রুপ পর্ব বলা হচ্ছে কিন্তু প্রতিটি ম্যাচই ফাইনাল। এই ফরম্যাটে আমাদের জিততে হবে; এর বাইরে আর কোনো সম্ভাবনা নেই।”
দুই ম্যাচে ৫ গোল দিয়েছে মোহন বাগান। খেয়েছে মাত্র একটি। দলটির আক্রমণভাগে আছে কৃষ্ণ রায় ও মানভির সিংয়ের মতো দারুণ গোলদাতা। কিংস অধিনায়ক তপু বর্মন জোর দিচ্ছেন রক্ষণ জমাট রেখে সুযোগের অপেক্ষায় থাকার দিকে।
“আমরা লিগে ২১ ম্যাচের ১২টিতে গোল গোল হজম করিনি। এখানেও দুই ম্যাচে গোল খাইনি। যদি আমরা মোহন বাগানের বিপক্ষে কোনো গোল না খাই, তাহলে যেকোনো সময় গোল করতে পারি। গোলরক্ষক এবং আমাদের ডিফেন্ডারদের মূল লক্ষ্য কোনো গোল না খাওয়া।”
“এটা অনেক বড় ম্যাচ। কেননা, এ ম্যাচেই নির্ধারিত হবে কোন দল নকআউট পর্বে যাবে। মোহন বাগান পুরনো ক্লাব, কিন্তু আমাদেরও সাফল্য আছে। এটা বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের মতো। আমাদের দলে অভিজ্ঞ এবং জাতীয় দলের খেলোয়াড় আছে। এ ম্যাচে চাপ নেওয়ার সামর্থ্য আছে আমাদের।”
লড়াইটা দুই স্প্যানিশ কোচেরও। মোহন বাগানের ডাগআউটে থাকবেন স্পেনের আন্তোনিও লোপেস হাবাস। কিংস কোচ ব্রুসন সম্পর্কেও জানাশোনা আছে তার। বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে জিততে হলে শতভাগ নিংড়ে দিতে হবে বলে মনে করেন ৬৪ বছর বয়সী এই কোচ।
“আমরা বসুন্ধরা কিংসকে জানি এবং তারা ভালো একটা দল। তারা বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন এবং তাদের প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা আছে। আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে গোল হজম না করা, কিন্তু এর মানে এই নয় যে, কোনো আক্রমণ হবে না। আমাদের অবশ্য ভারসাম্য খুঁজে পেতে হবে। আমরা জানি, এটা নকআউট পর্বের ভাগ্য নির্ধারক ম্যাচ এবং জিততে হলে আমাদের শতভাগ দিতে হবে।”