গত মঙ্গলবার দলগত ইভেন্টে ভল্টে বাজে পারফরম্যান্স করে ছিটকে পড়ার পর সতীর্থদের মুকুট হারানো দেখেছিলেন বাইলস। রাশিয়া জিতেছিল সোনার পদক।
ওই ইভেন্টের পরই বাইলস বলেছিলেন, নিজের মানসিক স্বাস্থ্য দেখভাল করার দিকে মনোযোগ দিতে হচ্ছে তাকে।
রিও দে জেনেইরো অলিম্পিকের চারটি সোনা জয়ী বাইলস টোকিওর অলিম্পিকে ব্যক্তিগত পাঁচ ইভেন্টের ফাইনালে উঠেছিলেন। বৃহস্পতিবার অল অ্যারাউন্ড ইভেন্টের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার লড়াইয়ে নামার কথা ছিল তার।
২৪ বছর বয়সী এই জিমন্যাস্টের পরের ইভেন্টগুলো ছিল রোববার (আনইভেন বারস), সোমবার (ফ্লোর ও ভল্ট), এবং মঙ্গলবার (বিম) ।
দলীয় ইভেন্ট থেকে বাইলস ছিটকে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র জিমন্যাস্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, “মেডিকেল ইস্যুর কারণে দলগত ইভেন্টের ফাইনাল থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সিমোন। তার অবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং এর ভিত্তিতে পরবর্তী প্রতিযোগিতাগুলোয় তার অংশ নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
‘মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার জন্য’ বাইলস অল-অ্যারাউন্ড ইভেন্ট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে টুইটারে জানিয়ে তাকে সর্বাত্মক সমর্থনের ঘোষনা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র জিমন্যাস্টিকস।
“পরের সপ্তাহের ব্যক্তিগত ফাইনালগুলোতে সিমোন অংশ নিতে পারবেন কিনা, এটা বোঝার জন্য তাকে প্রতিদিনই পর্যবেক্ষণ করা চলতে থাকবে। সিমোনের সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমর্থন আছে এবং নিজের সুস্থ থাকাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে তার সাহসিকতার প্রশংসা করি আমরা। তার এই বীরত্ব আরও একবার দেখাল, কেন সে অনেকের কাছে আদর্শ।”
গত মঙ্গলবার ভল্টে প্রথম রোটেশনে ১৩.৭৬৬ স্কোর গড়ার পর অ্যারেনা ছেড়ে চলে যান ২৪ বছর বয়সী বাইলস। অলিম্পিক ক্যারিয়ারে ভল্টে এটি ছিল তার সর্বনিম্ন স্কোর।
ল্যান্ডিংয়ের সময় তালগোল পাকানো বাইলসের চোটের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি বলে সেসময় জানিয়েছিলেন বিসিসির জন ওয়াটসন। তবে চিকিৎসা নেওয়ার রুম থেকে বের হতে দেখা গেছে তাকে।
দলগত লড়াই থেকে ছিটকে যাওয়ার পর আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন বলেছিল, ফাইনালে অংশ নিতে পারবেন না বাইলস। তবে দল যুক্তরাষ্ট্র পদক পেলে তার অংশ হবেন ২৪ বছর বয়সী এই অ্যাথলেট। সে হিসেবে তিনি রুপা পেয়েছেন।
টিম ফাইনাল থেকে সরে দাঁড়ানোর পর অ্যাথলেটদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটি তুলে ধরেছিলেন বাইলস।
“ওই পারফরম্যান্সের পর আর চালিয়ে যেতে চাইনি। নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে অবশ্যই মনোযোগ দিতে হবে আমার। কেবলই মনে হয়, মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি ক্রীড়াঙ্গনে এখন আরও ব্যাপক।”
“আমরা স্রেফ গেলাম আর বিশ্ব আমাদের কাছে যা চায় তা করলাম, শুধু তা নয়, নিজেদের মন এবং শরীরকে সুরক্ষা দিতে হবে আমাদের।”
বয়সের সঙ্গে নিজের উপলব্ধির বদলের কথাও বলেছিলেন ২৪ বছর বয়সী এই অ্যাথলেট।
“নিজেকে আর খুব বেশি বিশ্বাস করি না আমি। হয়ত বয়স হচ্ছে আরও। কিছু কিছু দিন আসে, যখন সবাই আপনাকে নিয়ে টুইট করে, তখন বোঝা যায়, গোটা বিশ্বের ভার (প্রত্যাশার) কতটা।”
“আমরা শুধু অ্যাথলেটই নই। দিন শেষে আমরাও মানুষ এবং কখনও কখনও পিছিয়ে যেতে হয়।”
বাইলসের ঘটনার পর তারকা ক্রীড়াবিদদের মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারটি আলোচনায় এলো আবারও। প্রত্যাশার ভারের তুলনায় যথেষ্ট সমর্থন তারা পান কিনা, এই প্রশ্ন উঠছে নিয়মিতই। মঙ্গলবার অলিম্পিকস টেনিসে মেয়েদের তৃতীয় রাউন্ড থেকে ছিটকে যাওয়ার পর জাপানের তারকা নাওমি ওসাকাও বলেছিলেন প্রত্যাশার প্রবল চাপের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারার কথা।