বিলবাওয়ের মাঠে বার্সেলোনার ড্র

বল দখলে এগিয়ে বার্সেলোনা কিন্তু সুযোগ বেশি তৈরি করল আথলেতিক বিলবাও। কঠিন পরীক্ষা নিল কাতালান দলটির রক্ষণের। আশা জাগাল তিন পয়েন্টের। তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে হার এড়াতে পারল বার্সেলোনা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 August 2021, 09:57 PM
Updated : 21 August 2021, 10:07 PM

বিলবাওয়ের মাঠে শনিবার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। জয় দিয়ে আসর শুরু করার পর বার্সেলোনার এটাই প্রথম ড্র। বিলবাও ড্র করলো টানা দুই ম্যাচে।

ইনিগো মার্তিনেসের গোলে স্বাগতিকরা এগিয়ে যাওয়ার পর সমতা ফেরান মেমফিস ডিপাই।

ম্যাচের শেষ সময়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন বার্সেলোনা ডিফেন্ডার এরিক গার্সিয়া।

চলতি বছর সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে দুই দলের এটি পঞ্চম দেখা। কোপা দেল রের ফাইনালসহ আগের তিন ম্যাচে জিতেছে বার্সেলোনা। সুপার কাপের ম্যাচে জিতেছিল বিলবাও। এবার হলো ড্র। 

৫৩৮ দিন পর সান মামেসে দর্শক ফেরার দিনের শুরুতে বার্সেলোনাকে চেপে ধরে বিলবাও। তবে সেভাবে গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না স্বাগতিকরা।

উল্টো প্রথম আক্রমণেই এগিয়ে যেতে পারত বার্সেলোনা। ষষ্ঠ মিনিটে বাইলাইন থেকে মেমফিসের শট বিলবাওয়ের একজনের পায়ে লেগে দিক পাল্টালে পেয়ে যান অরক্ষিত মার্টিন ব্রাথওয়েট। কিন্তু খুব কাছে থেকেও তিনি শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।

তার নিদারুণ ব্যর্থতায় বেঁচে যাওয়া বিলবাও এগিয়ে যেতে পারত দশম মিনিটে। ইনাকি উইলিয়ামসকে পাহারায় রেখে গোলরক্ষকের এগিয়ে আসার অপেক্ষায় ছিলেন গার্সিয়া। কিন্তু পিছন থেকেই কোনোমতে শট নেন বিলবাও ফরোয়ার্ড। নেতোর দুই পায়ের মাঝ দিয়ে বল চলেও যাচ্ছিল জালের দিকে কিন্তু বার্সেলোনা গোলরক্ষকের হাতে লেগে দিক পাল্টে পাশের জালে গিয়ে লাগে।

এই কর্নার থেকেই বল পেয়ে ওহিয়ান সানসেট বুলেট গতির শট নেন। কিছুই করার ছিল না নেতোর। কিন্তু ভাগ্য ভালো সফরকারীদের, ক্রসবার কাঁপিয়ে ফিরে আসে বল।  

১৮তম মিনিটে নেতোর দুর্বল পাসে বিপদে পড়তে যাচ্ছিল বার্সেলোনা। ডি বক্সের কাছাকাছি বল পেয়ে সানসেট খুঁজে নেন উইলিয়ামসকে। দারুণ স্লাইডে তার শট ঠেকিয়ে দেন ফ্রেংকি ডি ইয়ং।

২২তম মিনিটে গোলমুখে দারুণ স্লাইডে বার্সেলোনার ত্রাতা জর্দি আলবা। বিলবাওকে এগিয়ে নিতে স্রেফ একটা টোকা দরকার ছিল আলেক্স বেরেনগের রেমিরোর। কিন্তু আলবার স্লাইডে বলের নাগাল পাননি তিনি।

চিকিৎসকরা এক সপ্তাহ বিশ্রাম নিতে বলেছিলেন জেরার্দ পিকেকে। সেটা না নিয়ে শুরু থেকেই খেলেন তিনি। কিন্তু ৩০তম মিনিটে খুড়িয়ে খুড়িয়ে মাঠ ছাড়তে হয় অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডারের।

তার জায়গায় নামা রোনাল্দ আরাহো যোগ করা সময়ে চমৎকার বাইসাইকেল কিকে বল জালে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি বল পাওয়ার আগে ডিফেন্ডার মিকেল বালেনসিয়াগাকে ব্রাথওয়েট ফাউল করায় গোল পায়নি বার্সেলোনা। 

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতে না হতে গোল খেতে বসেছিল বার্সেলোনা। গার্সিয়াকে পেরিয়ে যাচ্ছিলেন উইলিয়ামস। বিপদ দেখে এগিয়ে যান গোলরক্ষক নেতো। কিন্তু বলের নাগাল পাননি তিনি। সুযোগ বুঝে শট নেন বেরেনগের। কিন্তু গোললাইন থেকে তার চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন আরাহো।

৫০তম মিনিটে এগিয়ে যায় বিলবাও। ইকের মুনিয়ানের কর্নার থেকে চমৎকার হেডে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন মার্তিনেস।

তিন মিনিট পর ডি বক্সের ভেতর থেকে গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে সমতা ফেরানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন সের্জিনো দেস্ত।

৬১তম মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে ব্যবধান বাড়তে দেননি নেতো। ডি বক্সের বাইরে এসে বিপদমুক্ত করেন দলকে। পরের মিনিটে ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন সানসেটের শট।

৬২তম মিনিটে সের্হি রবের্তো ও ইউসুফ দেমির মাঠে আসার পর আক্রমণের গতি বাড়ে বার্সেলোনার। ৭৩তম মিনিটে সমতা প্রায় ফিরিয়ে ফেলছিল দলটি। ডি ইয়ংয়ের লব ক্রসবারে লেগে ফিরলে বেঁচে যায় বিলবাও।

তবে দুই মিনিট পরেই জালের দেখা পেয়ে যায় বার্সেলোনা। রবের্তোর কাছ থেকে বল পেয়ে ডি বক্সে ঢুকে বুলেট গতির শট নেন মেমফিস। গোলরক্ষক হাত ছোঁয়ালেও বলের জালে যাওয়া ঠেকাতে পারেননি।

বার্সেলোনার হয়ে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে ডাচ ফরোয়ার্ড মেমফিসের এটাই প্রথম গোল।   

৮৬তম মিনিটে ডি ইয়ংয়ের পাস থেকে দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আড়াআড়ি শট একটুর জন্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।

যোগ করা সময়ে দলকে বাঁচাতে ডি বক্সের ঠিক বাইরে নিকো উইলিয়ামসকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন গার্সিয়া। ফ্রি কিক থেকে তেমন কিছু করতে পারেনি বিলবাও।

২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত শীর্ষে রয়েছে বার্সেলোনা। ২ পয়েন্ট নিয়ে বিলবাও নয়ে।