'সেরা হতে হবে', দলকে কিংস কোচের বার্তা

কয়েক ধাপের সূচি বদল ও দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে এএফসি কাপ মিশন শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। কদিন আগেই দলটি জিতেছে প্রিমিয়ার লিগের মুকুট। করোনাভাইরাসের থাবায় বারবার থমকে যাওয়া মৌসুমে পেয়েছে ফেডারেশন কাপ জয়ের স্বাদও। জোড়া শিরোপার তৃপ্তির সঙ্গে চোট নিয়ে কিছুটা দুর্ভাবনাও আছে। তবে কিংস কোচ অস্কার ব্রুসন বড় স্বপ্ন দেখছেন, দেখাচ্ছেনও। অভিযান শুরুর আগে শিষ্যদেরকে এই স্প্যানিয়ার্ডের বার্তা-সেরা হতে হবে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2021, 04:24 PM
Updated : 17 August 2021, 04:24 PM

মালদ্বীপের রাজধানী মালের রাশমি ধান্দু স্টেডিয়ামে বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় ‘ডি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে কিংস, প্রতিপক্ষ স্বাগতিক দেশের চ্যাম্পিয়ন মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাব। করোনাভাইরাসের থাবায় বাতিল হয়ে যাওয়া গত এএফসি কাপে মালদ্বীপেরই দল টিসি স্পোর্টসকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে গ্রুপ পর্বে যাত্রা শুরু করেছিল ব্রুসনের দল।

মৌসুমজুড়ে দাপুটে ফুটবল খেলে চার ম্যাচ হাতে রেখে লিগ শিরোপা নিশ্চিত করে মালদ্বীপে নোঙর ফেলেছে কিংস। কিন্তু দলটির দুর্ভাবনা কিছুটা বাড়িয়েছে পাসপোর্ট সমস্যায় ফরোয়ার্ড মতিন মিয়া এবং করোনাভাইরাসের কারণে তৌহিদুল আলম সবুজকে না পাওয়া। চোট আছে লিগে ১৬ গোল করা আর্জেন্টাইন বংশোদ্ভূত চিলিয়ান ফরোয়ার্ড রাউল অস্কার বেসেরার। ফিফা-এএফসির অনুমতিপত্র না থাকায় দলের সঙ্গী হলেও খেলতে পারছেন না নাইজেরিয়ান থেকে বাংলাদেশি হয়ে যাওয়া এলিটা কিংসলে।

টিসি স্পোর্টসের বিপক্ষে গতবারের ম্যাচটি হয়েছিল চেনা আঙিনা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। মাজিয়ার বিপক্ষে খেলতে হবে তাদের মাঠে। অবশ্য ব্রুসনের জন্য দ্বীপ দেশটি অচেনা নয় মোটেও। কিংসের দায়িত্ব নেওয়ার আগে ছিলেন মালদ্বীপের দল নিউ রেডিয়েন্ট কোচ। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে তাই ধারণা আছে বেশ।

বছরের শুরুর দিকে মাজিয়ার হাল ধরেছেন রিস্তো ভিদাকোভিচ। দলকে করেছেন মালদ্বীপের চ্যাম্পিয়ন। সার্বিয়া ও মন্টেনেগ্রোর এই কোচ একসময় খেলেছেন স্প্যানিশ লিগের দল রিয়াল বেতিসে। অভিজ্ঞ রিস্তোকে সমীহ করছেন ব্রুসন। কিন্তু চাওয়া-পাওয়ার প্রশ্নে কিংস কোচের বার্তা বরাবরের মতোই সেরা হওয়ার।

“মাজিয়ার প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে। দলটিকে জানি, কেননা এখানে আমি ছিলাম। (নিউ রেডিয়েন্টে থাকার সময়) তারা আমাদের সব ঘরোয়া শিরোপার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। তাদের একজন অভিজ্ঞ কোচ আছে, যিনি লা লিগাতে রিয়াল বেতিসের হয়ে গেলেছেন। এএফসি কাপের অভিজ্ঞতাও আছে তার। গত মৌসুমে ফিলিপিন্সের দলটির এএফসি কাপে ওঠায় তার ভালো ভূমিকা ছিল।”

“তাই আমি মনে করি, মাজিয়া খুবই নিখাদ একটা দল এবং এই প্রতিযোগিতার আগে তারা সৌদি আরবে প্রস্তুতি নিয়েছে। তাদের প্রতি আমার পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা আছে, কিন্তু মাঠে…আমাদের অবশ্যই সেরা হতে হবে এবং সুযোগগুলো নিতে হবে।”

গ্রুপের বাকি দুই দল ভারতের ঐতিহ্যবাহী ইস্ট বেঙ্গল এবং প্লে-অফ পেরিয়ে আসা বেঙ্গালুরু এফসি। তবে কাউকেই ফেভারিট মনে করছেন না ব্রুসন। চোট সমস্যা, ভিন্ন কন্ডিশনে খেলার বাধা পেরিয়ে সেরা ফলের প্রত্যাশা ৪৪ বছর বয়সী এই কোচের।

“মাজিয়া নিজেদের মাঠে খেলার সুবিধা পাবে। আমাদেরও সুবিধা আছে; কেননা আমরা ভালো একটা মৌসুম শেষ করে এসেছি। কিন্তু আমাদের চোট সমস্যা আছে; গত মৌসুমটা কঠিন ছিল এবং চোট ভুগিয়েছে আমাদের। তবে আমি মনে করি না, এখানে কোনো দলের বাড়তি সুবিধা আছে। তিনটি দেশে কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালনের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আমি এই দলের মধ্যে ছড়িয়ে দিব এবং সেরা ফল পাওয়ার চেষ্টা করব।”

“করোনাভাইরাসের কারণে এবং জাতীয় দলের খেলা থাকায় আমাদেরকে বারবার থামতে হয়েছে। কিন্তু মৌসুমজুড়ে কিংসের ফল ছিল নিখাদ। লিগে সর্বোচ্চ পয়েন্ট নিশ্চিত করেছি; সর্বোচ্চ আত্মবিশ্বাস সঞ্চয় করেছি। এই প্রতিযোগিতায় কারো চেয়ে পিছিয়ে নেই আমরা। তবে, প্রথম ম্যাচের পর বুঝতে পারব আমাদের এবং প্রতিপক্ষের আসল শক্তি। কিন্তু তারপরও আমি মনে করি, এখানে কেউ ফেভারিট নয়।”

প্রস্তুতির দিক থেকে মাজিয়া কোচ ভিদাকোভিচও এগিয়ে রাখছেন কিংসকে। তবে মাঠের লড়াইয়ে দল শতভাগ নিংড়ে দিতে প্রস্তুত বলে জানালেন তিনি।

“আমি মনে করি, বসুন্ধরা কিংসই এখানে আসা একমাত্র দল, যারা প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলে এসেছে। যতদূর জানি, এক সপ্তাহ আগে তারা লিগ শেষ করেছে। যদি কারো সুবিধা থাকে, তাদেরই আছে। কেননা, প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলা আর প্রি-সিজনের ম্যাচ এক নয়।”

“আমরা যতটুকু প্রস্তুতি নিতে পেরেছি, নিয়েছি। সৌদি আরবে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি, কিন্তু প্রীতি ম্যাচ আর প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ আলাদা। তবে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো ফলের জন্য আমরা প্রস্তুত। আমি নিশ্চিত, এই টুর্নামেন্টে ভালো ফলের জন্য দল শতভাগ দিবে। আমরা নিজেদের মাঠে খেলব। অবশ্যই ছেলেরা চেষ্টা করবে হোম গ্রাউন্ড এবং মালদ্বীপের ফুটবলের মান রাখতে।”