বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রোববার কিংসের বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে চট্টগ্রাম আবাহনী। জোড়া গোল করে ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড চিনেডু ম্যাথিউ। কিংসের একমাত্র গোলদাতা রবসন দি সিলভা রবিনিয়ো।
প্রথম লেগে মাহবুবুর রহমান সুফিলের একমাত্র গোলে চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে জিতেছিল কিংস।
অবশ্য লিগে সবশেষ তাদের হারের অভিজ্ঞতাও এই চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষেই; করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাতিল হয়ে যাওয়া গত লিগের সেই ৭ গোলের রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে ৪-৩ ব্যবধানে জিতেছিল চট্টগ্রামের দলটি।
লিগে ১৭ ম্যাচ এবং সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২২ ম্যাচ পর হারল কিংস। চলতি মৌসুমে ফেডারেশন কাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দলটি।
গত ফেব্রুয়ারিতে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছিল কিংস। চলতি লিগে দুর্দান্ত পথচলায় সেটাই ছিল তাদের প্রথম পয়েন্ট খোয়ানো।
বরাবরের মতোই আক্রমণাত্মক কিংসের রক্ষণে শুরু থেকে চাপ দিতে থাকে চট্টগ্রাম আবাহনীও। কিন্তু পরিষ্কার তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না নিক্সন গুইলের্মে, রাকিব হোসেনরা।
ত্রয়োদশ মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগ পায় কিংস। বিপলু আহমেদের পাস ধরে দুই ডিফেন্ডার নাসিরুল ইসলাম ও মানিক হোসেন মোল্লাকে কাটিয়ে বেসেরার নেওয়া শট রুখে দেন গোলরক্ষক মোহাম্মদ নাঈম। দুই মিনিট পর আরেকটি সুযোগ নষ্ট হয় তাদের। মিডফিল্ডার বিপলুর আড়াআড়ি ক্রসে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবিনিয়োর শট উড়ে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে।
৩৫তম মিনিটে মানিকের ক্রস দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন রাকিব। শেষ মুহূর্তে তার বাড়ানো কাট ব্যাকে ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি চট্টগ্রাম আবাহনীর গুইলের্মে।
চার মিনিট পর এগিয়ে যায় সবশেষ ম্যাচে আবাহনীর কাছে হেরে আসা চট্টগ্রামের দলটি। ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে নাসিরুলের থ্রু পাসে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ম্যাথিউয়ের নিখুঁত শটে পরাস্ত গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই স্পট কিক উড়িয়ে মেরে সমতা টানার সুযোগ নষ্ট করেন বেসেরা। ডি-বক্সে ইব্রাহিমকে স্লাইড করে নাঈম ফেলে দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
৫৫তম মিনিটে মাঝমাঠের একটু ওপর থেকে দূরপাল্লার শটে চেষ্টা করেছিলেন গুইলের্মে। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা জিকো দ্রুত ফিরে সেভ করেন।
রক্ষণ জমাট রেখে খেলতে থাকা চট্টগ্রাম আবাহনী ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ শক্তভাবে মুঠোয় নেওয়ার সুযোগ পায় ৭৮তম মিনিটে। কিন্তু বক্সের ভেতর থেকে ম্যাথিউয়ের শট ক্রসবারে লেগে ফিরে।
৮৬তম মিনিটে সমতার স্বস্তি ফিরে কিংস শিবিরে। বল নিয়ে বক্সে ঢুকেই ডান পায়ের বাঁকানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন রবিনিয়ো। আগে থেকে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে থাকা এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের গোল হলো ১৭টি। ১৫ গোল নিয়ে তার পরেই আছেন ক্লাব সতীর্থ বেসেরা।
কিংসের স্বস্তি উড়ে যায় পরের মিনিটেই। মতিন মিয়ার ভুল পাস থেকে নিজেদের অর্ধে বল পেয়ে পাল্টা আক্রমণে ওঠা ম্যাথিউ শুরুতে ফের্নান্দেসকে ছিটকে দেওয়ার পর ডিফেন্ডার খালিদ শাফিইকে কাটান। এরপর বক্সের একটু ওপর থেকে বাঁ পায়ের শটে পোস্ট ঘেঁষে বল জড়িয়ে দেন জালে। বাকিটা সময় নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দিয়ে দারুণ এক জয়ের উৎসবে মাতে চট্টগ্রাম আবাহনী।
হারলেও শিরোপার পথে ভালোভাবেই থাকল কিংস। ১৮ ম্যাচে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে অনেকটাই ধরাছোঁয়ার বাইরে ব্রুসনের দল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আবাহনীর পয়েন্ট ৩৬।
১৮ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে থাকা চট্টগ্রাম আবাহনীর লিগ টেবিলে সেরা চারে থাকা উজ্জ্বল হলো আরও। তাদের চেয়ে ১ পয়েন্ট বেশি নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে মোহামেডান।